লন্ডন ব্রিজ হামলার তদন্তের দায়িত্বে বাঙালি পুলিস আধিকারিক ‘মিস্টার বাসু’
দীর্ঘ প্রশাসনিক কর্মজীবনে ‘কুইন্স পুলিস পদক’-এ সম্মানিত হয়েছেন তিনি। নীলের স্ত্রী নিনা কোপ সে দেশের ‘ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি’র ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ২৯ নভেম্বর, শুক্রবার দুপুর ২টো নাগাদ লন্ডন ব্রিজে ছুরি নিয়ে পথচারীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এক আততায়ী। ওই হামলার ঘটনায় সে দিন দু’জন প্রাণ হারিয়েছেন, গুরুতর জখম হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। ওই দিন পুলিসের গুলিতে ঘটনাস্থলেই খতম হয় আততায়ী। শুক্রবার বিকেলেই লন্ডন মেট্রোপলিটান পুলিসের সন্ত্রাস দমন শাখার প্রধান নীল বসু স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সামনে সাংবাদিক বৈঠক করেন। লন্ডন ব্রিজ হামলার তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঙালি।
তদন্তে জানা গিয়েছে, লন্ডন ব্রিজে হামলাকারী ওই আততায়ীর নাম উসমান খান, বয়স ২৮ বছর। পাকিস্তানেই কেটেছে তার শৈশব। এর আগে ২০১২ সালে সন্ত্রাসে জড়িত থাকার অপরাধে একটি মামলায় ৮ বছরের সাজা হয়েছিল উসমানের। গত বছর শর্তসাপেক্ষে জেল থেকে ছাড়া পায় উসমান। তবে সে সময় উসমান সম্পর্কে প্রশাসনকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন বিচারপতি। সে সময় জানা যায়, জঙ্গি সংগঠন আলকায়দার বিভিন্ন কার্যকলাপের অনুকরণে নাশকতা মূলক কাজকর্মে উত্সাহিত হয় সে। ২০১০ সালে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র করেছিল আল কায়দা সমর্থিত ন’জনের একটি দল। এই দলে ছিল উসমানও। সে সময়ে তার বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর।
এ বার লন্ডন মেট্রোপলিটান পুলিসের সন্ত্রাস দমন শাখার প্রধান ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঙালি নীল বসুর কথায় আসা যাক। ৫০ বছর বয়সী নীলের বাবার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা কলকাতায়। নীলের বাবা পেশায় ছিলেন শল্য চিকিৎসক। পরে ইংল্যান্ড যান। সেখানে আলাপ হয় ওয়েলসের এক মহিলার সঙ্গে, পরে প্রেম আর তারপর বিয়ে করেন দু’জন। তাঁদেরই সন্তান নীল বসু। বাবা-মা’র দেওয়া নাম অনিল কান্তি বসু।
আরও পড়ুন: লন্ডনের পর একই কায়দায় নেদারল্যান্ডসের হেগে ছুরি নিয়ে হামলা, জখম ৩
নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি নিয়ে স্নাতক হন নীল। ১৯৯২ সালে, ২৪ বছর বয়সে হিসাবে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিসে যোগ দেন তিনি। চার বছর পর ব্রিক্সটনে সার্জেন্ট হিসাবে নিয়োগ করা হয় তাঁকে। ১৯৯৯ সালে ইনস্পেক্টর পদের দায়িত্ব পান নীল। ২০০৩ সালে লন্ডন মেট্রোপলিটান পুলিসের হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দা প্রধান নিযুক্ত হন। বর্তমানে তিনি লন্ডন মেট্রোপলিটান পুলিসের সন্ত্রাস দমন শাখার প্রধান। লন্ডন ব্রিজ হামলার তদন্ত এগিয়েছে তাঁরই নেতৃত্বে। দীর্ঘ প্রশাসনিক কর্মজীবনে ‘কুইন্স পুলিস পদক’-এ সম্মানিত হয়েছেন তিনি। নীলের স্ত্রী নিনা কোপ সে দেশের ‘ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি’র ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল।