চাকরি করতে চেয়েছিলেন স্ত্রী, তাই 'রাগে' তাঁকে খুন করলেন টেকি স্বামী
বিয়ের পরেও চাকরি করতে চেয়েছিলেন স্ত্রী। আর তাতেই বেজায় 'পৌরুষে' আঘাত লেগেছিল স্বামীর। তাই একেবারের খুনই করে ফেললেন স্ত্রীকে। ভয়াবহ এই ঘটনাটি ঘটেছে গাজিয়াবাদে।
গাজিয়াবাদ: বিয়ের পরেও চাকরি করতে চেয়েছিলেন স্ত্রী। আর তাতেই বেজায় 'পৌরুষে' আঘাত লেগেছিল স্বামীর। তাই একেবারের খুনই করে ফেললেন স্ত্রীকে। ভয়াবহ এই ঘটনাটি ঘটেছে গাজিয়াবাদে।
৩২ বছরের তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোহিত শর্মা চেয়েছিলেন স্ত্রী রুচি নিজের কেরিয়ার, চাকরি বিসর্জন দিয়ে বাড়িতে বসে গৃহস্থালীর কাজকর্ম করুন আর ৯ বছরের ছেলেকে মানুষ করার কাজেই ব্যস্ত থাকুন। শুনতে চাননি বছর তিরিশের রুচি। তাই 'রাগে' নির্মমভাবে হত্যা করললেন স্ত্রীকে। পুলিস জানিয়েছে রুচিকে খুন করার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মোহিত।
গাজিয়েবাদের এসপি অজয় পাটেল জানিয়েছেন প্রাথমিকভাবে মোহিত দাবি করেছিলেন বাথরুমে পা পিছলে বেসিনে মাথায় ধাক্কা খেয়ে প্রাণ হারিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। কিন্তু পুলিসি জেরার মুখে ভেঙে পড়ে শুক্রবাত স্ত্রীকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করার কথা স্বীকার করেনেন মোহিত।
২০০৩ সালে মোহিতের সঙ্গে বিয়ে হয় রুচির। স্নানতোকত্তর শেষ করার কর্মহীন হয়ে বাড়িতে বসে থেকে বিরক্ত হয়ে উঠছিলেন রুচি। চাইছিলেন নিজে কিছু করতে। গত কয়েকদিন ধরেই এই নিয়ে তাঁর সঙ্গে মতানৈক্য চলছিল মোহিতের। বৃহস্পতিবার গাজিয়াবাদে গৌর গ্লোবাল ভিলেজ অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স থেকে রুচির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিস। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ মোহিত পুলিসকে ফোন করে জানায় বাথরুমে পা পিছলে পড়ার সময় রুচির মাথা ওয়াশবেসিনে জোরে ঠিকে যায়। আর তাতেও তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনাস্থলে পৌছে পুলিস দেখে বিছানার উপর উলটে পড়ে আছে রুচির মৃতদেহ। পুলিস জানিয়েছে ''ঘরের চতুর্দিক রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। বাথরুম থেকে বিছানা পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিল রক্ত। ওয়াশ বেসিনটি ভাঙা পড়ে ছিল।
পুলিসের দাবি ছেলে স্কুলে বেড়িয়ে যাওয়ার পরেই সম্ভবত এই যুগলের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়।
পুলিসের সন্দেহ রুচিকে বাথরুমে টেনে নিয়ে গিয়ে সেখানে সম্ভবত একটা ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে মোহিত। বাথরুমে রক্ত ভর্তি ছিল। মোহিত রুচিকে মারার সময়ই সম্ভবত ধ্বস্তাধস্তিতে ওয়াশ বেসিনটি ভেঙে যায়।
প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী রুচিকে বারবার ব্যাট দিয়ে আঘাত করার জন্যই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরেই জানা যাবে বলে পুলিস জানিয়েছে। আজকেই সম্ভবত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া যাবে।
রুচিকে নির্মমভাবে মারার পর মোহিত তাঁর চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ডাকেনি বা প্রতিবেশীদেরও খবর দেয়নি। এর থেকে স্পষ্ট রুচিকে মেরেই ফেলতে চেয়েছিল সে।
তবে রুচিকে হত্যা করার পর বিন্দুমাত্র অনুতাপ দেখা যায়নি মোহিতের মধ্যে। বেডরুম, বাথরুম ছাড়াও, মেঝেতে এমনি, সিলিংয়েও রক্তের ছিটে খুঁজে পেয়েছে পুলিসের তদন্তকারী দল। যা থেকে বোঝা যায় রুচিকে কী নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।