Mal Bazar: দায়িত্ব তুলে নিলেন শিক্ষকরাই, বাহারি চুল কেটে শৃঙ্খলার পাঠ পড়ুয়াদের
রীতিমতো চিরুনী,কাঁচি নিয়ে স্কুলের টিচার ইন চার্জ নিরুমোহন রায়, গুরুপদ মন্ডল সহ অন্যান্য শিক্ষকেরা অবাধ্য ছাত্রদের লাইনে দাঁড় করিয়ে একের পর একের চুল ছেঁটে দিয়েছেন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ভিডিও স্কুলের ফেসবুক পেজে লাইভ হতেই শিক্ষকদের এমন সাহসী কর্মকাণ্ডকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন বহু মানুষ।
অরূপ বসাক: রীতিমতো চিরুনী, কাঁচি নিয়ে স্কুলের শিক্ষকেরা। স্কুলের অবাধ্য ছাত্রদের লাইনে দাঁড় করিয়ে, চুল কাটলেন তাঁরাই। অবাধ্য ছাত্রদের অনুশাসন, শৃঙ্খলার পাঠ পড়াতে শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত পদক্ষেপই নিলেন বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। ঘটনাস্থল মালবাজার মহকুমার ওদলাবাড়ি উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেনি থেকে দশম শ্রেনি পর্যন্ত বেছে বেছে ২০-২৫ জন ছাত্রের বিশেষভাবে কাটা চুল স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক নিজেরাই কেটে দিলেন। বিষয়টি নিয়ে স্কুলের টিচার ইন চার্জ নিরুমোহন রায় বলেন, ‘অভিভাবকদের মিটিংয়ের পাশাপাশি বেশ কিছুদিন স্কুল শুরুর আগে প্রেয়ার লাইনে এমনকি প্রতিটি ক্লাসে বারবার ছাত্রদের বারন করা হয়েছে বিশেষ ছাঁটের চুল কেটে স্কুলে না আসতে। এর কুপ্রভাব অন্য সাধারন ছাত্রদের ওপর পড়ছে। মন পড়াশোনার থেকে সরে গিয়ে স্টাইলের দিকে ঝুঁকছে। আখেরে নষ্ট হচ্ছে ছাত্রদের ভবিষ্যৎ। একজন শিক্ষক হিসেবে যা মেনে নেওয়া কষ্টের’।
আরও পড়ুন: Bengal Weather Update: আরও নামল পারদ, সোমবার শেষ শীতের স্পেল
তিনি আরও বলেন, ‘অধিকাংশ ছাত্ররা শিক্ষকদের এমন উপদেশ মেনে চললেও বিদ্যালয়ের একশ্রেণির ছাত্ররা কিছুতেই কথা শুনছিলো না। বিশেষ স্টাইলে মাথার ওপর ঝাঁকড়া রঙিন চুল রাখলেও কানের পাশে চুলগুলো একেবারে ছোট করে ছাঁটা অবস্থায় স্কুলে আসতে শুরু করেছিলো ওই ছাত্ররা। ছোঁয়াচে রোগের মতো চুলের নকশা করার নেশা পেয়ে বসতে শুরু করেছিলো বাকি ছাত্রদেরও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবার আগেই তাই অবাধ্য ছাত্রদের বিশেষভাবে কাটা গোছা গোছা চুল ছেঁটে দিয়ে স্কুলের বাকি ছাত্রদের একটি বার্তা দেওয়া হল আজ’।
এদিন,রীতিমতো চিরুনী,কাঁচি নিয়ে স্কুলের টিচার ইন চার্জ নিরুমোহন রায়, গুরুপদ মন্ডল সহ অন্যান্য শিক্ষকেরা অবাধ্য ছাত্রদের লাইনে দাঁড় করিয়ে একের পর একের চুল ছেঁটে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Babul Supriyo: কনভয়ের মাঝে অটো! বরাতজোরে রক্ষা পেলেন মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ভিডিও স্কুলের ফেসবুক পেজে লাইভ হতেই শিক্ষকদের এমন সাহসী কর্মকাণ্ডকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন বহু মানুষ। বর্তমান শিক্ষানীতিতে যেখানে ছাত্রছাত্রীদের যে কোনও রকম শাস্তি দেওয়া অপরাধ বলে গণ্য করা হয় সেখানে একদল ছাত্রকে বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা, অনুশাসন, শালীনতার পাঠ পড়াতে ওদলাবাড়ি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এমন প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন প্রায় প্রত্যেকেই। বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সভাপতি সুকান্ত চৌধুরীও শিক্ষকদের এদিনের কাজের প্রশংসা করেছেন।
সুকান্ত চৌধুরি বলেন, ‘ছাত্র জীবনেই সভ্যতা, শালীনতা, অনুশাসন ও শৃঙ্খলার পাঠ পড়তে হয়। লেখাপড়ায় মনোযোগী হয়ে ভবিষ্যৎ জীবন সুরক্ষিত করতে হয় এবং বিদ্যালয় হল এমন শিক্ষাদানের পীঠস্থান। সেখানেই যদি ছাত্রদের দল পড়াশোনা ছেড়ে আধুনিক সমাজ ব্যবস্থার কুপ্রভাবগুলোকে আঁকড়ে ধরতে চায়, তবে তাতে বাধা দিয়ে উচিৎ কাজই করেছেন শিক্ষকরা’। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদেরও সচেতন হবার কথা বলেছেন অনেকেই।