নিজেকে বেশি বিজেপি প্রমাণ করতে গিয়ে আচার্য মোদীর বদনাম করছেন উপাচার্য: অনুপম
'উপাচার্য তৃণমূলের লোক সঙ্গে নিয়ে ঘোরেন। উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে। উনি অনেক ক্ষতি করেছেন। এবার ওঁকে বিদায় করা উচিত।'
জ্যোতির্ময় কর্মকার: বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ফের তীব্র তোপ দাগলেন অনুপম হাজরা। কড়া সমালোচনা করলেন তাঁর। চাঁছাছোলা ভাষায় কটাক্ষ করলেন, বিদ্যুত্ চক্রবর্তী নিজেকে বেশি বিজেপি প্রমাণ করতে গিয়ে আসলে বিজেপির ক্ষতি করছেন। অনুপম হাজরা এদিন বলেন, 'শান্তিনিকেতনের আচার্য প্রধানমন্ত্রী। উপাচার্যের কাজকর্মের জেরে আচার্যের বদনাম হচ্ছে। উনি নিজেকে বেশি বিজেপি প্রমাণ করতে চাইছেন। কিন্তু আদতে বিজেপির ক্ষতি করছেন।'
একইসঙ্গ প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, 'তৃণমূলের অনেক লোক বিশ্বভারতীর জমি দখল করেছে। কেন শুধু অমর্ত্য সেনের জমি নিয়ে বলছেন?' তোপ দাগেন, 'উপাচার্য তৃণমূলের লোক সঙ্গে নিয়ে ঘোরেন। উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে। উনি অনেক ক্ষতি করেছেন। এবার ওঁকে বিদায় করা উচিত।' তবে সেইসঙ্গে অনুপম হাজরা এটাও বলেন যে, 'তবে উনি মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে যা বলেছেন তা সমর্থন করি। অমর্ত্য সেন যে নোবেল পাননি, তাও প্রমাণিত।'
প্রসঙ্গত, গতকালই বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে বিঁধে মন্তব্য করেছিলেন, 'অনেকেই বিশ্বভারতীর জায়গা দখল করে বসে আছেন। বিশ্বভারতীর উপাচার্যের যদি মনে হয় যে জমি ফেরাবেন, তবে আরও ৫ জনকেও নোটিস পাঠাতে পারতেন! আর অমর্ত্য সেন যে পুরস্কারটা পেয়েছেন, সেটা যদি নোবেল নাও হয়, নোবেলের মত তো কিছু তো একটা পেয়েছেন। এখন যাঁরা তাঁকে নিয়ে সমালোচনা করছেন, তাঁরা তো সেটাও পাননি! উনি জ্ঞানীগুণী মানুষদের একজনের মধ্যে পড়েন। আর সমালোচনা করতে হলে তাঁর সমকক্ষ বা সমগোত্রীয় হতে হয়। সেখানে সামান্য জমি-জায়গা নিয়ে এই টানাটানি দৃষ্টিকটু।'
সোমবার শান্তিনিকেতনে প্রতীচীতে গিয়ে অমর্ত্য সেনের হাতে তাঁর জমি সংক্রান্ত নথি তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। দাবি করেন, বিশ্বভারতীর দাবি ভুল। ধিক্কার জানান, এভাবে অমর্ত্য সেনের মত লোকেদের অপমান করা ঠিক নয়। হুঁশিয়ারি দেন, আইনত ব্যবস্থা নেবেন বলেও। উল্লেখ্য, শান্তিনিকেতনে একটি জমির কিছু অংশ ছেড়ে দিতে অমর্ত্য সেনকে চিঠি দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের লেখা ওই চিঠিতে ক্যাম্পাসের জমি অবৈধভাবে দখলে রাখার অভিযোগ করা হয়েছে অমর্ত্য সেনের পরিবারের বিরুদ্ধে। দাবি করা হয়েছে, অমর্ত্য সেন জোর করে ক্যাম্পাসের ১৩ ডেসিমেল জায়গা দখল করে রেখেছেন। ওই ১৩ ডেসিমেল জমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে দ্রুত হস্তান্তর করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে অমর্ত্য সেন জানান যে, জমির প্লটটি দীর্ঘমেয়াদী লিজে রয়েছে। বাড়ির কিছুটা অংশ বিশ্বভারতীর কাছ থেকে লিজ নেওয়া। বাকি অংশ কেনা হয়েছে।