Wrestler Protest: রাজপথে সম্মান হারানো ভিনেশ-সাক্ষীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল দিল্লি পুলিস, বিতর্ক তুঙ্গে
যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের গ্রেফতারের দাবিতে কুস্তিগীররা, যন্তরমন্তর থেকে নতুন সংসদ ভবনের দিকে মিছিল করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দিল্লি পুলিস তাঁদের আটক করে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ন্যায় বিচারের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে আগেই সম্মান খুইয়েছেন দেশের প্রথমসারির কুস্তিগীররা। নতুন সংসদ ভবন (New Parliament House) অভিযান করতে গিয়ে আটক করা হয়েছিল ভিনেশ ফোগাট (Vinesh Phogat)-সাক্ষী মালিকদের (Sakshi Malik) মতো অলিম্পিক্সে পদকজয়ী মহিলা কুস্তিগীরদের। এবার তাঁদের বিরুদ্ধে দাঙ্গার অভিযোগ এনে এফআইআর দায়ের করল দিল্লি পুলিস (Delhi Police)! রবিবার অর্থাৎ ২৮ মে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের (New Parliament House) সময়েই রাস্তায় ফেলে দেশের সেরা কুস্তিগীরদের চরম হেনস্তা করা হয়। তাঁদের আটক করার মাত্র কয়েকঘণ্টার মধ্যেই এফআইআর দায়ের করেছে পুলিস। যদিও প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের তরফে বজরং পুনিয়া (Bajrang Punia) জানিয়েছেন, তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের (Brij Bhushan Sharan Singh) গ্রেফতারের দাবিতে কুস্তিগীররা, যন্তরমন্তর থেকে নতুন সংসদ ভবনের দিকে মিছিল করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দিল্লি পুলিস তাঁদের আটক করে। ব্যারিকেড দিয়ে পথ রুখে দেয়। আর সেটাই মেনে নিতে পারছেন না গত টোকিও অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী নীরজ চোপড়া। একেবারে আগুনে টুইট করলেন নীরজ। সফল ক্রীড়াবিদদের রাস্তায় ফেলে মারধর করছে দিল্লি পুলিস, এই লজ্জার ছবি ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। ভিনেশ, সাক্ষী, বজরং পুনিয়া-সহ সমস্ত কুস্তিগীরকে আটক করা হয়েছিল। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দিল্লি পুলিস জানায়, মোট সাতটি ধারায় এফআইআর করা হয়েছে কুস্তিগীরদের বিরুদ্ধে। এরমধ্যে রয়েছে দাঙ্গা বাঁধানো, বেআইনি জমায়েত, সরকারি আধিকারিকদের কাজে বাধা দেওয়া মতো গুরুতর অভিযোগ।
এফআইআর-এর প্রতিবাদ জানিয়ে বজরং পুনিয়া বলেন, "নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনে হাজির যৌন হেনস্তার এক মূল অভিযুক্ত, এটা খুবই দুঃখজনক। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে ৭ দিন সময় লেগেছিল দিল্লি পুলিশের। কিন্তু আমাদের বেলায় মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এফআইআর হয়ে গেল! তবে আমরা মোটেও পিছিয়ে যাব না। বাকি কুস্তিগীরদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।"
এদিকে এই ঘটনার নিন্দা করলেন নীরজ চোপরা। গত টোকিও অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী অ্যাথলিট একেবারে আগুনে টুইট করলেন। সংক্ষিপ্ত টুইটে নিজের মনোভাব ব্যক্ত করেছেন তিনি। সাক্ষী, বজরং, ভিনেশদের আটকের ভিডিয়ো পোস্ট করে নীরজ লেখেন, 'এটা দেখে মন খারাপ হল। পরিস্থিতি অন্যভাবেও সামলানো যেত।' এদিকে কড়া পুলিসি পদক্ষেপের পরেও সাক্ষী মালিক জানিয়ে দিয়েছেন, "আন্দোলন থামছে না। যন্তর মন্তর চত্বরে বিক্ষোভ চলবে।"
পাশাপাশি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সাক্ষীদের সমর্থনে টুইট করলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী এদিন ট্যুইটারে লিখলেন, 'দিল্লি পুলিস যেভাবে সাক্ষী মালিক, ভিনেশ ফোগাট এবং অন্যান্য কুস্তিগীরদের মারধর করেছে তার তীব্র নিন্দা করছি। এটা লজ্জাজনক যে, আমাদের চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়েছে। গণতন্ত্র সহনশীলতার মধ্যেই নিহিত, কিন্তু স্বৈরাচারী শক্তি অসহিষ্ণুতা এবং ভিন্নমতকে দমন করার উপরই উন্নতি লাভ করে। অবিলম্বে তাদের ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি পুলিসকে। আমি আমাদের কুস্তিগীরদের সঙ্গেই আছি।'
গত ২৩ এপ্রিল থেকে যন্তর মন্তরে ব্রিজভূষণের গ্রেফতারির দাবিতে ধরনায় বসেছেন দেশের প্রথমসারির কুস্তিগীররা। যৌন হেনস্তার দায়ে তাঁকে অবিলম্বে আটক করা হোক, এই দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ভিনেশ ফোগাট, সাক্ষী মালিক , বজরং পুনিয়ারা। তবে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে পকসো-সহ দুটি মামলা দায়ের হলেও এখনও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে অন্যদিকে কুস্তিগীররা আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে তাঁদের বলপূর্বক বাধা দিয়েছে দিল্লি পুলিস। এমনকি কুস্তিগীরদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় আফআইআর দায়ের করা হয়েছে।