Winter Session 2022: খাড়গের ডাকা বৈঠকে সুদীপ, অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে তৃণমূল-কংগ্রেসের সম্পর্ক!
শীত অধিবেশনে দলের রণকৌশল কী হবে তা ঠিক করতে বুধবার সৌগত রায়ের বাড়িতে দলের সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন মমতা বন্দ্যোরাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দেব-সহ দলের সাংসদরা। শীত অধিবেশনের শুরুতেই এই ধরনের বৈঠক খুবই সাধারণ বিষয়
জ্য়োতির্ময় কর্মকার: সাম্প্রতিক অতীতে তৃণমূল কংগ্রেস ঠিক কবে কংগ্রেস সম্পর্কে কোনও ইতিবাচক কথা বলেছে তা মনে করা কঠিন। কিছুদিন আগেই মুম্বইয়ে গিয়ে শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বৈঠকের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই দিলেন, জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের গুরুত্বই নেই। উল্টোদিকে, রাজ্য কংগ্রেস প্রধান অধীর চৌধুরীও বরাবর তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে সওয়াল করেছেন দিল্লির কাছে। শীত অধিবেশনের আগে সেই কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে হাজির সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে জোর জল্পনা, এবার কি কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক অন্য দিকে মোড় নিচ্ছে?
আরও পড়ুন-ম্যাচের মাঝেই ঘটল ভয়ংকর বিপত্তি, যন্ত্রণায় কাতর রোহিত খেলা ফেলে ছুটলেন হাসপাতালে
রাজনৈতিকমহল বলছে, কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে তৃণমূলের হাজির হওয়ার পেছনে কিছু ঘটনাক্রম রয়েছে। গতকাল আজমেঢ়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত কর্মসূচি ছিল। আজমেঢ় শরিফের পাশাপাশি, পুষ্কর দর্শনেও যান মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর ঘিরে অশোক গেহলট সরকার যেভাবে বেনজির নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল তা যে এক অভাবনীয় রাজনৈতিক সৌজন্য তা মানতেই হবে। এর পেছনে কোনও রাজনৈতিক বার্তা রয়েছে কিনা তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে আজ সকাল দশটর পরে। মল্লিকার্জুন খাড়গে বিরোধী সাংসদের একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। সেই বৈঠকে তৃণমূলের যাওয়ার বিষয়টি গতকাল রাত পর্যন্ত ঠিক ছিল না। আগের বহু এরকম বৈঠকে তৃণমূল যায়নি। আজ হঠাত্ খাড়গের সেই বৈঠকে হাজির হয়ে যান সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর সকাল এগারোটার পর লোকসভার অন্দরে বলতে ওঠেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, লোকসভার একাধিক স্ট্যান্ডিং কমিটি থেকে বিরোধীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে দেখিয়ে বলেন, সুদীপকেও একটি কমিটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতদিন পর্য়ন্ত দেখা গিয়েছে অধীর চৌধুরী কখনওই তৃণমূল সম্পর্কে সুর নরম করেননি। এমনকি এনিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বকে চিঠিও লিখেছেন তিনি। সেই অধীর সুদীপের হয়ে ব্যাটিং কেন করলেন কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। অর্থাত্ তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেস জাতীয় রাজনীতিতে তাদের সম্পর্কে কোনও বদল আনছে কিনা তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়ে গেল।
এদিকে, সংসদের শীত অধিবেশনে দলের রণকৌশল কী হবে তা ঠিক করতে বুধবার সৌগত রায়ের বাড়িতে দলের সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন মমতা বন্দ্যোরাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দেব-সহ দলের সাংসদরা। শীত অধিবেশনের শুরুতেই এই ধরনের বৈঠক খুবই সাধারণ বিষয়। তবে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায় ইঙ্গিত করেছেন, রাজ্যের পাওনা টাকা ও রাজ্য়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির তত্পরতা নিয়ে সরব হতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। এর পাশাপাশি অধিবেশন চলাকালীন কক্ষে সমন্বয়ের বিষয়ে তৃণমূল কী করে সেটাই নজরে থাকবে। এতদিন দেখা গিয়েছে কিছুটা এককভাবেই সংসদের চলতে চেষ্টা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার কী হয় সেটাই এখন দেখার। তবে সূত্রের খবর, আজ কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রী রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রীকে ফোন করে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। ফলে তৃণমূল তার রণকৌশল বদল করে কিনা সেটাই এখন দেখার।
গত কয়েকটি অধিবেশনে লক্ষণীয় বিষয় ছিল, তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে যোগ দেয়নি বা কংগ্রেসের নেতৃত্ব দেওয়া বৈঠকে যায়নি। জাতীয় রাজনীতিতে কিছুটা হলেও ঘোষিত নীতি নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে দৃরত্ব বজায় রেখে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দেশের অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে তৃণমূল সব সময়েই রয়েছে। এবার কি তাহলে কংগ্রেসকেও সঙ্গে নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস?