Suryakumar Yadav, IND vs ENG: সূর্যের উত্তাপেই ইংল্যান্ড পুড়বে! আশায় রয়েছেন রোহিত শর্মা
দাপট বজায় রেখে ইতিমধ্যেই চলতি প্রতিযোগিতায় দুবার ম্যাচের সেরা হয়েছেন। ১০ নভেম্বর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অ্যাডিলেডে নামবে ভারতীয় দল। ১৫ বছরের খরা কাটিয়ে ঝুলিতে ট্রফি ভরাতে হলে, বাইশ গজে সূর্যের উত্তাপ ছড়ানো খুবই জরুরী। সেটা ক্লাসে সিক্সে পড়া ছেলেও জানে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ঘোর অনিশ্চয়তার খেলা এই ক্রিকেট। মাত্র এক বলে বদলে যায় ম্যাচের ভাগ্য। চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (ICC T20 World Cup 2022) ফর্মের তুঙ্গে রয়েছেন সূর্য কুমার যাদব (Suryakumar Yadav)। বিপক্ষের বোলারদের অনায়াসে বুঝে নিয়েছেন 'স্কাই'। এবার ব্রিটিশদের পালা। এই একই বিপক্ষের বিরুদ্ধে তাদের ঘরের মাঠে শতরান করেছিলেন সূর্য। গত ১০ জুলাই নটিংহ্যামের মাঠে ৫৫ বলে ১১৭ রান করেছিলেন। মেরেছিলেন ১৪টি চার ও ৬টি ছক্কা। এর মানে এই নয় যে ইংল্যান্ডের (England) বিরুদ্ধে সেমি ফাইনালেও সূর্য বাইশ গজে উত্তাপ ছড়াবেন। তবে রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) বিশ্বাস, অতীতের সাফল্য মাথায় না রেখে ফের একবার ব্যাটে উত্তাপ ছড়াবেন সূর্য। সেটা শেষ চারের ম্যাচে নামার আগে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে জানিয়েও দিলেন টিম ইন্ডিয়ার (Team India) অধিনায়ক।
বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে অবধারিত ভাবে সূর্যের সাম্প্রতিক ফর্মের প্রসঙ্গ উঠে আসে। তখন রোহিত বলেন, 'আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করা সূর্যের সহজাত ব্যাপার। আসলে সূর্যের ছন্দে থাকার সবচেয়ে বড় কারণ হল, ও কোনও বাড়তি চাপ নেওয়ার বান্দা নয়। তাছাড়া অতীত পারফরম্যান্স নিয়ে একদম ভাবতে চায় না। বরং প্রতি ম্যাচেই আগ্রাসী মেজাজে পারফর্ম করতে চায়।'
দাপট বজায় রেখে ইতিমধ্যেই চলতি প্রতিযোগিতায় দুবার ম্যাচের সেরা হয়েছেন। ১০ নভেম্বর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অ্যাডিলেডে নামবে ভারতীয় দল। ১৫ বছরের খরা কাটিয়ে ঝুলিতে ট্রফি ভরাতে হলে, বাইশ গজে সূর্যের উত্তাপ ছড়ানো খুবই জরুরী। সেটা ক্লাসে সিক্সে পড়া ছেলেও জানে।
সেটা মনে করিয়ে দিয়ে রোহিত যোগ করলেন, 'আমি জানি না যে আপনারা কত বছর ধরে সূর্যকে দেখছেন। আমি কিন্তু ওকে অনেক বছর ধরে ছেলেটাকে এমন আগ্রাসী মেজাজেই ব্যাট করতে দেখছি। তাই আমি চাই ও লাগাতার এভাবেই ব্যাট করে যাক। দলের রান ১ উইকেটে ১০ রান হোক কিংবা ১০০ রানে কোনও উইকেট না পড়লেও সূর্য একইরকম মেজাজে ব্যাট করবে। সেইজন্য ওকে গত বছরের বিশ্বকাপে সুযোগ দিয়েছিলাম। দল ভালো পারফরম্যান্স করতে না পারলেও, সূর্য কিন্তু নিজের উত্থান ঘটিয়েছিল।'
নেদারল্যান্ডসের (Netharlands) পর জিম্বাবোয়ের (Zimbabwe) বিরুদ্ধেও ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন 'স্কাই'। চলতি আইসিসি (ICC) প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন সূর্য। সেমিতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এমন বিধ্বংসী ফর্ম বজায় রাখতে পারলে বিরাট কোহলির (Virat Kohli) ঠিক পিছনেই দ্বিতীয়স্থানে থাকবেন সূর্য। কারণ ডাচ ব্যাটার ম্যাক্সওয়েল প্যাটট্রিক ৮ ম্যাচে ২৪২ রান করলেও, তাঁর দল ইতিমধ্যেই ছিটকে গিয়েছে। তিনে থাকা সূর্যের রান ৫ ম্যাচে ২২৫। সর্বোচ্চ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৪০ বলে ৬৮। গড় ৭৫.০০। স্ট্রাইক রেট ১৯৩.৯৬।
পাকিস্তানের (Pakistan) বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ভালো শুরু করেও ১৫ রানে ফিরেছিলেন। তবে সিডনির স্লো পিচে নেদারল্যান্ডসের (Netharlands) বোলারদের কচুকাটা করেছিলেন 'স্কাই'। ২৫ বলে ৫১ রানে অপরাজিত থাকার সুবাদে হয়েছিলেন ম্যাচের সেরা। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa)বিরুদ্ধে দল হেরে গেলেও সূর্যের তেজ কিন্তু কমেনি। প্রোটিয়াসদের বিরুদ্ধে ৪০ বলে ৬৮ রান করেন। বাংলাদেশের (Bangladesh) বিরুদ্ধে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ১৬ বলে ৩০ রান। সেই ধারাবাহিকতা জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধেও দেখালেন। এবার ইংল্যান্ডকেও ওড়াতে মরিয়া সূর্য।
এহেন ফর্মে থাকা সূর্য ক্রিজে থাকলে দলের বাকি ব্যাটারদের চাপ কমে যায়। সেটাও স্বীকার করলেন 'হিটম্যান'। তিনি শেষে বলেন, 'ক্রিকেটের পারফরম্যান্সের তারতম্য ঘটতেই পারে। তবে এটা মেনে নেওয়া উচিত যে সূর্য ক্রিজে থাকলে দলের বাকিরা স্বস্তিবোধ করে। কারণ সূর্য নিজের ব্যাটিংকে খুব ভালো বোঝে। কোন বোলার ওকে কোন জায়গায় বল ফেলতে চায়, সেটা সূর্য জানে। তাছাড়া এখানে সাফল্য পাওয়ার বড় কারণ হল ও ছোট মাঠে খেলতে পছন্দ করে না। বরং বড় মাঠে খেলতে চায়। কারণ বড় মাঠে গ্যাপ খুঁজে রান করার সুযোগ অনেক বেশি থাকে।'
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে আসার আগে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন সূর্য। ঠাণ্ডা মাথায় বোলারদের 'খুন' করা সূর্যের পরিসংখ্যান দেখলে চোখ কপালে উঠে যেতে বাধ্য। ৩ ম্যাচে রান ছিল ১১৫। সর্বাধিক রান করেছিলেন হায়দরাবাদ। ৩৬ বলে ৬৯ রান। গড় ৩৮.৩৩। স্ট্রাইক রেট ১৮৫.৪৮। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও সফল হয়েছিলেন এই মুম্বইকর। ৩ ম্যাচে রান ছিল ১১৯। সর্বাধিক ৩৯ বলে ৬১ রান করেছিলেন গুয়াহাটিতে। গড় ৫৯.৫০। স্ট্রাইক রেট ১৯৫.০৮। সামগ্রিক ভাবে এই মারকুটে মুম্বইকর জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও সফল। মাত্র ৩৯ ম্যাচের ৩৭টি ইনিংসে করে ফেলেছেন ১২৭০ রান। গড় ৪২.৩৩। স্ট্রাইক রেট ১৭৯.৬৩। সঙ্গে জ্বলজ্বল করছে ১টি শতরান ও ১২টি অর্ধ শতরান।