বিমল গুরুংয়ের পাতলেবাস এখন পোড়ো বাড়ি
কমলিকা সেনগুপ্ত
দার্জিলিংয়ের সিংমারি। সেখান থেকে নিচে রাস্তায় বেশ কিছুটা গেলে পাতলেবাস। এই সেই বাড়ি যেখান থেকে এক সময় নিয়ন্ত্রিত হত গোটা পাহাড়। সেই পাতলেবাস এখন শুধুমাত্র একটা পোড়োবাড়ি।
বছর দুয়েক আগে এই বাড়ির সামনেই একদিন দেখা গিয়েছিল উত্তাল পাহাড়ের ছবি। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল একের পর এক গাড়ি। বাড়ির সামনে এখনও পড়ে সেই পুড়ে গাড়ি। এখন ভাঙা অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে চেকপোস্ট। যা সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলির সাক্ষী হয়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন: মেরে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার নিদান দিলেন অনুব্রত মণ্ডল
পাতলেবাসের বাড়িতেই থাকতেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার একসময়ের সুপ্রিমো বিমল গুরুং। থাকতেন তাঁর স্ত্রী আশা গুরুংও। উত্তপ্ত দার্জিলিং থেকে দুবছর আগেই গা ঢাকা দিয়েছেন বিমল গুরুং। এখনও পাহাড়ে তাঁর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
কিন্তু তাঁর সেই ডেরা, পাতলেবাসে এখনও চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে জিনিসপত্র। একটি টেবিলের উপর রয়েছে সেই সময়ের কিছু কাগজপত্র। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কয়েকটি পতাকা।
আরও পড়ুন: বুথে আলো-জল কিচ্ছু নেই, শৌচালয় দুর্বিষহ, ক্ষোভ উগরে দিলেন ভোটকর্মীরা
পাতলেবাসের ঠিক বাইরে যে চেকপোস্ট। সেখানে রয়েছে বিমল ও আশা গুরুংয়ের নামে পুলিসের অ্যাপিয়ারেন্স নোট। পাশে রয়েছে আরও একটি নোটিস। যে নোটিস সাঁটিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাতে লেখা বিমল গুরুং আর দার্জিলিংয়ের ভোটার নন।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে গুরুংয়ের প্রভাবেই বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দর সিং আলুওয়ালিয়া জিতে সংসদে গিয়েছিলেন। এবার গুরুং না থাকলে তাঁর অনুগামীরা বিজেপির হয়েই ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় বাহিনী কতদিন, ২৩ মে যতদিন, বাংলাদেশি অভিনেতাকে পাশে নিয়ে হুমকি মদনের
বিজেপি এবার আর আলুওয়ালিয়াকে পাহাড়ে প্রার্থী করেনি। বরং প্রার্থী করা হয়েছে রাজু সিং বিস্তাকে। গুরংপন্থীদের বিজেপি সমর্থনের মতোই পাতলেবাসে এখন ঝুলছে বিজেপির পতাকা।
এক সময় যে বাড়ি থেকে নিয়ন্ত্রিত হত পাহাড়, সেই বাড়ির পরিস্থিতি এখন বেশ গা ছমছমে। সেই পরিস্থিতি ২৩ মে-র পর একই রকম থাকবে নাকি বদল হবে, তার উত্তর রয়েছে একমাত্র পাহাড়বাসীর কাছে। যা বৃহস্পতিবার দিনভর বন্দি হবে ইভিএমে।
আরও পড়ুন: বাহিনীকে ঝাঁটা মারার নিদান রাজ্যের মন্ত্রীর, 'শেষে স্বীকার করলেন', খোঁচা অমিতের
তবে এককালের গুরুং অনুগামী নির্মল ছেত্রী বলছেন, পাহাড়বাসী এখন শান্তি চায়। তিনিও চান। ১০৫ দিন সব বন্ধ ছিল। তাই তিনি এবার অন্যরকম কিছু ভাবছেন।
দার্জিলিংয়ের বাকি বাসিন্দারাও কি তাই ভাবছেন! উত্তরের জন্য ২৩ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।