Chandrakona 2: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেও মিলল না সমাধান, কাটছেনা চন্দ্রকোনা-২ পঞ্চায়েত সমিতির জট
নেতৃত্বের তরফ থেকে দুই পদে নাম পাঠানো হলেও তা অমান্য করে সভাপতি ও সহ সভাপতি নির্বাচন করা হয়। সভাপতি পদের জন্য চন্দ্রকোনা বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক ছায়া দোলই-এর নাম পাঠানো হয় দলের তরফে। প্রাক্তন বিধায়কের সঙ্গে বর্তমান বিধায়কের কোন্দল নতুন নয়।
চম্পক দত্ত: রাজ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম চন্দ্রকোনা-২ পঞ্চায়েত সমিতি। ৬ মাস কেটে গেলেও এখনও গঠন করা যায়নি স্থায়ী সমিতি। বিরোধী শুন্য পঞ্চায়েত সমিতিতে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দলে থমকে স্থায়ী সমিতি গঠন। জট কাটাতে ১০ জানুয়ারি জেলা নেতাদের দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশের পর প্রায় একমাস হতে চললো। এবার শাসকদলের কোন্দলের জেরে নাগরিক পরিষেবা ব্যহত হওয়ার দাবি তুলে সরব বিরোধীরা। প্রশ্ন উঠছে জেলা নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়েও।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা-২ পঞ্চায়েত সমিতির মোট ১৮টি আসন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১৮টি আসনই তৃণমূল কংগ্রেস জিতে নেয়। বিরোধীহীন পঞ্চায়েত সমিতিতে ১০ আগষ্ট ২০২৩ সালে ভোটাভুটির মাধ্যমে সভাপতি ও সহ সভাপতি নির্বাচন হয়। এই ভোটাভুটিকে কেন্দ্র করে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্য আসে।
নেতৃত্বের তরফ থেকে দুই পদে নাম পাঠানো হলেও তা অমান্য করে সভাপতি ও সহ সভাপতি নির্বাচন করা হয়। সভাপতি হন অলোক ঘোষ ও সহ সভাপতি হন দোলন কোটাল। এই দুজনেই চন্দ্রকোনা বিধানসভার বিধায়ক অরুপ ধাড়া ও চন্দ্রকোনা-২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি প্রসূন ঘোষ ঘনিষ্ঠ বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন: Bengal News LIVE Update: বন্ধ হয়ে গেলো সাইলি চাবাগান, কর্মহীন প্রায় ১৫০০ চা শ্রমিক
অপরদিকে সভাপতি পদের জন্য চন্দ্রকোনা বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক ছায়া দোলই-এর নাম পাঠানো হয় দলের তরফে। প্রাক্তন বিধায়কের সঙ্গে বর্তমান বিধায়কের কোন্দল নতুন নয়।
জেলা সভাপতি আশিষ হুদাইত জানান, ‘তৃণমূল সুপ্রিমো এবং সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন যে এটা সংশোধন করতে এবং যাতে আমরা সংশোধিত হয়। যে বা যারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত তারা সংশোধিত হলেই বিষয়টা অতি সহজেই মিটবে’।
চন্দ্রকোনা বিধানসভার তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক ছায়া দোলই জানান, ‘দল থেকে নির্দেশ দিয়েছিল এবং রেকমেন্ডেশন এসেছিল। আমার নামেই সভাপতি পদের জন্য রেকমেন্ডেশন এসেছিল। সেটাকে অমান্য করেছে দলের একাংশ। এই নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই আমার সিদ্ধান্ত। পুরোটাই দলের উপর ছেড়ে দিয়েছি’।
বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক সুদীপ কুশারি বলেন, ‘স্থায়ী সমিতি গঠন না হওয়া নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে বিডিও-কে ডেপুটেশন দিয়েছি। এতে সাধারণ মানুষ সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নিজেদের মধ্যে কাটমানির লড়াই চলছে আর চন্দ্রকোনার মানুষ তার ফল ভুগছে’।
আরও পড়ুন: Diamond Harbour: অজানা প্রাণীর আক্রমণ! তটস্থ ডায়মন্ড হারবার, আহত ৮
সিপিআইএমের জেলা কমিটির সদস্য ও চন্দ্রকোনার প্রাক্তন বিধায়ক গুরুপদ দত্ত বলেন, ‘৫ মাস অতিক্রান্ত। স্থায়ী সমিতি গঠন করা যে অপরিহার্য আইনের ক্ষেত্রে তারা তা করতে পারেনি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পরও আজ পর্যন্ত স্থায়ী সমিতি গঠন হলনা। গঠন না হওয়ায় মধ্যে দিয়ে চন্দ্রকোনার জনগণের যে উন্নয়নের কাজ নানা ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে এই সম্পর্কে ওদের নুন্যতম দায়িত্ববোধ নেই’।
চন্দ্রকোনায় গোষ্ঠী কোন্দলে রাশ টানতে এবং কড়া বার্তা দিতে ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রসূন ঘোষকে সরিয়ে হীরালাল ঘোষকে নতুন সভাপতি ঘোষণা করে রাজ্য নেতৃত্ব। নবনির্বাচিত ব্লক সভাপতি হীরালাল ঘোষ তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক ছায়া দোলই ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
দোরগোড়ায় লোকসভা ভোট। তার আগে চন্দ্রকোনার এই পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠন নিয়ে জট কাটে কিনা সেদিকে নজর রাজনৈতিক মহলের।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp)