সন্ত্রাসের আবহেই রাত পোহালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেবে বাংলাদেশ
একের পর এক প্রতিবাদী ও বিরোধী দলের নেতাকে জেলে ভরার অভিযোগ রয়েছে হাসিনার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, হাসিনার বিরুদ্ধে মুখ খুললেই সেদেশে ঠাঁই হয় কারাগারে। ব্যতিক্রম হননি বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াও।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রাত পোহালেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেবে ওপার বাংলা। রবিবারের ভোটগ্রহণ ঘিরে কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে গোটা দেশ। বন্ধ রাখা হয়েছে হাই স্পিড ইন্টারনেট। নির্বাচনে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার আশ্বাস দিয়েছে সেদেশের নির্বাচন কমিশন। তবু আশঙ্কা কাটছে না অন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলির। অশান্তি ও ভোট কারচুপির আশঙ্কা করছে তারা।
বাংলাদেশে গত ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন আওয়ামি লিগ নেত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালে বিরোধীরা জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করলে একতরফা জয় পান হাসিনা। তার জমানায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে প্রভূত উন্নতি করলেও নাগরিক অধিকার নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। হাসিনার জমানায় গড়ে প্রতি বছরে ৬ শতাংশ হারে বেড়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। যার ফলে পড়শি দেশের বহু মানুষ চরম দারিদ্র থেকে বেরিয়ে এসেছেন।
গিজ়া পিরামিডের কাছে পর্যটকদের বাসে বিস্ফোরণ, মৃত ৪
উলটো দিকে একের পর এক প্রতিবাদী ও বিরোধী দলের নেতাকে জেলে ভরার অভিযোগ রয়েছে হাসিনার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, হাসিনার বিরুদ্ধে মুখ খুললেই সেদেশে ঠাঁই হয় কারাগারে। ব্যতিক্রম হননি বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াও। দানতহবিল দুর্নীতি মামলায় বর্তমানে ১৭ বছরের সাজা খাটছেন তিনি। একই পরিণতি হয়েছে সেদেশের একাধিক বিরোধী নেতার।
রবিবার ৪০,০০০ ভোটকেন্দ্রে ভোট দেবেন বাংলাদেশের প্রায় ১০ কোটি ভোটার। এর মধ্যে রয়েছে ৪৩ লক্ষ নতুন ভোটার। গোটা দেশে নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে ৬ লক্ষ নিরাপত্তারক্ষী। তবে শেষ পর্যন্ত কি শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারবেন ভোটাররা? প্রশ্ন থাকছেই।
'ক্ষমতায় এলে ১ ঘণ্টার মধ্যে বিজেপি কর্মীদের ওপর থেকে প্রত্যাহার হবে ভুয়ো মামলা'
শনিবারও ভোটে হিংসার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সেদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লিগ। তাদের দাবি, নির্বাচন বানচাল করতে ও আন্তর্জাতিক মহলে হাসিনা প্রশাসনের দুর্নাম করতে ভোটগ্রহণ চলাকালীন ব্যাপক তাণ্ডব চালাতে পারে জামাত ও বিএনপি। ওদিকে এরকম হিংসার আশঙ্কার মধ্যে কত মানুষ বুথমুখী হবেন তা নিয়ে সন্দিহান অনেকে।
বাংলাদেশে এবারই লড়াই মূলত আওয়ামী লিগ ও বিএনপির মধ্যে। জেলবন্দি থাকায় এবার নির্বাচনে লড়াই করছেন না বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়া। এবারও জামাত ও একাধিক ছোট দলের সঙ্গে জোট করে ভোটের ময়দানে নেমেছেন তিনি। ওদিকে জাতীয় পার্টিন নেতা এরশাদের দোয়া পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা।
ওদিকে নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই প্রায় গোটা বাংলাদেশ থেকে লাগাতার এসেছে হিংসার খবর। হামলার লক্ষ্য মূলত বিরোধী দলগুলি। বিরোধী দলের একাধিক প্রার্থীও শাসক দলের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ। যার জেরে গোটা দেশে এক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
শনিবার বিএনপি-র তরফে ভোটারদের উদ্দেশে খালেদা জিয়ার একটি আহ্বান প্রকাশ করা হয়। তাতে বেগম জিয়া বলেছেন, “আগামিকাল স্বৈরশাসকদের হাত থেকে মুক্তিলাভের সুযোগ আসবে আপনাদের সামনে। সুযোগ আসবে দেশকে মুক্ত করার, সমস্ত হুমকি-ধমক ও ভয়ভীতি উপেক্ষা করে দলে দলে ভোট কেন্দ্রে যাবেন। আপনাদের এক একটি ভোট নিশ্চিত করতে পারে জনগণের মুক্তি ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।”