এক লেসবিয়ানের কীর্তি

মিস আমেরিকা প্রতিযোগিতায় বেনজির ঘটনা। প্রতিযোগিতার ৯৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম অংশ নিলেন একজন লেসবিয়ান প্রতিযোগী। গত জুনেই এরিন ও'ফ্লাহার্টির মাথায় উঠেছে মিস মিসৌরির মুকুট।

Updated By: Sep 14, 2016, 07:00 PM IST
এক লেসবিয়ানের কীর্তি

ওয়েব ডেস্ক: মিস আমেরিকা প্রতিযোগিতায় বেনজির ঘটনা। প্রতিযোগিতার ৯৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম অংশ নিলেন একজন লেসবিয়ান প্রতিযোগী। গত জুনেই এরিন ও'ফ্লাহার্টির মাথায় উঠেছে মিস মিসৌরির মুকুট।

২০১৬ মিস আমেরিকা প্রতিযোগিতা

মিস আমেরিকা প্রতিযোগিতা মানেই এক ঝলমলে সন্ধ্যা। রূপের ছটায় চোখধাঁধানো আলোআঁধারি।রেড কার্পেটে সুন্দরীদের লম্বা সারি। তার মধ্যেও উজ্জ্বল এক তারা। অন্যদের চেয়ে অনেকটাই আলাদা তিনি। মিস আমেরিকা হতে পারেননি বটে, কিন্তু মিস আমেরিকা প্রতিযোগিতার যাবতীয় রূপ, রস, গন্ধ শুষে নিয়েছেন তিনিই। মিস মিসৌরি। তেইশ বছরের এরিন ও'ফ্লাহার্টি। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর সম্প্রতি এলজিবিটি সম্প্রদায়ের জয় এসেছে। পুরো জয় হয়ত বলা যাবে না। কিন্তু সমকামী বিবাহ স্বীকৃতি পেয়েছে। সেই লড়াইকেই এগিয়ে নিতে যেতে চান ফ্লাহার্টি। মিস মিসৌরির মুকুট মাথায় ওঠাটা তারই প্রথম ধাপ। আর দ্বিতীয় ধাপ মিস আমেরিকা প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া। আমরা এখনও লড়াই করছি। জীবনের নানা ক্ষেত্রে আমাদের এখনও নিচু চোখে দেখা হয়। সুতরাং আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হল টিকে থাকা। আমি এলজিবিটি সম্প্রদায়ের বলে গর্ববোধ করি। এমন কথাই বললেন এরিন। পোশাক বিপণি চালান এরিন। গানে পটু। একজন গর্বিত লেসবিয়ান হিসাবেই মিস আমেরিকা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন- মিস জাপানের খেতাব জিতে বিদ্রুপের মুখে প্রিয়াঙ্কা, কারণটা অবাক করা
কিছুটা সংশয় ছিল ঠিকই। তবে প্রতিযোগিতায় যাই ঘটুক না কেন, আমি একজন প্রতিযোগী হিসাবেই অংশ নিয়েছি। তবে যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছি, তাতে আমি অভিভূত। উত্সাহ এবং সমর্থন দুটোই ছিল আমার সঙ্গে। মিস আমেরিকা সংগঠন এবং মিস মিসৌরি বৌর্ড বরাবর আমার পাশে থেকেছে। এর থেকে ভাল আর কী হতে পারে!

আত্মহত্যা প্রতিরোধক একটি প্ল্যাটফর্মকে প্রতিনিধিত্ব করেন এরিন। এ ব্যাপারে সচেতনতা গড়ে তোলেন তিনি। যখন আমার বয়স তেরো, তখন আমার খুব ভাল এক বন্ধু আত্মহত্যা করে। যদিও তখন জানতাম না আত্মহত্যা বিষয়টা ঠিক কী এবং আমার জীবনে তার কোনও প্রভাবও পড়েনি। তবে মানুষ কেন আত্মহত্যা করে তা জানার চেষ্টা শুরু করি। কী করলে এটা বন্ধ করা সম্ভব, সেই চেষ্টাও শুরু করি। এটা এমন একটা বিষয়, যা  নিয়ে মানুষ বিশেষ আলোচনা করে না। কিন্তু এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। আমি তাই আমেরিকান ফাউন্ডেশন ফর সুইসাইড প্রিভেনশন অ্যান্ড দ্য ট্রেভর প্রজেক্টের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করি। তাদের অ্যাম্বাসাডর হিসেবে কাজ করি। মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার সেতু হিসেবে কাজ করি আমি। সুন্দরী প্রতিযোগিতা মানে কি এক নারীর সৌন্দর্যকে তুলে ধরা? তার মেধা, প্রজ্ঞাকে জাগরুক করা? মিস আমেরিকা মানে কি বিউটি উইথ দ্য ব্রেন? মানতে নারাজ এরিন ও'ফ্লাহার্টি। তাঁর মতো লেসবিয়ানও এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার হকদার, মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন এরিন। মিস আমেরিকা সংগঠন যে তাঁর জীবনকে আমূল বদলে দিয়েছে, তা স্বীকার করেন তেইশ বছরের মিস মিসৌরি। অর্থ উপার্জন থেকে বন্ধুলাভ থেকে আত্মবিশ্বাস, সবই বেড়েছে তাঁর। ইতিহাস গড়ে এরিন একটা মহাদেশব্যাপী আন্দোলনকে অনেকটাই এগিয়ে দিলেন এরিন ও'ফ্লাহার্টি।

 

.