মৌসম তো মুসলমান ছিল, কেন জিতল না? মালদহে নেতৃত্বকে প্রশ্ন মমতার
তাঁর দল ধর্ম ও জাতপাতের রাজনীতি করে না বলেও মনে করিয়ে দেন মমতা।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মালদহে দুটি আসনই লোকসভা ভোটে হারিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে কাঠগড়ায় তুললেন তৃণমূল নেত্রী। কাজের মেয়ে মৌসম বেনজির নুর হারায় নিজের ক্ষোভের কথাও গোপন করলেন না। নেতাদের দিকেই প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় মৌসম কীভাবে হারলেন?
উত্তরবঙ্গ বরাবরই কংগ্রেসের গড়। মালদহ, মুর্শিদাবাদে এসে হোঁচট খেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। গত বিধানসভা ভোটেও মালদহে একটাও আসন জেতেনি তৃণমূল। লোকসভা ভোটের ঠিক আগে গনি খান পরিবারের সদস্য মৌসম বেনজির নুর যোগ দেন তৃণমূল। উত্তর মালদহে তাঁকেই প্রার্থী করেছিলেন মমতা। ওই আসনে জিতেছেন বিজেপির খগেন মূর্মূ। বুধবার মালদহের সভায় ক্ষোভ গোপন করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন,''হিন্দু-মুসলিম ভাগাভাগি করল। একটা সিট কংগ্রেস, একটা বিজেপি। কী আন্ডারস্ট্যান্ডিং! মৌসম তো মুসলমান ছিল, তা মৌসম কেন জিতল না। যদি মনে করেন মুসলিম মেজরিটি তাহলে মৌসুম কেন জিতল না? এটা আপনাদের জিজ্ঞেস করছি।''
তাঁর দল ধর্ম ও জাতপাতের রাজনীতি করে না বলেও মনে করিয়ে দেন মমতা। বলেন,''হিন্দু-মুসলমানে কোনও তফাত্ আছে? আমাদের সঙ্গে হিন্দুও আছে, মুসলিমই আছে। সবাইকে নিয়ে আমরা চলি। জাতপাতের ভেদাভেদ নেই। এই দুটো আসনে জিতব ভেবেছিলাম। মৌসম একটা বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু যে লোকটা কাজ করে না, সে জিতে গেল। মৌসম দৌড়েদৌড়ি করে কাজ করতে পারে। ওর নামে উল্টোপাল্টা রটিয়ে হারিয়ে দেওয়া হল। এটা কীসের রাজনীতি?''
নানা নেতা। নানা গোষ্ঠী। সবাই চলে নিজেদের মর্জিমাফিক। তারওপর কংগ্রেসের পুরনো ভোটব্যাঙ্ক। মেরুকরণের আবহে বিজেপির উত্থান। কড়া দাওয়াই না দিলে, মালদায় দলের হাল ভাল হওয়ার আশা যে নেই, তা মুখ্যমন্ত্রীর অজানা নয়। নেতাদের সবাইকে এক মঞ্চে হাজির করে সমঝে দিলেন তিনি। জানতে চাইলেন ভোট এলেই কেন নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়ে? বিধানসভায় নীহার ঘোষের কাছে হারের পর ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেই নীহাররঞ্জন এখন তৃণমূলে। সাবিত্রী মিত্রর সঙ্গেও কৃষ্ণেন্দুর বিবাদ সবার জানা। ফলে ঠোকাঠুকির মশলা সবসময়েই মজুত। এদিন সবাইকেই নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, বেঁধে দেওয়া হল গণ্ডি। ইংরেজবাজার পুরসভায় ওয়ার্ডভিত্তিক দায়িত্ব, কৃষ্ণেন্দু-সহ অন্য নেতাদের মধ্যে ভাগ করে দেন তিনি।
দক্ষিণ দিনাজপুরেও বিজেপির উত্থান, দলের দ্বন্দ্ব নিয়ে নেতাদের সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী। অতীতে অর্পিতা ঘোষের বিরোধী নেতা বিপ্লব মিত্র এখন বিজেপিতে। অর্পিতাকেই জেলা দেখার ভার দেওয়ার কথা এদিন ফের জানান মমতা। সম্প্রতি গঙ্গারামপুরে এক শিক্ষিকার নিগ্রহের ঘটনায় তৃণমূল নেতা অমল সরকারকে গ্রেফতার করে পুলিস। অমল দল থেকে বহিষ্কৃত হন। এদিন, মহিলাদের সুরক্ষায় বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- কেউ বলছেন, দেড় লক্ষ, কেউ এক লক্ষ! সভায় ৭ হাজার লোক, রাজ্য নেতাদের বলে গেলেন শাহ