Nakshalbari: আতঙ্কের জাতীয় সড়ক; দিনেদুপুরে অপহরণের চেষ্টা, নিরাপত্তা চেয়ে থানায় মহিলারা
এলাকায় পঞ্চায়েত সদস্যা নমিতা মোদক জানান , "আমি নিজেও একজন মহিলা হিসেবে আতঙ্কিত। বছর তিনেক আগে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। ফের আবার শুরু হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন থেকে বিডিও সকলকেই জানানো হয়েছে ঘটনা সম্পর্কে
নারায়ণ সিংহ রায়: জাতীয় সড়কে উঠলেই প্রথমে গাড়িতে ওঠার আবদার। না উঠলে হাত ধরে টেনে তোলার চেষ্টা। স্কুল ছাত্রী থেকে গৃহবধূ, আতঙ্কে নকশালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের স্টেশনপাড়া এলাকার মহিলারা। এখনওপর্যন্ত ৮ মহিলা এমন হেনস্থার শিকার হয়েছে। আতঙ্কে অনেক অবিভাবক তাদের মেয়েদের স্কুলে পাঠাতেও ভয় পাচ্ছেন। কেউ স্কুলে পাঠানো বন্ধও করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন-অফসাইডে বাতিল জোড়া গোল! ভাগাভাগি হয়ে গেল পয়েন্ট
এলাকা থেকে বেরিয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে উঠতেই এমন ঘটনার সাক্ষী হচ্ছেন অনেকে। দিনে রাতে বাইকে, মারুতি ভ্যানে টহল দিচ্ছে কেউ বা কারা। অপরচিত মুখ। একা মহিলা দেখলেই তাদের গাড়িতে বা বাইকে বসার আর্জি জানানো হচ্ছে। কথা না মানলে তাদের হাত ধরে টানাটানি করে গাড়িতে বসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এলাকাবাসীদের দৌলতে এখনও কোন মহিলা অপহৃত হয়নি। তবে এ ঘটনা যে নতুন না তা খোদ স্বীকার করে নিচ্ছেন পঞ্চায়েত সদস্যা নমিতা মোদক। তার কথায়, বছর তিনেক আগে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। আবার তা শুরু হয়েছে ৷ এখনও পর্যন্ত আট জন মহিলার সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। নাবালিকাদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছে তাদের অভিভাবকরা। লিখিত গণ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে থানায়। জানানো হয়েছে প্রধান থেকে বিডিওকেও ৷ প্রসঙ্গত, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডিএসপি(রুরাল ) অচিন্ত্য গুপ্ত ফোনে জানিয়ে দেন, এনিয়ে আমি কোন স্টেটমেন্ট দেব না।
দিন কয়েক আগে এলাকারই এক কিশোরী(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) তার বাড়ি থেকে বাজার যাওয়ার পথে হেনস্থার শিকার হয়। ওই কিশোরী জানায়, "বড় রাস্তায় উঠতেই বাইকে এক ব্যাক্তি আমাকে ফলো করে। হেলমেট পরা ছিল ৷ কিছুটা এগিয়ে আসতেই সে আমাকে বলে, গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছি। আমি না করতে সেই বাইক ঘুরিয়ে আমার মুখোমুখি হয়ে জোর করেই বাইকে বসাতে চায়৷ সেখান থেকে আমি পালিয়ে অন্য রাস্তায় চলে আসি৷ সেও আমার পিছু নেয়। অন্য রাস্তায় দুটি ছেলেকে আমি ঘটনা বলতেই তারা ইট পাথর হাতে তুলে নিয়ে বাইকওয়ালার দিকে তাক করতেই সে পালিয়ে যায়৷ ভয়ে রয়েছি। স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে।"
নাবালিকার বাবা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, " আমার মেয়ের সঙ্গই এই ঘটনা ঘটেনি। আরও বেশ কয়েক জনের সঙ্গে ঘটেছে৷ আমরা আতঙ্কিত। আগে এই রাস্তা দিয়ে বাচ্চারা স্কুলে যেত। এখন তারা আর চলাফেরা করে না এই রাস্তা দিয়ে, আমরাও পাঠাই না তাদের।"
এলাকাবাসী আশুতোষ বাগচী জানান, "নকশালবাড়ির কাস্টমস অফিস থেকে খালপাড়া মোড় পর্যন্ত এই রাস্তাটা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। অনেকেই তাদের নিজেদের মেয়েদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। এভাবে হাত ধরে টানাটানি করে অপহরণের চেষ্টা করলে কোন অভিভাবক সাহস পায় না তাদের সন্তানকে রাস্তায় বের করতে৷ পাশেই রয়েছে নেপাল৷ সেখানে যে পাচার হয়ে যাবে না তার দায় কে নেবে।"
ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় পঞ্চায়েত সদস্যা নমিতা মোদক জানান , "আমি নিজেও একজন মহিলা হিসেবে আতঙ্কিত। বছর তিনেক আগে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। ফের আবার শুরু হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন থেকে বিডিও সকলকেই জানানো হয়েছে ঘটনা সম্পর্কে।"