Sukanta Majumdar: খাঁচা তৈরি রয়েছে; বড় মাছ তাই একটু সময় লাগছে: সুকান্ত
সুকান্ত মজুমদার বলেন, রাষ্ট্রপতি শাসন হবে কী হবে না তা একেবারে রাষ্ট্রপতির বিষয়। একের পর এক মন্ত্রী যদি এভাবে দুর্নীতিতে ধরা পডে ও জেলে যায় তাহলে তখন তো রাষ্ট্রপতি শাসনের প্রয়োজন হয়েই পড়বে। সরকারের নম্বর ২ এখন জেলে। ১৯ জনের নেতার সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলা হয়েছে হাইকোর্টে
জ্যোতির্ময় কর্মকার: গ্রেফতার থেকে বাঁচতে কখনও এসএসকেএম, কখনও বোলপুরের হাসপাতালের আশ্রয় নিচ্ছেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এনিয়ে বলতে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডল-সহ তৃণমূলের নেতাদের নিশানা করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাষ্ট্রপতি দৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাত করে তিনি রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন। এনিয়েই তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর এই প্রথম দৌপদী মুর্মুর সঙ্গে আমাদের সাক্ষাত হল। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের অধিকাংশ নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রীর দুর্নীতিত জড়িয়ে পড়েছে। তাদের অনেককে সিবিআই ডেকেছে। অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ওইসব নেতাদের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতিকে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ নেতা মন্ত্রী দুর্নীতিতে জড়িত। তাদের যদি গ্রেফতার করা না হয় তাহলে তা রাজ্যের ভবিষ্যত আগামদনি অন্ধকার বলে আমাদের মনে হয়।
আরও পড়ুন-Anubrata Mandal: অনুব্রতর জন্য দুয়ারে চিকিত্সক; আমজনতার বাড়ি যাবেন তো সরকারি ডাক্তাররা! সরব অনুপম
রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সুকান্ত মজুমদার বলেন, রাজ্য় যদি সাংবিধানিক রীতিনীতি না মেনে চলে তাহলে বিরোধী দলের প্রধান হিসেবে তা আমার রাষ্ট্রপতিকে অবগত করানো উচিত। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছের লোকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা ধরা পড়েছে। সেই টাকা আমরা দেখেছি। অনুব্রত মণ্ডলের মতো কোনও একজন নেতাকে বারবার সিবিআই ডাকার পরও তিনি যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষে সারাদিন লাইন দিয়েও সরকারি হাসপাতালে চিকিত্সা পাচ্ছেন না। সেখানে তাঁর বাড়িতে সরকারি চিকিত্সকরা পৌঁছে যাচ্ছেন। এসব জানানো হয়েছে। গোটা রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। স্বাভাবিকভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও তার বাইরে নয়। গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটা একটা ঘুঘুর বাসায় পরিণত হয়েছে। সরকারি চিকিত্সকরা নেতাদের সার্ভিস দিতে ব্যস্ত। অনুব্রত মণ্ডলের শরীর খারাপ হলে তার বাড়িতে যেতে হবে এমন কোথায় লেখা রয়েছে? সাধারণ মানুষের শরীর খারাপ হলে তো কেউ যান না!সাধারণ ফিসচুলার সমস্য়া। এরকম অবস্থায় কেউ হাসপাতালে যেতে পারবেন না এমন নয়। কলকাতা যেতে পারছেন আর বোলপুরে হাসপাতালে যেতে পারেছেন না! রাজ্যে যে দুর্নীতি হয়েছে তা একজন শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষে করা সম্ভব নয় যতক্ষণ না পর্যন্ত সর্বোচ্চ নেতৃত্ব থেকে তাকে আসকারা দেওয়া হয়। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব এতে জড়িত। পার্থ তো শুধু বলির পাঁঠা বলতে পারেন।
রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি? সুকান্ত মজুমদার বলেন, রাষ্ট্রপতি শাসন হবে কী হবে না তা একেবারে রাষ্ট্রপতির বিষয়। একের পর এক মন্ত্রী যদি এভাবে দুর্নীতিতে ধরা পডে ও জেলে যায় তাহলে তখন তো রাষ্ট্রপতি শাসনের প্রয়োজন হয়েই পড়বে। সরকারের নম্বর ২ এখন জেলে। ১৯ জনের নেতার সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলা হয়েছে হাইকোর্টে। সেখানে ইডিকে পার্টি করেছে। স্বাভাবিকভাবে এবার আলিপুর জেলের মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে। আমরা তো মনে হয় সরকার ২০২৬ পর্যন্ত টিকবে না। জেল থেকে তো আর সরকার চলতে পারে না। অনুব্রত মণ্ডল ডাক্তারের উপরে চাপ দিচ্ছেন তাঁর পাইলসের অপারেশন করার জন্য। কী বলবেন? অনুব্রতবাবু যে মাছ কাটতে কাটতে ডাক্তার হয়ে গিয়েছেন তা জানা ছিল না। উনি নিজে বলতে পারেন না, ওনার অর্শ বা ফিশচুলা যাই হয়ে থাকুক তা এখন অপারেশন হওয়া দরকার। খাঁচা তৈরি আছে। ঠিক ভিতরে যাবেন। বড় সড় খাঁচা লাগবে। বড় মাছ। তাই একটু সময় লাগছে। অনুব্রত নিজে বলতে পারেন না ওঁর ফিসচুলা অপারেশন করার প্রয়োজন আছে কিনা। এটা তো ডাক্তাররাই বলবেন। উনি নাকি গ্রেফতার এড়াতে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন? সুকান্ত মজুমদার বলেন, আসুন। যেখানে যাওয়ার ইচ্ছে যান। ইন্টারন্যাশনাল আদালতেও যেতে পারেন। কিন্তু ওঁকে জেলে যেতেই হবে। কেউ বাঁচাতে পারবে না। যে পরিমাণ চুরি করেছেন তাতে বাঁচার কোনও সম্ভাবনা নেই। চোর ধরা পড়ার আগে পালানোর চেষ্টা করবে। মানুষ এখন বলছে এই তৃণমূল আর নয়। এই সরকারের চলে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। মানুষ বুঝে গিয়েছে এদের ভোটে দেওয়া ঠিক হয়নি। এই সরকার টিকবে না।
এদিকে, ফিসচুলা অপারেশনের জন্য অনুব্রত যোগাযোগ করেছেন শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে। এনিয়ে কলেজের কর্ণধার মলয় পীঠ 'ওঁর একটা অপারেশনের কেস রয়েছে। উনি জানতে চেয়েছিলেন মেডিক্যাল কলেজে এনিয়ে ব্যবস্থা রয়েছে কিনা। থাকলে উনি দেখাবেন। কোথায় অপারেশন করলে ভালো হবে, সেটা জানতে চান। শীঘ্রই অপারেশন করাবেন। আমি বলেছি বিষয়টা চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে জানাব। '