নন্দীগ্রাম কাণ্ড: সিবিআই রিপোর্টে ক্লিনচিট বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে
নন্দীগ্রাম নিয়ে সিবিআই রিপোর্টে বিড়ম্বনা বাড়ল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সিবিআই রিপোর্ট এসেছে মহাকরণে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, নন্দীগ্রামে গুলি চালানোর ঘটনায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই।
নন্দীগ্রাম নিয়ে সিবিআই রিপোর্টে বিড়ম্বনা বাড়ল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সিবিআই রিপোর্ট এসেছে মহাকরণে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, নন্দীগ্রামে গুলি চালানোর ঘটনায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই।
নন্দীগ্রাম কাণ্ডের তদন্তে নেমে প্রথমে প্রশাসন ও পুলিসের বারো জন কর্তার বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করে সিবিআই। সুপারিশে অসন্তুষ্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার সিবিআইকে, ঘটনায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কী ভূমিকা ছিল তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয়।
দু হাজার সাতের চোদ্দই মার্চ নন্দীগ্রামে গুলি চালায় পুলিস। গুলিতে মৃত্যু হয় চোদ্দ জনের। তিনদিন পরে সতেরোই মার্চ, কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্ত করে, পুলিস প্রশাসনের বারো জন কর্তার বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করে সিবিআই।
সিবিআইয়ের প্রথম রিপোর্টে কোথাও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নাম উল্লেখ ছিল না। ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে গুলি চালানোর ঘটনায়, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কী ভূমিকা ছিল তা খতিয়ে দেখার কথা বলে সিবিআইকে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা রাজ্য সরকারকে জানিয়েছে, নন্দীগ্রামে গুলি চালানোর ঘটনায় তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে তেমন কোনও সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই।
দু হাজার সাতের চোদ্দই মার্চের ঘটনায় ভাঙাবেড়ায় এগারো জন ও অধিকারীপাড়ায় তিনজন মারা যান। সেদিন ভাঙাবেড়ায় ছিলেন পশ্চিমাঞ্চলের তত্কালীন আইজি অরুণ গুপ্ত, জেলার পুলিস সুপার গঞ্জি শ্রীনিবাসন, অতিরিক্ত পুলিস সুপার তণ্ময় রায়চৌধুরীসহ আরও অনেকে। সিবিআই প্রথম দুজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের সুপারিশ করে। সেদিন অধিকারীপাড়ায় ছিলেন দুই আইপিএস অফিসার সত্যজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাশিস বড়াল এবং নন্দীগ্রাম থানার তত্কালীন ওসি শেখর রায়। সিবিআই এই তিনজনের বিরুদ্ধে বিনা প্ররোচনায় গুলি চালানোর জন্য চার্জগঠনের অনুমতি চায়।
মেদিনীপুর রেঞ্জের তত্কালীন ডিআইজি রমেশবাবু সেদিন তেখালি ফাঁড়িতে বসে দুজায়গায় অপারেশন নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্তের কথা বলে সিবিআই।
পূর্ব মেদিনীপুরের তত্কালীন জেলা শাসক অনুপ আগরওয়ালসহ আরও পাঁচ প্রশাসনিক কর্তার বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্তের সুপারিশ করে তারা।
দু হাজার বারোর মে মাসে সিবিআই প্রথম রাজ্য সরকারের কাছে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করে তিন পুলিস কর্তার বিরুদ্ধে চার্জগঠনের অনুমতি চায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার প্রাথমিকভাবে তা মানেনি। সরকারের তরফে বলা হয় ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন এমন অনেকের নাম সিবিআই রিপোর্ট থেকে বাদ পড়েছে। তার মধ্যে প্রধান নাম বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সরকারের অভিযোগ খতিয়ে দেখে সিবিআই। চলতি বছরের মে মাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তারা জানিয়েছে, রাজ্যের প্রস্তাবমতো বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখেছে। কিন্তু নন্দীগ্রামে গুলি চালানোর নির্দেশ যে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দিয়েছিলেন এমন কোনও প্রমাণ তারা পায়নি। তাই পুরনো তদন্ত রিপোর্টটিতেই সিলমোহর দিচ্ছে সিবিআই।