ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার অভিযোগ থেকে ইউনিয়ন কার্বাইড এবং তাঁর প্রাক্তন চেয়ারম্যান ওয়ারেন অ্যান্ডারসনকে রেহাই দিল এক মার্কিন আদালত। দুর্ঘটনার পরবর্তী পরিবেশ দূষণের জন্য বর্তমান সংস্থাটির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কোনও দায়িত্ব নেই বলে জানিয়েছে ম্যানহাটনের ওই স্থানীয় আদালত। এই রায়ের ফলে বড়সড় ধাক্কা খেল ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলির আন্দোলন।
ইতিহাসের সবচাইতে বড় শিল্প দুর্ঘটনা। উনিশ চুরাশির সেই ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণের দাবি ফের ধাক্কা খেল মার্কিন আদালতের রায়ে। রাসায়নিক বর্জ্য থেকে ছড়ানো দূষণের জন্য আগের ইউনিয়ন কার্বাইডের প্রাক্তন ভারতীয় শাখাটিই দায়ী বলে জানিয়েছে আদালত। ফলে রেহাই দেওয়া হয়েছে মূল সংস্থা ইউনিয়ন কার্বাইড কর্পোরেশন এবং তাঁর প্রাক্তন চেয়ারম্যান ওয়ারেন অ্যান্ডারসনকে। যদিও এই রায়ে হতাশ হতে রাজি নন ক্ষতিপূরণের দাবিতে আন্দোলনকারীরা।
১৯৩৪ সালে মার্কিন কোম্পানি ইউনিয়ন কার্বাইড কর্পোরেশন ভারতে প্রথমবার তাদের শাখা চালু করে। ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেড নামে ওই শাখার মোট ১৪টি ডিভিশনে নিযুক্ত হন প্রায় ৯,০০০ কর্মী। ১৯৮৪ সালে যখন সংস্থার ভূপাল ইউনিট থেকে রাতের অন্ধকারে ছড়িয়ে পড়ে বিষাক্ত `মিক` গ্যাস। মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় ভোপাল পুর নিগমের ৫৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৬টিতে বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাব পড়ে।সেই সময় ভোপাল শহরের জনসংখ্যা ছিল ৮,৯৪, ৫৪৯। যার মধ্যে বিষাক্ত গ্যাস প্রভাবিত এলাকারই বাসিন্দা ছিলেন ৫,৫৯,৮৩৫ জন।
গ্যাস দুর্ঘটনা এবং তাঁর পরবর্তী দূষণ সংক্রান্ত ক্ষতিপূরণের জন্য এপর্যন্ত মোট ১০,২৯,৫১৭ মামলা দায়ের হয়েছে। যার মধ্যে ৪,৫৫,১৫১টি মামলা খারিজ হয়ে যায়। চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৫,৭৩,৯২০টি মামলায় কিছুটা হলেও ক্ষতিপূরণ মিলেছে। কিন্তু বাকি ১১,৫৮৭টি ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ পাওয়া এখনও বাকি। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন আদালতের রায় সেই ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব থেকেই রেহাই দিল মূল মার্কিন সংস্থাটিকে।
ভোপাল কাণ্ড থেকে ইউনিয়ন কার্বাইডকে মুক্তি মার্কিন আদালতের
