ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ইসলামাবাদ ছাড়ার নির্দেশ পাক সরকারের
এদিন জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
নিজস্ব প্রতিবেদন: জম্মু-কাশ্মীর থেকে ভারতের ৩৭০ ধারা বিলোপের পর তেলেবেগুনে চটে গিয়েছে পাকিস্তান। আর সেই রাগে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ওই সিদ্ধান্তের পর পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অজয় বিসারিয়াকে দেশ ছাড়তে নির্দেশ নির্দেশ দিয়েছে ইসলামাবাদ।
এদিন জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ওই বৈঠকেই ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিত থেকে কূটনৈতিক সম্পর্ক অবনতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাক সরকার। ভারতে নতুন রাষ্ট্রদূত মইন-উল-হককে তারা পাঠাচ্ছে না বলে জানিয়ে দেয় পাকিস্তান। একইসঙ্গে দেশ ছাড়তে বলা হয়েছে পাকিস্তানে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অজয় বিসারিয়াকে। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তের জেরে রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করার জন্য বলা হয়েছে ভারতকে। একইসঙ্গে ভারতে পাক রাষ্ট্রদূতও যাবেন না।
বুধবার কাশ্মীরের পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ওই বৈঠকের পর পাক প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে পদক্ষেপের কথা।
১. ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক কমানো হবে।
২. ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতাগুলি নিয়ে হবে পর্যালোচনা।
৩. ভারতের সঙ্গে সমস্ত রকম বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাতিল।
৪.জম্মু-কাশ্মীরের বিষয়টি রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে জানাবে পাকিস্তান।
৫. ১৪ অগস্ট স্বাধীনতা পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। ওই দিনটি কাশ্মীরিদের সমর্পণ করবে পাকিস্তান।
৬. পরের দিন ভারতের স্বাধীনতা দিবস কালো দিন হিসেবে পালিত হবে পাকিস্তানে।
৭. বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে থাকা পাক কূটনীতিবিদদের কাশ্মীরে ভারতের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলতে হবে।
৮. সেনাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
উরি হামলার পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে এমনিতেই আলোচনা বন্ধ করে দিয়েছে মোদী সরকার। পুলওয়ামার পর বালাকোটে ভারতের এয়ারস্ট্রাইকের পরও আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ইমরান। কিন্তু কানে দেয়নি ভারত। এমনকি ভারতীয় যুদ্ধবিমান চালক অভিনন্দনকেও নিঃশর্তে ছাড়িয়ে আনতে সমর্থ হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তখন ইসলামাবাদকে স্পষ্ট জানানো হয়েছিল, অভিনন্দনকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে, কোনওরকম শর্ত মানা হবে না। আর পাকিস্তান কালো দিন না সাদা দিন পালন করল, তাতে ভারতের কোনও সমস্যা হবে না। দুনিয়াজুড়ে পাকিস্তান বলতে সন্ত্রাসীদের আখড়া। তাদের কথা শুনবেই বা কে! আর কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেটা নিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের হস্তক্ষেপ মানবে না নয়াদিল্লি। আর নয়াদিল্লির মনোভাব ভালোমতোই জানে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
আরও পড়ুন- সেনার সঙ্গে রণকৌশল তৈরি, স্থানীয়দের সঙ্গে ভোজ, শ্রীনগরে ভারতের 'জেমস বন্ড'