'কেন অমিত শাহকে বলতে পারলেন না?' রাজ্যে NRC নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মৌনতাকে বিঁধলেন সুজন
প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর কেন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে শোনা গেল না? প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রধানমন্ত্রীর পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি নিয়ে কোনও কথা হয়নি। নর্থ ব্লকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে সাফ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন এনআরসি ইস্যুতে তৃণমূলের অবস্থান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা পুরনো অবস্থানেই অনড়। পশ্চিমবঙ্গে এনআরসির কোনও প্রয়োজন নেই। তাই এই নিয়ে আলোচনাও অপ্রাসঙ্গিক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অসম এনআরসি নিয়ে কথা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরই মোদীর পর অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকেও পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি নিয়ে মৌনতাকে বিঁধেছেন সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী।
সুজন চক্রবর্তী বলেন, "একবছর আগে এনআরসি ইস্যুতে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে সিপিআইএম পলিটব্যুরো। কিন্তু ওনার বুঝতে এক বছর সময় লেগে গেল।" প্রশ্ন তোলেন, "রাজ্য বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে এনআরসি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। কিন্তু সেকথা উনি অমিত শাহকে কেন বলতে পারলেন না?" তোপ দাগেন, "উনি নিজের জন্য গিয়েছিলেন। মানুষের জন্য যাননি।"
প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে আজই প্রথম বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। দুপুর দেড়টায় নর্থ ব্লকে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী। হাতে ছিল হলুদ গোলাপ। মোদীর পর অমিত শাহকেও হলুদ গোলাপে বন্ধুত্বে বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম বৈঠকে রাজ্যে এনআরসি প্রসঙ্গ উঠবে বলে আশা করেছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু মোদীর পর শাহের সঙ্গেও পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি নিয়ে কোনও কথা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ বিরোধীরা। উল্লেখ্য, অসমে এনআরসির খসড়া প্রকাশ হওয়ার পরই বিরোধিতায় সুর চড়িয়েছিলেন তিনি। এনআরসি-র প্রতিবাদে পথেও নেমেছেন। কিন্তু সেই প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর কেন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে শোনা গেল না? প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
আরও পড়ুন, দেউচা-পাঁচমির উদ্বোধনে মমতার আমন্ত্রণের পরই প্রধানমন্ত্রীকে সাবধান করলেন সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত
এদিন অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে মমতা জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অসম এনআরসি নিয়ে কথা হয়েছে। এনআরসি-র ফলে অসমে ১৯ লাখ লোকের নাম বাদ গিয়েছে। যারমধ্যে বাংলাভাষী, হিন্দিভাষী ও গোর্খা ভাইবোন এবং অসমিয়া কিছু মানুষের নামও রয়েছে। যাঁরা আসল ভোটার, ভারতীয় হিসেবে যাঁরা গর্ববোধ করেন, তাঁদের নামও বাদ পড়েছে। এই বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার আবেদন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়েছেন তিনি। তবে এনআরসি প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে কথা না হলেও, রাজ্যে যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে, সেকথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছন বলে জানান মমতা।