Md Azharuddin Exclusive: কোহলির সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে বোর্ডের পাশে আজহার
অনেকের মতো বিরাট কোহলির সিদ্ধান্তে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিনও অবাক হয়েছেন।
সব্যসাচী বাগচী: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (WT20) মিটলেই ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব থেকে সরে যাবেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। তাঁর স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানো নিয়ে ক্রিকেট দুনিয়ার অনেকের মতো প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিনও (Mohammad Azharuddin) অবাক হয়েছেন। তবে কোহলির সিদ্ধান্তকে সম্মান জানালেও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) বিসিসিআই-এর (BCCI) পাশে দাঁড়ালেন তিনি। সেটা অকপটে জি ২৪ ঘন্টাকে জানিয়ে দিলেন আজ্জু।
তাঁর মতে, "ভারতীয় ক্রিকেটে পরিবেশ-পরিস্থিতি বদলাতে সময় লাগে না। বিরাট বুদ্ধিমান ছেলে। ভারতীয় ক্রিকেটের অতীত সম্পর্কে ও জানে। নিজের এবং দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যত সম্পর্কেও বিরাটের জ্ঞান বেশ ভাল। ড্রেসিংরুমের পরিবেশ এখন কেমন, সেটাও উপলব্ধি করতে পেরেছে। তাই এমন সিদ্ধান্ত নিল।"
ভারতীয় ক্রিকেটের একাংশের মতে কোহলির এই সাময়িক পতনের কারণ তাঁর একরোখা মনোভাব। চূড়ান্ত একাদশ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নাকি সতীর্থদের পাত্তা দিতেন না। ফলে ড্রেসিংরুমে রোহিতের দিকে ভোট বাড়ছিল! বোর্ড কর্তাদের সঙ্গেও কোহলির নাকি তেমন সখ্যতা ছিল না। তাছাড়া গত কয়েক বছরে আইসিসি প্রতিযোগিতার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কোহলি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ফলে দলকে হারের মুখ দেখতে হয়। এর সঙ্গে যোগ হয় ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে না খেলানো। যেটা বোর্ডের একাধিক শীর্ষ কর্তা ও প্রাক্তন ক্রিকেটাররা মানতে পারেননি। কোহলির বিরুদ্ধে এমন একগুচ্ছ অভিযোগ তোলা হলেও আজ্জু তাঁকে বিদ্ধ করতে রাজি নন। বরং বলছেন, "যা রটে তার কিছু তো বটে যেমন সত্যি, ঠিক তেমনই ড্রেসিংরুম থেকে চুঁইয়ে আসা সব খবরও কিন্তু সত্যি হয় না। আমার, সৌরভ-সচিনের সময় এমন অনেক খবর হয়েছে। কোহলির ক্ষেত্রেও হল। ভবিষ্যতেও এমন খবর সামনে আসবে। যেগুলোর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব নয়। তাই এগুলো নিয়ে বাড়তি শব্দ খরচ করতে রাজি নই। তবে এটাও ঠিক যে কোহলির বেশ কিছু সিদ্ধান্ত আমার পছন্দ হয়নি। যার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সিদ্ধান্ত ছিল বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে চার নম্বরে ব্যাট না করানো। এবং এবারের ইংল্যান্ড সফরে অশ্বিনকে লাগাতার বাইরে বসিয়ে রাখা।"
আরও পড়ুন: Virat Kohli: রোহিতকেও সরানো হোক, প্রস্তাব ছিল বিরাটের! সামনে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট
While it is surprising to hear that @imVkohli has decided to quit the captaincy of the T-20 format, the timing of the announcement is even more surprising as T-20 world cup is just around the corner. Whatever it may cost, it is his decision and so be it.
— Mohammed Azharuddin (@azharflicks) September 17, 2021
সৌরভ বোর্ড সভাপতি হওয়ার পর থেকেই 'দ্বৈত অধিনায়ক' প্রসঙ্গে তাঁকে একাধিক প্রশ্ন করা হয়েছিল। তবে প্রতিবার তিনি কোহলির প্রতি আস্থা দেখিয়েছিলেন। তবে এবার কিন্তু বোর্ড প্রধানকেও কড়া সিদ্ধান্ত নিতে হল। বাইরে থেকে দেখে এটা কোহলির ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বলে মনে হলেও বিসিসিআই-এর ইমেলে পরিস্কার যে গত কয়েক মাস ধরে এই বিষয়ে কর্তাদের সঙ্গে কোহলির আলোচনা চলছিল। যদিও আজহার এই পরিবর্তনকে সুন্দর ভবিষ্যত বলে মনে করেন। তিনি বলেন, "অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান এই নীতিতে দলকে মাঠে নামাচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশেও ফরম্যাট অনুসারে একাধিক অধিনায়ক। তাছাড়া আগামী দুই বছরে ভারত দুটো বিশ্বকাপ খেলবে। নতুন অধিনায়কের তো সময় দরকার। তাই বিসিসিআই কর্তারা যদি কোহলিকে বুঝিয়ে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে তাহলে ক্ষতি কোথায়!"
পরের বছর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ফের আয়োজিত হবে টি-টিয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০২৩ সালে দেশের মাটিতে বসবে একদিনের বিশ্বকাপের আসর। সবকিছু ভেবেই কি কোহলি টি-টোয়েন্টির ব্যাটন নামিয়ে রাখলেন? কারণ বোর্ডের একাংশের মতে কোহলির একদিনের ক্রিকেটে নেতৃত্বও বিপন্ন! আজহারও কিন্তু সেটা মনে করছেন। তাঁর মতে, "শুধু তো আইপিএল নয়, গত কয়েক বছরে কোহলির অবর্তমানে রোহিত শর্মা কিন্তু জাতীয় দলকেও দারুণ নেতৃত্ব দিয়েছে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে পাঁচবার ট্রফি দেওয়া ছাড়াও দেশের হয়ে রোহিত এশিয়া কাপ ও নিধহাস ট্রফি জিতেছে। এগুলো তো এড়িয়ে যাওয়া যায় না। বোর্ড কর্তাদের নোটবুকে সবকিছু তোলা আছে। তাছাড়া বিরাটের ব্যাটে গত দুই বছর বড় রান নেই। তাই দেশের স্বার্থে ও সীমিত ওভারে সিনিয়র ব্যাটসম্যান হিসেবে খেললে সেটায় দলেরই লাভ হবে।"
এই প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে সচিন তেন্ডুলকরকেও টেনে আনলেন তিনি। আজহার যোগ করলেন, "অধিনায়কত্বের বোঝা সবাই নিতে পারে না। সচিন এর জলজ্যান্ত উদাহরণ। ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিল বলেই সচিন দায়িত্ব ছেড়ে শুধু ব্যাটিংয়ে মন দিয়েছিল। বিরাটের ক্ষেত্রেও অনেকটা একই রকম ব্যাপার ঘটল। তাই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিরাট যদি সচিনের সঙ্গে আলোচনা করে থাকে, তাহলে আমি অন্তত অবাক হব না।"
একজন ২০০টি টেস্ট খেলার সঙ্গে ১০০টি সেঞ্চুরি করে ক্রিকেট এভারেস্টে বসে আছেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চূড়ান্ত ফিট 'কিং কোহলি'র সেই চূড়ায় পা রাখা আর কয়েক বছরের অপেক্ষা। তাই অধিনায়কের বর্ম ছেড়ে নিছক ব্যাটসম্যান হিসেবে যুদ্ধ লড়লে ক্ষতি কিসের!
সচিনের কীর্তিকে টপকে যাওয়ার সৌভাগ্য এক জীবনে কিন্তু বারবার আসবে না। সেটা কোহলি ভালই জানেন।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)