Sri Lankan social media ban, Sri Lanka's economic crisis: সমস্যায় জেরবার সাধারণ মানুষের পাশে একাধিক প্রাক্তন
গত কয়েকদিন ধরে চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন শ্রীলঙ্কার অগণিত সাধারণ মানুষ। আকাল দেখা দিয়েছে অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর। দিনের অধিকাংশ সময় থাকছে না বিদ্যুৎ। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীয় দাম লাগামছাড়া হয়ে গিয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: চরম আর্থিক বিপর্যয়ে ভুগছে শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka)। বিদেশি ঋণের বোঝায় ভেঙে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। এহেন পরিস্থিতিতে এ বার রাষ্ট্রপতি (President Of Sri Lanka) গোতাবায়া রাজাপক্ষের (Gotabaya Rajapaksa) বিরুদ্ধে এ ভাবেই মুখ খুললেন শ্রীলঙ্কার একাধিক ক্রিকেটার। প্রাক্তন অধিনায়ক কুমার সঙ্গকারা (Kumar Sangakkara) থেকে শুরু করে মাহেলা জয়বর্ধনে (Mahela Jayawardene), লাসিথ মালিঙ্গা (Lasith Malinga) থেকে ভানুকা রাজাপক্ষ, সবাই দেশের সমস্যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে চিন্তা প্রকাশ করলেন।
সাঙ্গকারা ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে লেখেন, “শ্রীলঙ্কা সবচেয়ে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দিন কাটানোর জন্য মানুষ যেভাবে সংগ্রাম চালাচ্ছেন সেটা দেখে আমি অত্যন্ত আহত হয়েছি। প্রতিদিন মানুষের কষ্ট আরও বেড়ে যাচ্ছে।” রাষ্ট্রনেতাদের কাছে তাঁর আবেদন , “মানুষকে শত্রু মনে করবেন না। মানুষের ভবিষ্যত সুরক্ষিত রাখা আপনাদের কর্তব্য।”
ইনস্টাগ্রামে দেশের মানুষের পক্ষে সরব হয়ে জয়বর্ধনে লিখেলেন, “শ্রীলঙ্কায় কারফিউ এবং জরুরি অবস্থা দেখে আমি খুবই হতাশ। সরকার কখনওই দেশের মানুষের প্রয়োজনীয়তাকে অগ্রাহ্য করতে পারে না। মানুষের অধিকার আছে প্রতিবাদ করার।” প্রসঙ্গত, রবিবার প্রতিবাদ জানানো ছাত্রদের উপর জলকামান চালানো হয়। সরকারের সমালোচনা করেই তিনি লিখেছেন, “এই সমস্যা মানুষের তৈরি করা। যোগ্য মানুষই এর সমাধান করতে পারবে।” তিনি আরও বলেছেন, ”এখন দোষারোপ না করে এক হয়ে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা দরকার।”
ইনস্টাগ্রাম পোস্টে প্রতিবাদের ছবি দিয়ে মালিঙ্গা জানিয়েছেন, ‘আমি শ্রীলঙ্কার মানুষের পাশে আছি।’
শুধু প্রাক্তনরাই নন, সরব হয়েছেন শ্রীলঙ্কার বর্তমান ক্রিকেটাররাও। আরসিবির হয়ে খেলছেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। তিনি ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ”একসঙ্গে থাকলেই আমরা শক্তিশালী হতে পারব।”
ভানুকা রাজাপক্ষে ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, “এত দূরে থেকেও আমি বুঝতে পারছি দেশের মানুষ কেমন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। নাগরিকদের ন্যূনতম অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।”
গত কয়েকদিন ধরে চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন শ্রীলঙ্কার অগণিত সাধারণ মানুষ। আকাল দেখা দিয়েছে অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর। দিনের অধিকাংশ সময় থাকছে না বিদ্যুৎ। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীয় দাম লাগামছাড়া হয়ে গিয়েছে। ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এতটা ভয়ঙ্কর অবস্থার মুখে পড়তে হয়নি দ্বীপপুঞ্জের এই দেশকে।
সেই পরিস্থিতিতে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার রাতে পরিস্থিতি কার্যত রাজাপক্ষ সরকারের হাতের বাইরে চলে যায়। পদত্যাগের দাবিতে হাজার-হাজার মানুষ শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান। যা পরবর্তীতে হিংসাত্মক রূপ নেয়। দুটি সামরিক গাড়ি, পুলিশের জিপ, দুটি প্যাট্রোলিং মোটরসাইকেল এবং একটি তিনচাকার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। কমপক্ষে দু'জন বিক্ষোভকারী আহত হন। পুলিশ জানিয়েছিল, ৫৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, পাঁচজন সাংবাদিককে গ্রেফতার করে অত্যাচার চালিয়েছে পুলিশ এবং সেনা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শুক্রবার রাতের দিকে জরুরি অবস্থার ঘোষণা করেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি। জরুরি অবস্থার ঘোষণার পাশাপাশি শ্রীলঙ্কায় কড়া আইন কার্যকর করেছেন গোতাবায়া, যে আইনের আওতায় বিচার ছাড়াই যে কোনও ‘সন্দেহভাজন’ ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন আটকে বা গ্রেফতার করে রাখার ছাড়পত্র দেওয়া হয় সেনাকে। সেইসঙ্গে সোমবার সকাল পর্যন্ত দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে কার্ফু। বিক্ষোভ ঠেকাতে ৩৬ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া। সেই প্রেক্ষিতে এ বার দেশের রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে মন্তব্য করলেন সঙ্গাকারা।