Siliguri: মানসিক অবসাদগ্রস্ত ২২ বছরের ছেলে, 'খাবারে বিষ মিশিয়ে খুন' করে আত্মঘাতী বাবাও!
এই ঘটনার পিছনে বাবার 'ইনসিকিওরিটি' কাজ করে থাকতে পারে. বলছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ।
নিজস্ব প্রতিবেদন : ছেলেকে 'খুন করে আত্মঘাতী' বাবাও! শিলিগুড়ির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভরতনগরের এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযোগ, মানসিক ভারসাম্যহীন ২২ বছরের ছেলে সুভাষ রায়কে খাবারে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে প্রথমে খুন করেন বাবা সুব্রত রায়। তারপর নিজেও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন। এদিন সকালে ঘরে পা দিয়েই চমকে ওঠেন বাড়ির বাকিরা। তাঁরা দেখতে পান, বিছানার উপর পর পর 'শোওয়ানো অবস্থায়' পড়ে রয়েছেন সুব্রত রায় ও সুভাষ রায়। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের দুজনকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শিলিগুড়ির ভরতনগরে বাবা ও ছেলের 'রহস্যমৃত্যু'র ঘটনায় প্রতিবেশী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে যে, বড় ছেলে সুভাষ রায় দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর। এমনকি শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা নিয়ে এসেও ছেলের চিকিৎসা করান সুব্রত রায়। কিন্তু ছেলের বহু চিকিৎসা করালেও, কিন্তু কিছুতেই সুস্থ হয়ে উঠছিলেন না সুভাষ। ২২ বছরের ছেলেকে দিন দিন অবসাদের 'অন্ধকার' গ্রাস করে নিতে দেখে, বাবা হিসেবে সুব্রত রায়ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন।
প্রতিবেশীরা বলছেন, সুভাষ ইদানিং এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে, বাড়িতে আত্মীয়রা কেউ আসতে পারতেন না। সবার গায়ে হাত তুলত। জিনিসপত্র কিছু রাখা যেত না। সব ভাঙচুর করতেন। পাড়ার লোকেদের দেখতে পেলে, তাঁদের দিকেও তেড়ে যেতেন। অনেক টাকাপয়সা খরচ করেও কোনও সুরাহা হয়নি। হয় ছেলে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেন না। বা ছেলে হয়তো ঠিকমতো চিকিৎসা করাচ্ছিলেন না। অনেকসময় সমস্যা নিয়ন্ত্রণের বাইরেও চলে যেত। সবমিলিয়ে হতাশা ঘিরে ধরেছিল বাবা সুব্রত রায়কে। এরপরই বছরের শেষদিনের সকালে এই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী রইল ভরগনগরবাসী। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শিলিগুড়ির পুলিস কমিশনারেট। মর্মান্তিক এই ঘটনার খবর পেয়ে রায় বাড়িতে ছুটে আসেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও। সুভাষের শোকাহত মা ও ভাইকে সান্ত্বনা দেন তিনি। দুর্দিনে পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
প্রসঙ্গত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সুবর্ণ সেন এই ঘটনার পিছনে বাবা সুব্রত রায়ের 'ইনসিকিওরিটি' সম্ভাব্য কারণ হয়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন Zee ২৪ ঘণ্টাকে। তিনি বলেন, "হতে এর পিছনে বাবার ইনসিকিওরিটি কাজ করেছে। বাবা নিজেও অসুস্থ ছিলেন। মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। সেই থেকে হয়তো বাবা-ই আগে নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার কথা ভাবেন। কিন্তু তারপরই একজন বাবা হিসেবে তাঁকে ঘিরে ধরে তাঁর অবর্তমানে ছেলের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা। আর তা থেকেই হয়তো ছেলেকে খুন করে তারপর নিজে আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বাবা।" তবে কারণ যা-ই হয়ে থাকুক, চিকিৎসা ব্য়বস্থায় আরও ভরসা রাখার কথা বার বার করে বলেন তিনি।
আরও পড়ুন, Howrah: এটিএম-এ ভাঙচুর, পুলিসকে 'গালিগালাজ', তাণ্ডব চালালেন 'বিবস্ত্র মত্ত' মহিলা!
Malda: স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশেই 'অর্ধ-নগ্ন' নর্তকীদের চটুল নাচের আসর! ভাইরাল ভিডিও