Vladimir Putin: এবার আইনত নিষিদ্ধ লিঙ্গ পরিবর্তন! রইল না নিজস্ব যৌনপরিচয় গড়ে তোলার স্বাধীনতা...
Law Banning Gender-affirming Procedures: অপ্রচলিত যৌন সম্পর্ককে নিষিদ্ধ করার কথা রাশিয়া ভেবেছিল ২০১৩ সালেই। ২০২০ সালেও পুতিন-সরকার সংবিধানগত কিছু পরিবর্তন আনার কথা ভেবেছিল-- মূলত সমলিঙ্গ বিবাহ এবং অপ্রচলিত যৌন সম্পর্ককে রোধ করাটাই লক্ষ্য ছিল।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অবশেষে এসে গেল সেই আইন। আসবার কথা ছিলই। 'মেডিক্যাল ইন্টারভেনশনস এইমড অ্যাট চেঞ্জিং দ্য সেক্স অফ আ পার্সন' সংক্রান্ত আইনে এবার পাকাপাকি পড়ে গেল রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের স্বাক্ষর। এক দশক আগে থেকেই অবশ্য সে দেশে এই নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলে আসছে। রাশিয়ার এলজিবিটিকিউ জনগোষ্ঠী যে-কারণে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষুব্ধ সেখানে। রাশিয়ার অর্থোডক্স চার্চকে সঙ্গে নিয়ে ট্র্যাডিশনাল ফ্যামিলি ভ্যালুর উপর মনোযোগ দেওয়ার কথা বহুদিন আগেই তুলেছিলেন পুতিন। সেই ভাবনারই ফলশ্রুতি এটি।
আরও পড়ুন: China: ধসে পড়ল স্কুলের ছাদ, চাপা পড়ল মেয়েদের গোটা ভলিবল টিম! ক'জনের মৃত্যু?
অপ্রচলিত যৌন সম্পর্ককে (nontraditional sexual relations) নিষিদ্ধ করার কথা রাশিয়া ভেবেছিল ২০১৩ সালেই। ২০২০ সালেও পুতিন-সরকার সংবিধানগত কিছু পরিবর্তন আনার কথা ভেবেছিল-- মূলত সমলিঙ্গ বিবাহ এবং অপ্রচলিত যৌন সম্পর্ককে রোধ করাটাই লক্ষ্য ছিল।
লক্ষ্য আরও একটা আছে। যুদ্ধক্ষেত্রের সেনাঘাটতি কমানো। কীভাবে? আসলে রাশিয়ার সাধারণ মানুষের আর ভালো লাগছে না যুদ্ধ। রাশিয়ার মানুষজন, বিশেষ করে পুরুষেরা যুদ্ধ থেকে যোজন দূরে থাকতে চাইছেন। এজন্য এঁরা অবলম্বন করছেন বিশেষ কায়দা। রাশিয়ার পুরুষেরা সব দল বেঁধে 'মেয়ে হতে' চাইছেন, চাইছেন বলতে হয়তো একটু ভুলই হয়, তাঁরা রীতিমতো হচ্ছেনও।
আসলে এক বছরের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলছে ইউক্রেনে। যতটা সহজে এই যুদ্ধে জয় পাবেন বলে মনে করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, কার্যক্ষেত্রে যুদ্ধটা ততটা সহজ হয়নি তাঁর পক্ষে। শোনা যাচ্ছে, ৮ লক্ষেরও বেশি সেনা হারিয়েছে রুশ বাহিনী। এর মধ্যে ৬ লক্ষ সৈন্য গুরুতর জখম। তাঁদের আঘাত এতই বেশি যে, তাঁদের পক্ষে আর যুদ্ধক্ষেত্রে ফেরা সম্ভব নয়। বাকি ২ লক্ষ সৈন্যের প্রাণ গিয়েছে। এই অবস্থায় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে রণাঙ্গনে নতুন নতুন সেনাবাহিনীর দরকার পড়ছে। তাই নতুন যোদ্ধার খোঁজ চলছে রাশিয়া জুড়ে। কী ভাবে নতুন সেনা খুঁজছে পুতিনের দেশ?
শোনা যাচ্ছে, জঘন্য অপরাধী, যারা এখন কারাবন্দি, তাদেরও নাকি ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে পাঠাচ্ছে রাশিয়া। রাশিয়া ছেড়ে যাতে কেউ অন্য দেশে পালিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সীমান্ত। এবং রাশিয়ার সাধারণ পুরুষদেরও ডাক পড়ছে যুদ্ধে। যুদ্ধে যাওয়া এড়াতে অবশ্য মরিয়া রুশ পুরুষরা। শোনা যাচ্ছে, তাই তাঁরা দলে দলে লিঙ্গ পরিবর্তন করছেন! শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও ঘটনা এটাই।
রাষ্ট্রও চুপ করে বসে নেই। তারা নড়েচড়ে বসেছে। রাশিয়ার পুরুষদের যুদ্ধক্ষেত্র এড়িয়ে মেয়ে হওয়ার এই প্রবণতা বন্ধ করতে রাশিয়া এখন লিঙ্গ পরিবর্তন সংক্রান্ত আইন কঠোর করতে চলেছে। রাশিয়ায় লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য খুব বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয় না। একটি ফর্ম পূরণ করলেই লিঙ্গ পরিবর্তন করা যায়। অস্ত্রোপচার করিয়ে শারীরিক ভাবে নারী হতে হয় না এদেশে, ফর্ম পূরণ করে, যে কোনও পরিচয়পত্রে (যেমন পাসপোর্টে) লিঙ্গ বদলের তথ্য সংযুক্ত করলেই হয়। এবার এই আইনেই বদল আনল রাশিয়া।
আরও পড়ুন: Dengue in Bangladesh: মহামারির আকার নিচ্ছে ডেঙ্গি! রোগীর চাপ সামলাতে এবার হাসপাতালে 'গেটকিপিং'
তবে সত্যিই রুশ পুরুষদের লিঙ্গ পরিবর্তনের প্রবণতা বেড়েছে কিনা, সেই সংক্রান্ত কোনও প্রামাণ্য তথ্য কারও হাতেই নেই। যদিও রুশ সরকার একটা পরিসংখ্যান দিচ্ছে। যেটা বলছে, ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে রাশিয়ায় ২৭ হাজার পুরুষ লিঙ্গ পরিবর্তন করেছিলেন। সংখ্যাটা সেদেশের পক্ষে খুবই নগণ্য। যুদ্ধ শুরুর পরে নতুন পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়নি।