ভূমিকম্পের রেশ পশ্চিমবঙ্গে

ভূমিকম্প যে এই রাজ্য আগে দেখেনি, তেমনটা নয়। কিন্তুভূমিকম্পের মার কাকে বলে, তা খবরে পড়ে, টিভিতে দেখা জানা-বোঝাটাই ছিল এতদিনের অভ্যাস। গত রবিবারের বিপর্যয় আচমকাই সেই পুরনো চেনা ছন্দে বাদ সেধেছে। মুহূর্তে অভ্যাস পাল্টে গিয়েছে গড়পড়তা বাঙালির। মিনিট খানেক, মিনিট দুয়েকের ভূমিকম্প নাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছে পরিচিত অভ্যাসের সেই ভিত।

Updated By: Sep 27, 2011, 11:47 PM IST

ভূমিকম্প যে এই রাজ্য আগে দেখেনি, তেমনটা নয়। কিন্তু ভূমিকম্পের মার কাকে বলে, তা খবরে পড়ে, টিভিতে দেখা জানা-বোঝাটাই ছিল এতদিনের অভ্যাস। গত রবিবারের বিপর্যয় আচমকাই সেই পুরনো চেনা ছন্দে বাদ সেধেছে। মুহূর্তে অভ্যাস পাল্টে গিয়েছে গড়পড়তা বাঙালির। মিনিট খানেক, মিনিট দুয়েকের ভূমিকম্প নাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছে পরিচিত অভ্যাসের সেই ভিত। সুদূর দার্জিলিঙ থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা--বাদ ছিল না রাজ্যের প্রায় কোনো প্রান্তই। সন্ধে ছটা এগারোয় ঘটনার সুত্রপাত। পরপরই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর যেন স্রোতের মতো আসতে শুরু করে। তারপর যতো দিন গড়িয়েছে, ততো স্পষ্ট হয়েছে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি আর হতাহতের সূচক। এমন কোনো জেলা নেই, যেখানে আর্থিক ক্ষতি বা প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে উত্তরবঙ্গে। শিলিগুড়ি, কোচবিহার, দার্জিলিঙ, জলপাইগুড়ি, মালদহের বিভিন্ন এলাকায় চোখে পড়েছে ভাঙা বা ফাটল ধরা বাড়ির ক্ষত. বিপর্যয়ের পরপরই পাহাড়ে নামে ধস,বেশ কয়েক দিন উত্তরবঙ্গের বহু এলাকায় ছিল না বিদ্যুত্, পানীয় জলও।

ঘটনায় হতাহতের সংখ্যাও বহু. ফলে এই মানসিক আর আর্থিক ক্ষতির সামনে দাঁড়িয়ে বহু মানুষের দুর্গাপুজোই এখন বিষাদঘন। যার সূচনা বিশ্বকর্মা পুজোয়। বিপর্যয়ের পর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রশাসনিক তত্পরতা শুরু হয়ে গিয়েছিল সব মহলে। সেই রাতেই তড়িঘড়ি শিলিগুড়ি ছুটে যান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরে উত্তরবঙ্গ সফর করেন মুখ্যমন্ত্রীও। যান পাহাড়ের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায়। ভূমিকম্প কবলিত এলাকাগুলিতে যান রাজ্যের বাম সাংসদ এবং বিধায়করাও। কথা বলেছেন পীড়িতদের সঙ্গে।কলকাতা থেকে য়াঁরা বেড়াতে গিয়েছিলেন পাহাড়ের দিকে, তাঁদের অনেকেই ফিরে এসে জানিয়েছেন বিভীষিকাময় সেই কয়েক মুহূর্ত আর তার পরের দুর্ভোগের কথা. বেঁচে ফেরার রোমাঞ্চকর কাহিনি. যাঁরা পুজোয় পাহাড়ে বেড়াতে যাবেন বলে আয়োজন করে রেখেছিলেন ওই পর্যটকদের কথা শুনে আর সংবাদমাধ্যমে নজর রেখে, তাঁদের অনেকেই বাতিল করেছেন বেড়ানোর কর্মসূচি। ফলে সেখানেও আরেক প্রস্থ ক্ষতি। ক্ষতি পর্যটনশিল্পে। ভূমিকম্পের ত্রাস আর বিপর্যের এই পাহাড়প্রমাণ তালিকা সরিয়ে রেখে মানুষ যখন আস্তে আস্তে আবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তখন সোমবার আবার ধসের শিকার হল দার্জিলিং। প্রবল বৃষ্টিতে সকালে লেবং রোডে ধস নামায় মোট টাকবর, বদং তাং, সিম তাং, ফাটকবর, ফুড সিলিং ও জিং-এর সাতটি চা বাগানের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ধস নামায় হ্যাপি ভ্যালি চা বাগান চত্বরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি বাড়িও। তবে হতাহতের কোনও খবর মেলেনি। ধসে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এ গুলির মধ্যে রয়েছে দার্জিলিং গর্ভমেন্ট কলেজ, ভিভিএ স্কুল, নর্থ পয়েন্ট স্কুল, এনপি কলেজ।

.