তথ্যের অধিকার-ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, ভারসাম্য জরুরি: প্রধানমন্ত্রী
তথ্যের অধিকার আইনের অপব্যবহার হচ্ছে। শুক্রবার এই কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তথ্যের অধিকারের নামে কারও ব্যক্তিগত জীবনে নাক গলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। সে কারণেই তথ্যের অধিকার এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার মাঝে সূক্ষ্ম ভারসাম্য জরুরি বলেই মন্তব্য করেন তিনি।
তথ্যের অধিকার আইনের অপব্যবহার হচ্ছে। শুক্রবার এই কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তথ্যের অধিকারের নামে কারও ব্যক্তিগত জীবনে নাক গলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। সে কারণেই তথ্যের অধিকার এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার মাঝে সূক্ষ্ম ভারসাম্য জরুরি বলেই মন্তব্য করেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই, প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনীতিতে।
সোনিয়া গান্ধীর অসুস্থতার জন্য ঠিক কত টাকা খরচ হয়েছে? সেই টাকা এসেছেই বা কোথা থেকে? দলীয় অর্থেই কি বিদেশে গিয়ে ব্যয়বহুল চিকিত্সা করিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী? এই বিতর্ক উস্কে দিয়ে গুজরাত নির্বাচনে প্রচারে নেমেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সোনিয়া গান্ধীর চিকিত্সায় কোটি কোটি টাকা সরকারি খাত থেকে খরচ হয়েছে বলে তথ্যের অধিকার আইনে জনৈক ব্যক্তি জানতে পারেন। সেই তথ্যই সামনে এনে ভোট প্রচারে নামেন নরেন্দ্র মোদী। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তোলপাড় হয় রাজনীতি। কোণঠাসা হয় কংগ্রেস।
আর্থিক সংস্কারে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে গত কয়েকদিনে বারেবারেই সরব হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এবার সরব হলেন তথ্যের অধিকার আইন প্রসঙ্গেও। তথ্যের অধিকারের দোহাই দিয়ে কারও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা যাবে না বলেই মন্তব্য করেন তিনি। তথ্যের অধিকার আইনের ফাঁকফোকর নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। তথ্যের অধিকার এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারের মধ্যে ভারসাম্যের সওয়াল করেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, "লঘু ও হতাশাজনকভাবে তথ্যের অধিকার আইনের ব্যবহার হচ্ছে। এ ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। অনেক সময়ই এমন তথ্য জানতে চাওয়া হচ্ছে, জনস্বার্থে যার কোনও প্রয়োজন নেই। অনেক সময়ই এত দীর্ঘ সময়কালের অথবা এত বেশি পরিমাণ ঘটনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়, যা প্রকৃতপক্ষে মূল্যহীন।" শুক্রবার কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনারদের সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন প্রধানমন্ত্রী। পিপিপি মডেলে গড়ে ওঠা সংস্থার ক্ষেত্রে তথ্যের অধিকার আইন নিরাশার কারণ হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, "পিপিপি মডেলে গড়ে ওঠা কতগুলি প্রতিষ্ঠান তথ্যের অধিকার আইনে তথ্য জানাতে চাইবে। বরং পিপিপি মডেলে উত্সাহ হারাবে বেসরকারি সংস্থাগুলি।" গত বছরে তথ্যের অধিকার আইনে প্রায় দশ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছিল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। অথচ প্রতিবছর জমা পড়া আবেদনের মাত্র ৪.৫ শতাংশ কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের কাছে পৌঁছয় বলেই দাবি তাঁর। প্রতিবছর কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন গড়ে কুড়ি হাজার উত্তর দেয়। আর আদালত পর্যন্ত পৌঁছয় মাত্র কয়েকশো বিষয়। এমনই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর গলায় হঠাত্ তথ্যের অধিকারের এই বিরোধিতার সুর কেন? রাজনৈতিক মহলে জল্পনা কংগ্রেস সভানেত্রীর চিকিত্সার খরচকে ইস্যু করে নরেন্দ্র মোদীর ভোটময়দানে নেমে পড়ার পাল্টা চাল দিতেই ফের ফোরফ্রন্টে প্রধানমন্ত্রী।