Bangladesh: গ্রেফতার শুধু সময়ের অপেক্ষা! মাদককাণ্ডে নাম জড়াল বাংলাদেশের একঝাঁক জনপ্রিয় অভিনেত্রীর

Bangladesh: মাদক-সহ গ্রেফতার হওয়া ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে তথ্য-প্রমাণসহ সাফা, টয়া, তিশা এবং সুনিধির নাম বেরিয়ে আসে

Updated By: Dec 22, 2024, 04:39 PM IST
Bangladesh: গ্রেফতার শুধু সময়ের অপেক্ষা! মাদককাণ্ডে নাম জড়াল বাংলাদেশের একঝাঁক জনপ্রিয় অভিনেত্রীর

সেলিম রেজা | ঢাকা: বদলের বাংলাদেশে এবার মাদক মামলায় জড়িয়ে পড়লেন বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন অভিনেত্রী ও মডেলকন্যা। বর্তমানে বাংলাদেশের শোবিজ অঙ্গনে এদের জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে। এদের মধ্যে রয়েছেন আনাতোনি কেলি সাফা ওরফে সাফা কবির এবং মুমতাহিনা চৌধুরী ওরফে টয়ার বিরুদ্ধে মাদক যোগের অকাট্য প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে খবর।

আরও পড়ুন-সত্তর হাজার টাকায় সুপারি দেয় স্ত্রী ও তার প্রেমিক, হুগলির কানাগড়ে যুবক খুনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনের আরেক জনপ্রিয় মুখ তানজিন তিশা এবং সংগীত শিল্পী সুনিধি নায়েকের মাদক যোগ ঘিরে বিশেষ অনুসন্ধান চালাচ্ছে বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ে এ বিষয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

সূত্রের খবর, মাদক-সহ গ্রেফতার হওয়া ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে তথ্য-প্রমাণসহ সাফা, টয়া, তিশা এবং সুনিধির নাম বেরিয়ে আসে। একটি বিশেষ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তারা নিয়মিত মাদক সংগ্রহ করে আসছিলেন। ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিন ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী অরিন্দম রায় দীপকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
 
ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক রাহুল সেন জি ২৪ ঘন্টার বাংলাদেশ প্রতিনিধিকে টেলিফোনে বলেন, অরিন্দম রায় দীপকে গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে আমরা বাংলাদেশের কয়েকজন প্রথম সারির অভিনেত্রী ও মডেলের মাদক যোগের প্রমাণ পেয়েছি। এ বিষয়ে এখনও তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, মাদক সম্পৃক্ততার অভিযোগে ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক ছাত্র অরিন্দম রায় দীপের ওপর বিশেষ নজরদারি করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে তার গতিবিধি অনুসরণের ধারাবাহিকতায় ১৭ অক্টোবর ঢাকা বিমানবন্দরে গ্রেফতার হন অরিন্দম রায় দীপ। এ সময় তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সিসা, এমডিএমএ, এলএসডি ও কুসসহ বেশ কিছু মাদক উদ্ধার করা হয়। পরে বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি বিশেষায়িত টিম অরিন্দম রায় দীপকে ২ দিনের রিমান্ডে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
 
তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, মাদক ব্যবসার বিষয়ে মৌখিক স্বীকারোক্তির একপর্যায়ে অরিন্দম রায় দীপের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং পরীক্ষা করা হয়। এতে বাংলাদেশের জনপ্রিয় কয়েকজন অভিনেত্রীর মাদক সম্পৃক্ততার তথ্য মেলে। এমনকি তাদের পক্ষ থেকে দেওয়া মাদকের অর্ডার সংক্রান্ত কয়েকটি সুনির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং রেকর্ডও পাওয়া যায়।
 
বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জি ২৪ ঘন্টাকে বলেন, অরিন্দম রায় দীপের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সাফা, টয়া, তিশা এবং সুনিধি নায়েকের নামে সেভ করা কয়েকটি নম্বর থেকে নিয়মিত মাদকের অর্ডার দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে নম্বরগুলো যাচাইয়ের জন্য ফোন নম্বরের রেজিস্ট্রেশন রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়। এতে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট নম্বরগুলো সাফা কবির এবং টয়ার নামেই রেজিস্ট্রেশনকৃত। তবে তানজিন তিশার নম্বরটির রেজিস্ট্রেশন রয়েছে তার মা উম্মে সালমার নামে।
 
মাদক বিক্রির এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বাংলাদেশের আরও কয়েকজন অভিনেত্রী ও সংগীত শিল্পীর চ্যাটিং পাওয়া যায়। এদের অন্যতম হলেন অভিনেত্রী তানজিন তিশা এবং সংগীত শিল্পী সুনিধি নায়েক। চ্যাটিংয়ে সুনিধি নায়েক কয়েকটি ব্র্যান্ডের এমডিএমের প্যাকেট শেয়ার করে অর্ডার দেন।
 
বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, ভারতীয় নাগরিক সুনিধি নায়েক দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। বাংলাদেশের নামকরা সংগীত শিল্পী এবং কোক স্টুডিওর অন্যতম উদ্যোক্তা শায়ান চৌধুরী ওরফে অর্ণবকে বিয়ে করে তিনি ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তবে সম্প্রতি অর্ণবের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়েছে এমন কথা বিভিন্ন মিডিয়ায় শোনা যায়।

তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, অরিন্দম রায় দীপ গ্রেফতারের পরপরই সংশ্লিষ্টদের কেউ কেউ তাদের মোবাইল ফোন থেকে গোপন চ্যাটিং রেকর্ড মুছে ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু এতে তারা পুরোপুরি সফল হননি। গ্রেফতারের পর তাৎক্ষণিকভাবে অরিন্দম রায় দীপের মোবাইল ফোনের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এতে মাদক কেনাবেচাসংক্রান্ত চ্যাটিং রেকর্ড মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি।

সূত্রের খবর, বর্তমানে রাজধানী ঢাকার গুলশান এবং বনানীকেন্দ্রিক ধণাঢ্য পরিবারের সন্তানদের অনেকেই এমডিএম, এলএসডি এবং কুশ নামের উচ্চ আসক্তি সম্পন্ন মাদকের দিকে ঝুঁকছে। চোরাইপথে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং থাইল্যান্ডসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ থেকে এসব মাদকের চালান আসছে। স্ল্যাপচ্যাট, মেসেঞ্জার বা হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপে এগুলো বিক্রি করা হয়।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

.