ক্যানসার আক্রান্ত স্ত্রীকে ৩ মেয়ের হাত থেকে বাঁচাতে আইনের দ্বারস্থ বৃদ্ধ বাবা

Updated By: Aug 5, 2017, 04:02 PM IST
ক্যানসার আক্রান্ত স্ত্রীকে ৩ মেয়ের হাত থেকে বাঁচাতে আইনের দ্বারস্থ বৃদ্ধ বাবা
ছবিটি প্রতীকী

ওয়েব ডেস্ক : নগদ সম্পত্তি যা আছে দিয়ে দিতে হবে। না হলে মাকে ছাড়া হবে না। বৃদ্ধ বাবার দাবি, এমনই শর্ত দিয়েছেন তাঁর ৩ মেয়ে। ক্যানসার আক্রান্ত মরণাপন্ন স্ত্রীকে ছাড়িয়ে আনতে আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন সাতাত্তর বছরের বৃদ্ধ। একটি বিশেষ রিপোর্ট।

মুখ ফালাফালা করে ফেলা বলিরেখা। ঘোলাটে দৃষ্টি। হাতে গোণা কয়েকটি দিন হয়তো বাকি। দমদমের শম্ভুনাথ পাল। CESC-র প্রাক্তন কর্মী। থাকেন ছেলে ও পুত্রবধূর সঙ্গে। শেষ জীবনে পাশে চান ৪৮ বছরের সঙ্গীকে।
 
শম্ভুনাথের স্ত্রী প্রতিমা পাল ক্যানসারে আক্রান্ত, চলা ফেরার ক্ষমতা নেই। ভালো সেবাযত্নের জন্য মেজো মেয়ে শিখা কুণ্ডুর কাছে ৯ মাস আগে স্ত্রীকে রেখে আসেন শম্ভুনাথ। আয়া ও ওষুধপত্রের খরচ চালানোর জন্য নিজের ব্যাঙ্কের পাসবই ও চেকবইও মেজো মেয়ের কাছে রেখে আসেন। এরপর মেজো মেয়ের বাড়ি থেকে বিরাটিতে বড় মেয়ে সীমা পালের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিমা পালকে।

শম্ভুনাথ পালের পাসবই ও চেকবই রয়ে গেছে মেজো মেয়ে শিখা কুণ্ডুর কাছেই।  প্রতিমা পালের সুস্থ হওয়ার কোনও উপায় আর নেই। শেষ কটা দিন স্ত্রীকে নিজের কাছে রাখতে চান শম্ভুনাথ কুণ্ডু। কিন্তু, মেয়েরা রাজি নন। একবার বড় মেয়ের বাড়ি থেকে স্ত্রীকে আনতে অ্যাম্বুলেন্সও পাঠান। কিন্তু, হিতে বিপরীত হয়।

আরও পড়ুন- গাইঘাটা শুটআউটের পিছেন শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের গন্ধ

মেজো মেয়ের কাছে নিজের পাশবই ও চেকবই ফেরত চেয়েও অদ্ভূত উত্তর পেয়েছেন। শম্ভুনাথ পালের ব্যাঙ্কে ১৮ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে। শম্ভুনাথ পালের দাবি সেভিংস অ্যাকাউন্টের টাকা মিলিয়ে তাঁর নগদ সম্পত্তির পরিমাণ ২৪ লক্ষ টাকা।  ৩ মেয়ের বিয়ে দেওয়ার সময় ১ লক্ষ টাকা করে নগদ ও ২ কাঠা জমি দিয়েছেন শম্ভুনাথ। বৃদ্ধের সন্দেহ তাঁর শেষ পুঁজিটিও কেড়ে নিতে চান মেয়েরা। তাই স্ত্রী ও ব্যাঙ্কের বই আটকে রেখে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে।

স্ত্রীকে ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছেন শম্ভুনাথ। অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে ২৪ ঘণ্টার প্রতিনিধি পৌছন বিরাটিতে, বড় মেয়ে সীমা পালের বাড়িতে। সেখানেই রয়েছেন শম্ভুনাথের স্ত্রী মরণাপন্ন প্রতিমা।

প্রতিমা নিজে কী চান? ক্যানসারের শেষ দশায় বাকশক্তি হারিয়েছেন তিনি। আদালতের নির্দেশে বৃদ্ধাকে দেখতে আসা পুলিসকর্মীরাও প্রতিমার বয়ান রেকর্ড করতে পারেননি। এদিকে প্রতিমাকে ফিরে পেতে অস্থির হয়ে উঠছেন শম্ভুনাথ। জীবনের নানা ওঠা পড়াতেও ৪৮ বছর অটুট ছিল দাম্পত্য। সন্তানদের সুবাদে তাতেই যোগ হয়েছে ৯ মাসের বিচ্ছেদ। শেষ সময়ে শম্ভুনাথ ও প্রতিমার মিলন হবে কি?

.