SAvsIND: Sreesanth থেকে Bumrah-র আগুনে বোলিং, South Africa-র মাটিতে Team India-র দাপট

দক্ষিণ আফ্রিকার বাইশ গজে ভারতীয় বোলারদের দাপুটে পারফরম্যান্স। 

Dec 22, 2021, 21:27 PM IST

সব্যসাচী বাগচী: ২৯ বছর আগে সেই ১৯৯২-৯৩ মরশুম থেকে মহম্মদ আজহারউদ্দিনের অধিনায়কত্বে রামধনুর দেশে যাচ্ছে ভারত। তবে গত ২৯ বছরে সেই দেশে টেস্ট সিরিজ জয় এখনও অধরা। মাত্র তিনটি টেস্ট জিতেছে 'মেন ইন ব্লু' ব্রিগেড। কিন্তু টেস্ট সিরিজ জয় অধরা থাকলেও প্রতিটি সফরেই টিম ইন্ডিয়ার পেস বোলারদের বেশ কয়েকটি পারফরম্যান্স মনে রাখার মতো। সেই তালিকায় রয়েছেন জভাগল শ্রীনাথ, অনিল কুম্বলে, হরভজন সিং থেকে শুরু করে শ্রীসন্থ, জাহির খান, জসপ্রীত বুমরা। এর মধ্যে জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামের বাইশ গজ ভারতের জোরে বোলারদের কাছে বারবার পয়া হিসেবে ধরা দিয়েছে। ২৬ ডিসেম্বর বক্সিং ডে-তে সুপারস্পোর্টস পার্ক সেঞ্চুরিয়ানে শুরু হচ্ছে সিরিজের প্রথম টেস্ট। এর আগে ভারতের জোরে বোলারদের ১০টি উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্সের দিকে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক। 

1/10

জোহানেসবার্গে শ্রীসন্থের আগুনে বোলিং ও প্রথম টেস্ট জয়

Sreesanth

২০০৬-০৭ সফরে সে বার প্রথম টেস্টেই জয় পেয়েছিল ভারত। আর সেটা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে রাহুল দ্রাবিড়ের নেতৃত্বে প্রথম টেস্ট জয়। সেই ঐতিহাসিক জয়ে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন শ্রীসন্থ। দুই ইনিংস মিলিয়ে তাঁর ঝুলিতে ছিল ৯৯ রানে ৮ উইকেট। ভারতের প্রথম ইনিংস ২৪৯ রানে শেষ হয়ে যাওয়ার পর বাইশ গজে আগুন ঝরাতে শুরু করেন শ্রীসন্থ। তাঁর ৪০ রানে ৫ উইকেটের দাপটে প্রোটিয়াদের প্রথম ইনিংস মাত্র ৮৪ রানে গুটিয়ে যায়। ফলে ১৬৫ রানের মূল্যবান লিড পায় ভারত। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ভিভিএস লক্ষ্মণের ৭৩ রানের সৌজন্যে ২৩৬ রানে তোলে দ্রাবিড়ের দল। দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ৪০২ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে ফের জ্বলে ওঠেন শ্রীসন্থ। ৫৯ রানে ৩ উইকেট নেন কেরলের এই জোরে বোলার। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন অনিল কুম্বলে ও জাহির খান। ১২৩ রানে জিতে ইতিহাস গড়ে টিম ইন্ডিয়া। 

2/10

জোহানেসবার্গের বাইশ গজে ইশান্ত শর্মার দাপট

Ishant Sharma

২০১৩-১৪ মরশুমের প্রথম টেস্টেই জ্বলে উঠেছিলেন ইশান্ত। স্টেডিয়াম ছিল সেই জোহানেসবার্গ। প্রথম ইনিংসে ২৮০ রান তোলার পর দিল্লির এই জোরে বোলারের দাপটে প্রোটিয়াসদের প্রথম ইনিংস ২৪৪ রানে শেষ হয়ে যায়। ৭৯ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন ইশান্ত। জোহানেসবার্গের বাউন্সে ভরা পিচে তাঁর পেসের কাছে জব্দ হয়েছিলেন হাসিম আমলা, জ্যাক ক্যালিসের মতো ব্যাটার। তবে দুই ইনিংসে দারুণ বোলিং করলেও মহেন্দ্র সিং ধোনির দলকে ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল।  

3/10

বুম বুম বুমরার ৫৪ রানে ৫ উইকেট

Jasprit Bumrah

২০১৭-১৮ মরশুমটা বিরাট কোহলির দলের কাছে মোটেও সুখের ছিল না। সিরিজের প্রথম দুটি টেস্ট হেরে ইতিমধ্যেই সিরিজ খুইয়েছিল ভারত। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে তৃতীয় টেস্ট ছিল সম্মান রক্ষার। তাও আবার জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্সে। টিম ইন্ডিয়ার বোলারদের কাছে সেই মাঠ বরাবরই পয়া। সেটা জসপ্রীত বুমরার স্পেল দেখেই বোঝা গিয়েছিল। প্রথমবার রামধনুর দেশে গিয়েই সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন বুমরা। ভারতের প্রথম ইনিংস ১৮৭ রানে শেষ হলেও সুবিধা করতে পারেনি প্রোটিয়াসরা। বুমরা নিয়েছিলেন ৫৪ রানে ৫ উইকেট। ফলে ১৮৭ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল ফ্যাফ ডু প্লেসিসের দল। টিম ইন্ডিয়ার বোলারদের দাপটে সেই টেস্ট জিতেছিল ভারত। 

4/10

দ্বিতীয় ইনিংসে মহম্মদ শামির ম্যাচ জেতানো বোলিং

Mohammed Shami

ফের একবার জোহানেসবার্গের পিচে ভারতের জোরে বোলারদের দাপট। এ বার তালিকায় নাম লেখালেন 'সহেসপুর এক্সপ্রেস'। ২০১৭-১৮ মরশুমে সিরিজের তৃতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংস বুমরার নামে লেখা থাকলে, দ্বিতীয় ইনিংসের 'হিরো' ছিলেন শামি। কোহলি ও রাহানের লড়াকু ব্যাটিংয়ের উপর ভর করে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৭ রান তোলে ভারত। ফলে প্রোটিয়াসদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৪১ রানের। তবে শামির আগুন ঝরানো বোলিংয়ের জন্য মাত্র ১৭৭ রানে শেষ হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। শামি নিয়েছিলেন ২৮ রানে ৫ উইকেট। ভারত সেই টেস্ট ৬৩ রানে জিতে যায়। 

5/10

জভাগল শ্রীনাথের ৭৬ রানে ৬ উইকেট

Srinath

২০০১-০২ মরশুমের সফরে প্রথম টেস্টে হেরে যায় সৌরভ গঙ্গোপাধায়ের ভারত। তবে পোর্ট এলিজাবেথে আয়োজিত দ্বিতীয় টেস্ট ড্র করে টিম ইন্ডিয়া। সেই টেস্টের প্রথম ইনিংসে হার্সেল গিবসের ১৯৬ রানের উপর ভর করে ৩৬২ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাকি বোলাররা সে ভাবে দাগ কাটতে না পারলেও শ্রীনাথ নিয়েছিলেন ৭৬ রানে ৬ উইকেট। একই সঙ্গে হার বাঁচানোর জন্য দীপ দাশগুপ্তের লড়াই ছিল মনে রাখার মতো। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩৫ মিনিট ক্রিজে ছিলেন বাংলার প্রাক্তন উইকেট কিপার। ২৮১ বলে ৬৩ রান করেন তিনি। 

6/10

ডারবানের বাউন্সি পিচে ভাজ্জির স্পিন ম্যাজিক

Bhajji

২০১০-১১ মরশুমের সফরে ডারবানে ছিল সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। প্রথম ইনিংসে ২০৫ রানে অল অউট হয়ে গেলেও, দক্ষিণ আফ্রিকা সুবিধা করতে পারেনি। কারণ হরভজন সিংয়ের স্পিনের ছোবলে মাত্র ১৩১ রানে গুটিয়ে যায় গ্রেম স্মিথ-এবি ডিভিলিয়ার্সদের দল। মাত্র ১০ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন ভাজ্জি। দ্বিতীয় ইনিংসেও এই প্রাক্তন অফ স্পিনারের দাপট বজায় ছিল। ৭০ রানে ২ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। ফলে ৮৭ রানে টেস্ট জিতে যায় ভারত। 

7/10

তরুণ অনিল কুম্বলের স্পিনের ভেলকি

Anil Kumble

১৯৯২-৯৩ মরশুমে প্রথমবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছিলেন অনিল কুম্বলে। জোহানেসবার্গে আয়োজিত সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্র হয়েছিল। তবে জোরে বোলারদের জন্য তৈরি পেস ও বাউন্সে ভরা উইকেটে কুম্বলে ম্যাজিক করে দেখান। প্রথম ইনিংসে ৬০ রানে ২ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৩ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন জাম্বো।  

8/10

কেপটাউনে ভয়ঙ্কর শ্রীনাথ

Javagal Srinath

১৯৯২-৯৩ মরশুমের সেই সফরে ভারত ০-১ ব্যবধানে হেরে গেলেও, চতুর্থ টেস্টও ড্র হয়ে যায়। দুই ইনিংসে দাপট দেখানোর জন্য ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন জভাগল শ্রীনাথ। প্রথম ইনিংসে ৫১ রানে ২ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন কর্নাটকের এই জোরে বোলার। 

9/10

কেপটাউনে ফের হরভজনের ম্যাজিক

Harbhajan Singh

২০১০-১১ মরশুমের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ভাজ্জির কাছে দারুণ গিয়েছিল। ডারবানে দুরন্ত বোলিংয়ের পর কেপটাউনের বাইশ গজে দেখা গিয়েছিল ফের হরভজনের ম্যাজিক দেখা গিয়েছিল। সচিন তেন্ডুলকরের ১৪৬ ও গৌতম গম্ভীরের ৯৩ রানের দাপটে প্রথম ইনিংসে ৩৬৪ রান তোলে ভারত। এর আগে প্রোটিয়াসদের প্রথম ইনিংস ৩৬২ রানে শেষ হয়ে যায়। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে বাইশ গজে ভেল্কি দেখাতে শুরু করেছিলেন ভাজ্জি। নিয়েছিলেন ১২০ রানে ৭ উইকেট। ফলে সেই টেস্ট ড্র করে টিম ইন্ডিয়া। একইসঙ্গে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে সেই একমাত্র বার টেস্ট সিরিজ ড্র করেছিল টিম ইন্ডিয়া। 

10/10

ইশান্তের মঞ্চে ভয়ঙ্কর মেজাজে জাহির খান

Zaheer Khan

২০১৩-১৪ মরশুমের প্রথম টেস্টে ইশান্তের মতোই ভয়ঙ্কর মেজাজে ছিলেন জাহির খান। স্টেডিয়াম ছিল সেই জোহানেসবার্গ। প্রথম ইনিংসে ২৮০ রান তোলার পর দিল্লির এই প্রাক্তন বাঁহাতি জোরে বোলারের নিয়েছিলেন ৮৮ রানে ৪ উইকেট। ফলে প্রোটিয়াসদের প্রথম ইনিংস ২৪৪ রানে শেষ হয়ে যায়। জোহানেসবার্গের বাউন্সে ভরা পিচে তাঁর পেসের কাছে জব্দ হয়েছিলেন গ্রেম স্মিথ, ডু প্লেসিসের মতো ব্যাটার। যদিও মহেন্দ্র সিং ধোনির দলকে ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল।