'পৃথিবীতে বসবাসকারী ১১০ কোটি মানুষের সরকারিভাবে অস্তিত্বই নেই'

Updated By: Oct 22, 2017, 12:10 PM IST
'পৃথিবীতে বসবাসকারী ১১০ কোটি মানুষের সরকারিভাবে অস্তিত্বই নেই'

সংবাদ সংস্থা : শায়েরা বেগম! গত এক যুগ ধরে থাকার জায়গা ৮/১০-এর একটা ছোট্ট ঘর।  টাকার বিনিময়ে দেহের উষ্ণতাটুকু ভোগ করতে বাবুরা নিয়ম করে আসে যায় তাঁর কাছে। এক যুগের বেশি সময় ধরে সেই 'ভোগের ছাপ' বহন করতে হচ্ছে তাঁকে। তিন সন্তানের মা শায়েরা। তবে, তাদের 'পিতৃ পরিচয়' আলাদা আলাদা। শায়েরা ভারতের এক যৌনপল্লির বাসিন্দা। রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট বলছে, শায়েরার সন্তানদের মতো বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ আছে যারা বেঁচে থাকলেও, সরকারি খাতায় নথিভূক্ত নন। শুধু শায়েরার সন্তানদের মত মানুষই নয়, প্রত্যন্ত এলাকা থেকে রিফিউজি ক্যাম্পে মোট ১১০ কোটি মানুষ বসবাস করছেন, যাদের পরিচয়পত্র ও সরকারি নথি কিছুই নেই।

সম্প্রতি, রাষ্ট্রসংঘের পক্ষ থেকে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। তথ্য প্রকাশের পাশাপাশি তাদের আশঙ্কা, এই নথিভূক্তহীন জনসংখ্যা ত্রুমাগত বাড়তে থাকলে পৃথিবীর বুকে নেমে আসতে পারে বিপর্যয়। টান পড়তে পারে খাদ্যভাণ্ডার থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবায়।

আরও পড়ুন- দু'বছর পর উদ্ধার রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ পাক সাংবাদিক জিনাত শাহজাদি

বর্তমানে বিশ্বের মোট নথিভূক্ত জনসংখ্যা ৭৬০ কোটি। অন্যদিকে, নথিভূক্তহীন জনসংখ্যা ১১০ কোটি। অর্থাত্, মোট জনসংখ্যা দাঁড়ায় ৮৭০ কোটি(নথিভূক্ত জনসংখ্যা ৭৬০ কোটি + নথিভূক্তহীন জনসংখ্যা ১১০ কোটি)। রাষ্ট্রসংঘের হিসেব অনুসারে পৃথিবীতে জনসংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি হচ্ছে , তাতে ২১০০ সালে ৭৬০ কোটির মানুষ ১১০০ কোটিতে গিয়ে দাঁড়াবে। সেই সঙ্গে বাড়বে এই নথিভূক্তহীনদের সংখ্যাও।

মূলত, এশিয়া ও আফ্রিকাতেই এই নথিভূক্তহীন মানুষের বাস। ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্থান সহ পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে এই সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে, আফ্রিকাজুড়েই রয়েছে এই সমস্যা। রাষ্ট্রসংঘের তরফে বলা হয়েছে, এখনই এশিয়া ও আফ্রিকার স্বাধীন দেশগুলির প্রশাসন সতর্ক না হলে, বিপদ বাড়বে ক্রমাগত। কারণ নথিভূক্তহীন হওয়ার কারণে সেখানে জন্ম নেওয়া শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্য কোনওটারই যোগান দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে সেখানে থেকে অনেক সময়ই ছড়িয়ে পড়ছে মহামারী। পরবর্তীতে সেখান থেকে অনেকেই গিয়ে নাম লেখাচ্ছে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে।

.