বিজেপিকে ঝুলিয়ে রেখে কৌশলী নীতীশ কুমার খোলা রাখলেন মহাজোটের দরজা
আসন বণ্টন দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন নীতীশ কুমার।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ২০১৯ সালে এনডিএ জোটে থাকবেন নীতীশ কুমার? এই প্রশ্নে আপাতত বিজেপিকে ঝুলিয়ে রেখে কৌশলী চাল দিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি কত আসন তাদের ছাড়ছে, তা দেখার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে দলকে জানিয়েছেন নীতীশ। এর মধ্যেই আবার বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিসগঢ়ের বিধানসভা নির্বাচনে একা লড়াই করার ঘোষণা করেছে জেডিইউ। রবিবার দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের পর কেসি ত্যাগী বলেন, ''মণিপুর, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিসগঢ়ে একার শক্তিতে নির্দিষ্ট কয়েকটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে জেডিইউ। কিছু সংবাদমাধ্যম বলছে, আমরা বিজেপিকে সাহায্য করছি। তবে আমরা ওদের বিরোধিতাও করছি না, সহযোগিতাও করছি না।''
Janata Dal (United) will contest election on its own in selected seats in Manipur, Rajasthan, Madhya Pradesh and Chhattisgarh. Some media reports say we are helping BJP but we are neither supporting them nor opposing them, we are not helping them: KC Tyagi, JD(U) pic.twitter.com/pgjvzFBbbD
— ANI (@ANI) July 8, 2018
মহাজোটে ফেরার জন্য কংগ্রেসের সঙ্গে জেডিইউ আলোচনা চালাচ্ছে বলে খবর। তা কতখানি সত্যি? কেসি ত্যাগীর জবাব, ''আরজেডি-র মতো দুর্নীতিগ্রস্ত দল সম্পর্কে কংগ্রেসকে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। তার আগে ওদের সঙ্গে কোনও কথা নয়।'' ২০১৯ সালে কি এনডিএ-র সঙ্গে জোট করতে চলেছে জেডিইউ? কেসি ত্যাগী জানান, এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার ছাড়া হয়েছে নীতীশ কুমারের উপরে। তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন।এদিন জেডিইউ-র জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে নীতীশ কুমার বলেন, ''আমাদের দলকে একঘরে ও উত্খাতের চেষ্টা করছে রাজনৈতিক শক্তিগুলি।''
Until and unless Congress clears its stand on a corrupt party like RJD, we don't know how to communicate with them any further: KC Tyagi, JD(U) pic.twitter.com/VyZQAC4z4d
— ANI (@ANI) July 8, 2018
কেন বিজেপিকে ঝুলিয়ে রাখলেন নীতীশ? এর পিছনে রয়েছে একাধিক কারণ।বিহারকে বিশেষ রাজ্যের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি করে আসছেন নীতীশ কুমার। অথচ এনিয়ে এখনও ইতিবাচক সাড়া পাননি। ফলে ভোটারদের কাছে নিজের মুখরক্ষা করতে পারছেন না বিহারের 'সুশাসনবাবু'। লোকসভায় বিহারে বিজেপির চেয়ে বেশি আসন চাইছে নীতীশের দল। সেই দাবি পূরণ না হলে এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি রয়েছে রাজ্যে বিজেপির দাদাগিরিও। এই সব বিবেচনা করেই নীতীশ কুমার সম্ভবত কৌশলী অবস্থান নিলেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আপাতত ধীরেই চলতে চান তিনি। পরিস্থিতি অনুযায়ী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, বিহারে গতবার ২২টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। তা কোনওভাবেই ছাড়তে পারবে না তারা। অন্যদিকে এলজেপি, আরএলএসপি-র মতো ছোট শরিকরাও রয়েছে। জেডিইউ-কে আসন ছাড়তে গেলে বিজেপিকেই আত্মত্যাগ করতে হবে।নীতীশের মতো 'ভঙ্গুর' শরিকের জন্য আত্মত্যাগ কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে চিন্তায় বিজেপি নেতৃত্ব।পরে যদি মত বদলান নীতীশ, তখন আত্মগ্লানি বাড়বে। নীতীশকে নিয়ে তেজস্বী যাদব কটাক্ষ করেন, ''এমন কোনও আপন নেই, যাঁকে ঠকাননি নীতীশ কাকা।''
সবমিলিয়ে বিহারে নীতীশকে সঙ্গে নিয়ে এখন রীতিমতো উভয় সঙ্কটে বিজেপি। আর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিয়ে নিজের জন্য উভয় (মহাজোট বা এনডিএ) পথ মসৃণ রাখলেন নীতীশ কুমার। মোদীকে হঠাতে নীতীশের মতো মুখ দরকার কংগ্রেসেরও। অনেকেই বলছেন, রাজনীতির দড়ি টানাটানির খেলায় আপাতত অ্যাডভান্টেজ বিহারের সুশাসনবাবু।
আরও পড়ুন- সংঘর্ষে অভিযুক্ত ভিএইচপি-বজরংয়ের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে বিতর্কে গিরিরাজ