Bajrang Punia, Vinesh Phogat: ট্রায়াল ছাড়াই এশিয়ান গেমসে নামবেন প্রতিবাদী বজরং-ভিনেশ, শুরু নতুন বিতর্ক! কিন্তু কেন?
২২ ও ২৩ জুলাই দিল্লিতে এশিয়ান গেমসের জন্য কুস্তির ট্রায়াল হওয়ার কথা। তার ঠিক চার দিন আগে দুই কুস্তিগীরের নাম জানিয়েছে কমিটি। তার পরেই প্রশ্ন উঠেছে, কেন দু’জনকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে? যেখানে বাকিদের ট্রায়ালে অংশ নিতে হবে সেখানে কী হিসাবে সরাসরি খেলবেন বজরং ও ভিনেশ? এশিয়ান গেমসের ট্রায়াল নিয়ে আগেই সংশয় ছিল অনেক কুস্তিগীরের।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: নিজেদের সম্মান ও দাবি আদায়ের জন্য গত কয়েক মাস ওঁরা অনুশীলন করতে পারেননি। বরং যৌন হেনস্থায় (Sexual Harassment Case) অভিযুক্ত ভারতীয় কুস্তি সংস্থার (Wrestling Federation Of India) সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের (Brij Bhushan Sharan Singh) বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব ছিলেন বজরং পুনিয়া (Bajrang Punia)-ভিনেশ ফোগাট (Vinesh Phogat)-সাক্ষী মালিকরা (Sakshi Malik)। দীর্ঘদিন কুস্তি থেকে দূরে থাকার জন্য দেশের প্রথমসারির কুস্তিগীরদের ফিটনেস নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তাদের পক্ষে স্বল্প সময়ে ফিটনেস ফিরিয়ে ট্রায়ালে যাওয়ার সম্ভব ছিল না। অন্যদিক থেকে এগিয়ে আসছিল এশিয়ান গেমস (Asian Games 2023)। ফলে কুস্তিগিরদের দাবি ছিল তাঁদের ট্রায়ালে যেন ছাড় দেওয়া হয়। অবশেষে সেটাই হল। ইন্ডিয়ান অলিম্পিক্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এশিয়ান গেমসে ট্রায়াল ছাড়াই নামতে পারবেন বজরং পুনিয়া ও ভিনেশ। যদিও এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।
কুস্তিগীরদের একটি অংশের মতে, পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, জাতীয় কোচদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই একক ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় কুস্তি সংস্থার বিশেষ (অ্যাডহক) কমিটি। অ্যাডহক কমিটি একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভারতীয় কুস্তি সংস্থার নিয়ম মেনে এশিয়ান গেমসে পুরুষদের ৬৫ কেজি ও মহিলাদের ৫৩ কেজি বিভাগে দুই কুস্তিগীরকে নির্বাচন করা হয়েছে। কিন্তু এই বিভাগে ট্রায়াল হবে। সেখানে যাঁরা জিতবেন তাঁরা স্ট্যান্ড বাই হিসাবে থাকবেন। কোন দুই কুস্তিগীরকে নির্বাচন করা হয়েছে সেই নাম বিবৃতিতে না জানালেও কমিটির সদস্য অশোক গর্গ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বজরং ও ভিনেশের নাম জানিয়েছেন।
২২ ও ২৩ জুলাই দিল্লিতে এশিয়ান গেমসের জন্য কুস্তির ট্রায়াল হওয়ার কথা। তার ঠিক চার দিন আগে দুই কুস্তিগীরের নাম জানিয়েছে কমিটি। তার পরেই প্রশ্ন উঠেছে, কেন দু’জনকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে? যেখানে বাকিদের ট্রায়ালে অংশ নিতে হবে সেখানে কী হিসাবে সরাসরি খেলবেন বজরং ও ভিনেশ? এশিয়ান গেমসের ট্রায়াল নিয়ে আগেই সংশয় ছিল অনেক কুস্তিগীরের। ট্রায়াল যাতে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে হয় তার জন্য সর্বভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থা (আইওএ), স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (সাই), কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরকে চিঠি দিয়েছিলেন কয়েক জন মহিলা কুস্তিগীর। তাঁদের আশঙ্কা ছিল কুস্তিকর্তা ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল দেশের প্রথম সারির ছয় কুস্তিগীরকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হতে পারে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র এবং ক্রীড়ামন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছিল, 'তিন অলিম্পিয়ান কুস্তিগীরকে বাড়তি ট্রায়ালে ছাড় দেওয়া হলে তরুণ খেলোয়াড়দের প্রতি অবিচার হবে। আমাদের মতে, দুই পর্বে ট্রায়ালের যে প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে, সেটা যুক্তি সঙ্গত নয়। উঠতি কুস্তিগীরদের সঙ্গে তাতে অবিচার হবে। সকলকে চার থেকে পাঁচটি ম্যাচ খেলতে হবে। আর ছ’জন কেন একটি করে ম্যাচ খেলেই ছাড়পত্র পাওয়ার সুযোগ পাবে? যোগ্যতা যাচাইয়ের নিয়ম কেন এক হবে না?'
আরও পড়ুন: Wrestlers Protest VS Brij Bhushan: ফের পিছিয়ে গেল জাতীয় কুস্তি সংস্থার নির্বাচন! কিন্তু কেন?
গত ১৬ জুন এই পরিপ্রেক্ষিতে কুস্তি সংস্থার তরফে ভূপেন্দ্র সিংহ বাজওয়া জানিয়েছিলেন, দুই পর্বে ট্রায়াল হবে। প্রথম পর্বে সব কুস্তিগীররা সকলে ট্রায়াল দেবেন। দ্বিতীয় পর্বে নামবেন প্রতিবাদী ছয় কুস্তিগীর। প্রথম পর্বের বিজয়ীর সঙ্গে তাঁর লড়াই হবে। যিনি জিতবেন তিনি এশিয়ান গেমসে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন। ট্রায়ালের এই পদ্ধতি মেনে নিতে পারেননি দেশের কুস্তিগীরদের একটা বড় অংশ। কেন ছ’জনকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। এরপরেও বজরং ও ভিনেশের নাম ঘোষণা করে দিল অ্যাডহক কমিটি।
এমন খবর যে বজরং-ভিনেশদের স্বস্তি এনে দিয়েছে, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ভারতের কুস্তি ফেডারেশন দেশের আইকনিক প্লেয়ার যারা অলিম্পিক্স বা ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের পদক জিতেছেন, তাঁদের ট্রায়াল থেকে বিরতি দিয়ে থাকে বিশেষ ক্ষেত্রে। কোচ ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই দিক থেকেই বজরং ও বিনেশ ফোগাটকে মুক্তি দেওয়া হল।
গতবার জাকার্তায় এশিয়ান গেমসে বজরং ৬৫ কেজি বিভাগে ও ভিনেশ ৫০ কেজি বিভাগে অংশগ্রহণ করেছিলেন। দু'জনেই সোনা জিতেছিলেন। এরপর দুই কুস্তিগীরই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদক জিতেছিলেন। তবে দু'জনকে ছাড় দেওয়া হলেও বাকি কুস্তিগীরদের কেন ছাড় দেওয়া হল না, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সাক্ষী মালিক, সত্যওয়ার্ত কাদিয়ান, সঙ্গীতা ফোগাট ও জিতেন্দ্র কিনহাকে কেন ট্রায়াল থেকে ছাড় দেওয়া হল না সেটা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। সব কুস্তিগীরই সামনে থেকে প্রতিবাদ করেছিলেন। তাহলে কেন শুধু বজরং ও ভিনেশ বিশেষ সুবিধা পাবেন!