বিদায়! বলয়গ্রহের বায়ুমণ্ডলে বিলীন হল ক্যাসিনি
ওয়েব ডেস্ক: অবসান হল দু'দশক দীর্ঘ মহাকাশ অভিযানের। বলয় গ্রহ শনির আবহমণ্ডলে আছড়ে পড়ল গ্রহসন্ধানী যান ক্যাসিনি। শুক্রবার ভারতীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ শনির আবহমণ্ডলে বিলীন হয়ে যায় মহাকাশযানটি।
বলয় গ্রহ শনির রহস্যভেদে ১৯৯৭ সালে ক্যাসিনিকে পাঠিয়েছিল নাসা। যানের জ্বালানি ফুরানোয় সেই অভিযান শেষ হল শুক্রবার। শনির কক্ষে অবাঞ্ছিত বস্তু থেকে ভবিষ্যতের বিপর্যয় রুখতে যানটিকে ধ্বংস করে ফেললেন বিজ্ঞানীরা।
১৯৯৭ সালে ১৫ অক্টোবর ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় ক্যাসিনিকে। ২০০৪ সালের ১ জুলাই প্রবেশ করে শনিকেন্দ্রিক কক্ষে। তার পর থেকে বলয়গ্রহের একের পর এক রহস্যের ওপর থেকে পর্দা সরিয়েছে ক্যাসিনির পাঠানো ছবি ও তথ্য। রহস্যভেদ হয়েছে শনির উপগ্রহ টাইটানের। টাইটানের বুকে তরল মিথেনের হ্রদ। শনির বলয়ে লুকিয়ে থাকা অকাধিক উপগ্রহ আবিষ্কার করেছে ক্যাসিনির চোখ।
ক্যাসিনির সঙ্গে থাকা হুইজেনস প্রোবের সাহায্যে প্রথম বহির্সৌরমণ্ডলে কোনও জ্যোতিষ্কে অবতরণ করে মানবসভ্যতা। ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে টাইটানে অবতরণ করে হুইজেনস। উপগ্রহটির ভূপৃষ্ঠের ছবি পাঠায় পৃথিবীতে।
শনির মেরুপ্রদেষের ষড়ভূজাকার বায়ুপ্রবাহের প্রকৃতি। একাধিক অস্পষ্ট বলয়ের সন্ধান দিয়েছে ক্যাসিনি। ক্যাসিনির সৌজন্যে শনির বুকে এক বিশাল ঝড়কে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছে সভ্যতা।
দীর্ঘ ২০ বছরের মহাকাশযাত্রায় জ্বালানি ফুরিয়ে এসেছিল ক্যাসিনির। ফলে মাহাকাশযানটির ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনায় পড়েন নাসার বিজ্ঞানীরা। অবশেষে ক্যাসিনিকে শনির বুকেই ধ্বংস করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। গত বছর ২৯ নভেম্বর ক্যাসিনিকে অন্তিম কক্ষে স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করে নাসা। চলতি বছরের ২২ এপ্রিল শেষবার টাইটানের পাশ দিয়ে উড়ে যায় ক্যাসিনি। ঢুকে পড়ে অন্তিম কক্ষে। সেই কক্ষে ঘুরতে ঘুরতেই শুক্রবার শনির বুকে আছড়ে পড়ল যানটি।