খুলি উড়ে গিয়ে পড়ে বাড়ির চালে, রাস্তায় ছড়িয়ে ছিন্নভিন্ন হাত-পা! কী থেকে বিস্ফোরণ টোটোয়?
এক পুলিস কর্তা বলেন, "টোটোর ব্যাটারি থেকে যদি বিস্ফোরণ ঘটত, তাহলে এরকম মারাত্মক আকার নিত না। শক্তিশালী বিস্ফোরণের ঘটলেই এরকম ভাবে দেহ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাওয়ার বিষয়টি অতীতের বিভিন্ন ঘটনায় উঠে এসেছে।"
নিজস্ব প্রতিবেদন : চলন্ত টোটোতে হঠাৎ বিস্ফোরণ। ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল চালকের দেহ। মাথার খুলি উড়ে গিয়ে পড়ল রাস্তার পাশে বাড়ির চালে। হাত, পা টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রাস্তার উপর। মুহূর্তের মধ্যে ধোঁয়ায় ভরে যায় গোটা এলাকা। বুধবার বিকেলে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদা শহরের ঘোড়াপীর এলাকায়। কী কারণে এই বিস্ফোরণ তা জানতে ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ইংরেজবাজার থানার পুলিস। পাশাপাশি সিআইডি বোম স্কোয়াডের টিমও তদন্ত শুরু করেছে। যদিও এখনও পর্যন্ত ওই টোটোচালকের নাম এবং পরিচয় জানা যায়নি। তবে গোটা টোটোটি ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গিয়েছে। এই ধরনের ঘটনা রাজ্যে প্রথম বলেই মনে করছে জেলা পুলিস এবং সিআইডির কর্তারা। এর আগে টোটো বিস্ফোরণ এবং চালকের মৃত্যুর ঘটনার কোনও উদাহরণ নেই বলেই পুলিসের একাংশ দাবি করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিসকে জানিয়েছেন, ওই টোটোতে কিছু ফাইবার ও কাঠের দরজা এবং কাঠমিস্ত্রি যেসকল সামগ্রী ব্যবহার করে, সেগুলোই মজুত ছিলো। টোটোটি মালদা শহরের দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎ করে বাগবাড়ি স্ট্যান্ড থেকে কুড়ি মিটার দূরত্বে রাজ্য সড়কের উপর ব্যাপক বিস্ফোরণ ঘটে। গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে বিস্ফোরণের জেরে। বিস্ফোরণের পরই ধোঁয়ায় ভরে যায় গোটা এলাকা। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ঘোড়াপীর এলাকায়। দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে যায় সাধারণ পথচারীদের মধ্যে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় স্থানীয়দের।
দেখা যায়, টোটো চালকের দেহ ছিন্নভিন্ন অবস্থায় রাস্তায় পড়ে রয়েছে। হাত, পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। মাথার খুলি রাস্তার ধারে একটি বাড়ির টালির চালে গিয়ে পড়েছে। রক্তমাখা অবস্থায় সেখান থেকে ঝুলে রয়েছে। হাড়হিম করা এই দৃশ্য দেখে অনেকেই আঁতকে ওঠেন। ইংরেজবাজার থানার পুলিসের তদন্ত চলার পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আসেন সিআইডি'র কর্তারাও। তবে কী কারণে এই বিস্ফোরণ তা এখনও পরিষ্কার করে কিছু জানাতে পারেননি তদন্তকারী পুলিশ কর্তারা।
ইংরেজবাজার থানার তদন্তকারী এক পুলিস কর্তা বলেন, "অনেকেই বলছেন টোটোর ব্যাটারি গরম হয়ে যাওয়ার কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। কিন্তু যদি ব্যাটারি থেকে বিস্ফোরণ ঘটত, তাহলে এরকম মারাত্মক আকার নিত না। শক্তিশালী বিস্ফোরণের ঘটলেই এরকম ভাবে দেহ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাওয়ার বিষয়টি অতীতের বিভিন্ন ঘটনায় উঠে এসেছে। ওই টোটোতে কী ধরনের পদার্থ মজুত ছিল, তা সিআইডি টিম তদন্ত করে দেখছে। টোটোটি একেবারেই দুমড়ে-মুচড়ে কয়েক টুকরো হয়ে গিয়েছে। কাজেই তদন্তের ক্ষেত্রে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে পুলিস ও সিআইডি কর্তাদের। পাশাপাশি মৃত টোটো চালকের কোনও পরিচয়ও জানা যায়নি।"
ওই টোটোতে অন্য কোনও যাত্রী ছিলেন না বলেই জানতে পেরেছেন তদন্তকারী পুলিস কর্তারা। টেলিফোনে পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, "মালদা শহরের ঘোড়াপীর এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনা শুনেছি। কী কারণে এই বিস্ফোরণ, তা তদন্ত না করে পরিষ্কারভাবে বলা যাবে না। একজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।"
আরও পড়ুন, একদিনে ৬১১, রেকর্ড সংখ্যক আক্রান্ত রাজ্যে, করোনায় মৃত বেড়ে ৭০০ ছুঁই ছুঁই