হাওড়ার গোষ্ঠীকোন্দলের জের! সভাপতি পদ থেকে সরলেন অরূপ, লক্ষ্মীলাভ শুক্লার
এই অবস্থায় দল মনে করেছে এমন একজনকে জেলার সভাপতি করা উচিত যার গ্রহণযোগ্যতা সবার কাছে যেমন থাকবে, তেমনি তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি থাকবে
নিজস্ব প্রতিবদেন: হাওড়ার জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল মন্ত্রী অরূপ রায়কে । সেই জায়গায় নতুন সভাপতি হলেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার এবং ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা। এই রদবদলে বেশকিছু রাজনৈতিক সমীকরণ উঠে আসছে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, মন্ত্রী এবং বেশ বড়মাপের সাংগঠনিক নেতা অরূপ রায়কে সরতে হল কেন?
হাওড়ায় কেন সরিয়ে দেওয়া হলো অরূপ রায়কে?
বেশ কয়েকটি কারণ উঠে আসছে হাওড়া জেলা সভাপতির পদ রদবদল নিয়ে। তৃণমূলের অন্দরেও অনেকেই মেনে নিচ্ছেন, তার অন্যতম কারণ হলো হাওড়ার কো-অর্ডিনেটর রাজীব ব্যানার্জি এবং জেলা সভাপতি অরূপ রায়ের দীর্ঘদিনের বিরোধ । যা বেশ কয়েকদিন আগে চরম আকার নেয় । প্রকাশ্যেই দুই নেতা একে অপরকে তিরস্কার করেন। দলের সমস্যা এইভাবে প্রকাশ্যে নিয়ে আসা ভাল চোখে দেখেননি দলের সুপ্রিমো ।
সূত্রের খবর, দুই মন্ত্রীর বিবাদে দলের সাংগঠনিক জায়গার ভিত নড়বড়ে হয়ে পড়ছিল বলে ধারণা তৃণনূলের শীর্ষ নেতৃত্বের। রাজীব ব্যানার্জি সরাসরি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে অরূপ রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। সবদিক খতিয়ে রাজীব ব্যানার্জির কথাকে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব মান্যতা দিল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
লক্ষ্মী রতন শুক্ল কেন?
এই অবস্থায় দল মনে করেছে এমন একজনকে জেলার সভাপতি করা উচিত যার গ্রহণযোগ্যতা সবার কাছে যেমন থাকবে, তেমনি তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি থাকবে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে লক্ষ্মীরতন শুক্লা ছাড়া কে হতে পারে। কারণ লক্ষ্মীরতন নেতা মন্ত্রীর থেকেও সর্বস্তরে ওর গ্রহণযোগ্যতা একজন ক্রিকেটার হিসেবে। রাজনীতিতে এসেও ক্রিকেট এখনও ছাড়েননি তিনি। তাই হাওড়া জেলায় দলের ভারসাম্য ঠিক রাখতে জেলা সভাপতি করা হল প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটারকে ।
মন্ত্রীত্বের পাশাপাশি জেলার গুরু দায়িত্ব নিয়ে লক্ষ্মীরতন এ দিন জানান, দল তাঁকে যে দায়িত্ব দিয়েছে তা নিষ্ঠার সাঙ্গে পালন করার চেষ্টা করবেন। পাশাপাশি জেলায় যে সমস্ত সিনিয়র নেতা অরূপ রায়, রাজীব ব্যানার্জি-সহ আরও যাঁরা আছেন তাঁদের পরামর্শ নিয়ে কাজ করবেন। সবসময় সবাইকে নিয়ে চলেছেন। খেলোয়াড়ি জীবনে বাংলাকে বাইশ গজে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে লক্ষ্মীর দাবি রাজনীতির বাইশ গজেও তাঁর সমস্যা হবে না ।
এই সিদ্ধান্তে অরূপ কী বলছেন?
অন্যদিকে পদ হারিয়ে বিচলিত নন প্রাক্তন জেলা সভাপতি অরূপ রায়। তিনি জানান , পদ বড় কথা নয়। দল যেটা ভালো বুঝেছে সেটা করেছে। আমি দলের সৈনিক। সেনার নির্দেশ মেনে চলা আমার কর্তব্য। এতদিন যেভাবে দলের সেবা করছি এখনও তাই করব।
নতুন জেলা সভাপতি তাঁর ব্যক্তিগত ইমেজ দিয়ে দলের সাংগঠনিক শক্তি কতটা বাড়তে পারবে সেইদিকেই নজর হাওড়াবাসীর। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে তৃণমূল সুপ্রিমো রাজ্যজুড়ে যে সাংগঠনিক রদবদল করলেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হাওড়া জেলা।