দ্বিতীয়বার ওভাল অফিসে ওবামা

সাফল্য আর ব্যর্থতা। ঝুলিতে দুইই ছিল। তাই নিয়েই দ্বিতীয়বারের জন্য ভোটযুদ্ধে নেমেছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বারাক ওবামা। বুধবার তিনি দেখিয়ে দিলেন, যে হ্যাঁ, তিনিই পারেন! প্রাক্ নির্বাচনী সমীক্ষায় উঠে এসেছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত। কিন্তু সেই পূর্বাভাসকে ভুল প্রমাণিত করে মার্কিন নাগরিকরা কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টের ওপরেই আস্থা রাখলেন। ফলাফল থেকে পরিষ্কার, সঙ্কট জর্জরিত আমেরিকাতে এই মুহূর্তে ভরসা তিনিই।

Updated By: Nov 7, 2012, 02:07 PM IST

হোয়াইট হাউস ফের ওবামারই দখলে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত ছিল। গণনার প্রথম দিকে সমানে সমানে টক্কর চললেও, শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করলেন বারাক হুসেইন ওবামাই। দ্বিতীয়বারের জন্য নির্বাচিত হলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।
সাফল্য আর ব্যর্থতা। ঝুলিতে দুইই ছিল। তাই নিয়েই দ্বিতীয়বারের জন্য ভোটযুদ্ধে নেমেছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বারাক ওবামা। বুধবার তিনি দেখিয়ে দিলেন, যে হ্যাঁ, তিনিই পারেন!  প্রাক্ নির্বাচনী সমীক্ষায় উঠে এসেছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত। কিন্তু সেই পূর্বাভাসকে ভুল প্রমাণিত করে মার্কিন নাগরিকরা কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টের ওপরেই আস্থা রাখলেন। ফলাফল থেকে পরিষ্কার, সঙ্কট জর্জরিত আমেরিকাতে এই মুহূর্তে ভরসা তিনিই।
ভোটপ্রচারে তাঁর দিকে ছুটে এসেছিল অজস্র সমালোচনার তির। আর্থিক মন্দা থেকে কর্মসংস্থান, নানা ক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছিল। লিবিয়া আক্রমণ কিংবা আফগানিস্তানে সেনা মোতায়েন, কাঠগড়ায় তোলা হয়েছিল তাঁর বিদেশনীতিকেও। দুহাজার আটে বিপুল ভোট পেয়ে ক্ষমতায় এসে আমুল পরিবর্তনের স্লোগান তুলেছিলেন ওবামা। এবারও বিপুল ভোটে জিতেছেন তিনি। কোন মন্ত্রে তিনি এবারও মার্কিন নাগরিকদের আশীর্বাদ কুড়িয়ে নিলেন? এনিয়ে বিশেষজ্ঞমহলের নানা ব্যাখ্যা রয়েছে।
প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পরেই অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে স্টিমুলাস প্যাকেজ চালু করেছিলেন ওবামা। সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্য পরিষেবায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিককে স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনতে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। গুরুত্ব পেয়েছিল কর্মসংস্থান। বিভিন্ন জনমুখী নীতি খুব শিগগিরই কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দিয়েছিল। পাশাপাশি ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা তাঁর ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করে। স্বভাবজাত দক্ষতায় আরও একটা বড় কাজ সেরে ফেলেছিলেন ওবামা। সেটা হল বিশ্বের কাছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাবমূর্তি বদলে ফেলা। হোয়াইট হাউসের মালিক মানেই মুক্ত দুনিয়ার অধীশ্বর, যুদ্ধবাজ এক রাষ্ট্রনায়ক, চিরপরিচিত এই ধারণাকে বদলাতে পেরেছিলেন। তার জন্য কী করেননি তিনি! আরব দুনিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক চেয়ে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দিয়েছেন। তিক্ততার পুরনো কূটনীতি সরিয়ে রেখে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়ার সঙ্গে অস্ত্র হ্রাস চুক্তি করেছেন। সেনা ফিরিয়ে এনে ইরাক যুদ্ধে ইতি টেনেছেন। আর এসবের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন তিনি।
ওবামার প্রথম জমানায় অন্যতম বড় সাফল্য ওসামা বিন লাদেনের হত্যা। আমেরিকার মানুষের নাইন ইলেভেন ক্ষতে প্রলেপ দিতে পেরেছিলেন তিনি। আর ঠিক নির্বাচনের আগে স্যান্ডি বিধ্বস্ত আমেরিকাকে আশ্বাস দিতে এগিয়ে এসেছিলেন দক্ষ প্রশাসক ওবামা। শেষবেলায় প্রেসিডেন্টের সেই আন্তরিক প্রচেষ্টাকেও ভোট দিয়ে কুর্নিশ জানাল আমেরিকা।

.