যখন-তখন পিঠে চেপে বসে মানুষ! ক্নান্তিতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল তরুণ হাতি
আর পাঁচদিনের মতো এদিনও বছর আঠেরোর তরুণ হাতিটি পর্যটকদের পিঠে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল।
নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রাণী সুরক্ষা বিল আনা হয়ছিল যাতে অবলা প্রাণীদের উপর মানুষের অকারণ অত্যাচার বন্ধ করা যায়। কিন্তু মানুষের হুঁশ না ফিরলে কী আর বিল এনে সমস্যার সমাধান হয়! প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও অবলা প্রাণীদের উপর কেউ না কেউ অত্যাচার করছে। কখনও কুকুরের গায়ে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। কখনও আবার গর্ভবতী বিড়ালকে মেরে ফেলা হচ্ছে গলায় ফাঁশ লাগিয়ে। এবার এমনই এক জঘন্য কাণ্ড ঘটল শ্রীলঙ্কায়। দিনের যে কোনও সময় একটি তরুণ হাতির পিছে চেপে বসত লোকজন। ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত হাতি পক্ষে নিজের কষ্ট মানুষকে বোঝানো সম্ভব ছিল না। দিনের পর দিন তার উপর অত্যাচার চলতে থাকে। এমনকী অসুস্থ হলেও রেহাই মিলত না। অবশেষে ক্লান্তিতে সেই হাতি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল। তার মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠেছে নিন্দার ঝড়। কিন্তু বেঁচে থাকাকালীন মানুষের সামান্য সহানুভূতিও সেই হাতিটি পায়নি।
শ্রীলঙ্কার বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র সিগিরিয়া। হাতির পিঠে চড়ে সুন্দর এই শহরে ঘুরে বেড়ানোটাই হল অন্যতম আকর্ষণ। আর পাঁচদিনের মতো এদিনও বছর আঠেরোর তরুণ হাতিটি পর্যটকদের পিঠে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। পর পর তিনটি যাত্রা চলে। মাঝে তাকে বিশ্রামের সুযোগও দেওয়া হয়নি। এর পরই প্রচণ্ড ক্লান্ত হয়ে পড়ে হাতিটি। কিন্তু শরীরের অবস্থা তার পক্ষে বলে বোঝানো সম্ভব হয়নি। মান-হুঁশ হারানো মানুষও তাঁর শারীরীক অবস্থা বুঝতে চেষ্টা করেনি। এমনিতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায় না সিগিরিয়ায় হাতিরা। রোজ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে পর্যটকদের শহর ঘোরানোর কাজ। টাকার জন্য হাতিদের উপর চলে অমানসিক অত্যাচার।
আরও পড়ুন- নৃশংসতার শেষ কোথায়! গর্ভবতী বিড়ালকে ঝোলানো হল ফাঁসিতে
পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবেই হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পশু চিকিত্সকরা। অবলা হাতির মৃত্যুর পর সরব হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রাণী স্বার্থ রক্ষার সংগঠনগুলি। অনেকেই প্রাণী সুরক্ষা বিলে বদল আনার দাবি তুলেছেন। কারণ, মানুষের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে বারবার অবলা জীবদের ক্ষতি হচ্ছে। বাড়ছে পশু-পাখিদের উপর অত্যাচারের প্রবণতাও। নেহাতই টাকার লোভে নির্বাচারে বন ও বন্যপ্রাণ সাবাড় করে দেওয়া হচ্ছে।