সুশান্তের মৃত্যুতে সন্দীপ সিংয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন, মুখ খুললেন অভিনেতার বন্ধু
সুশান্তের সঙ্গে হওয়া তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটও প্রকাশ্যে আনেন সন্দীপ সিং।
নিজস্ব প্রতিবেদন : সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু আত্মহত্যা নাকি খুন? এপ্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি। ঘটনার তদন্ত করছে CBI। এদিকে সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে প্রযোজক সন্দীপ এস সিং-এর ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে। অনেকেই সন্দীপ সিংকে ঘটনার 'মাস্টারমাইন্ড' বলেও দাবি করেছেন। সন্দীপ সিংয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিনেতার বন্ধু স্মিতা পারিখ। এই পরিস্থিতিতে অবশেষে মুখ খুললেন সন্দীপ সিং।
১৪ জুন ঠিক কী ঘটেছিল, তা সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন সন্দীপ সিং। সন্দীপের কথায়, ''সুশান্তের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব ছিল ২০১১ সাল থেকে। হ্যাঁ, একথা ঠিক আমার সঙ্গে গত ১ বছর সুশান্তের যোগাযোগ ছিল না। তবে সুশান্তের মৃত্যুর কথা আমি আর পাঁচজনের মতোই বিশ্বাস করতে পারেননি। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছে তা জানতে ছুটে যাই। মহেশ শেঠিকে ফোন করি, মহেশের গাড়িতেই সুশান্তের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলাম। আমাকেও পুলিস প্রথমে ফ্ল্যাটে ঢুকতে অনুমতি দেয়নি, আমরা বাইরেই অপেক্ষা করছিলাম। সুশান্তের দেহ যখন নামানো হল, আমি আর মহেশ নিচে ছিলাম। দেহ কুপার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরে পুলিসের অনুমতি নিয়ে আমরা সুশান্তের ফ্ল্যাটের ভিতরে বসেছিলাম। কুপার হাসপাতাল থেকে পুলিস ফোন করে পরিচয়পত্র নিয়ে যেতে বলে। মীতু দিদি পরিচয়পত্র বের করেন, তারপর আমি দিদিকে নিয়ে হাসপাতালে যাই।''
আরও পড়ুন-''ভাই সৌভিককে দিয়ে মাদক আনাতাম'' NCB- র জেরায় স্বীকার রিয়ার!
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সন্দীপ সিং প্রশ্ন তোলেন, ''১৪ জুন আমার কি ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ করা, প্রতিক্রিয়া দেওয়া উচিত ছিল? আমি কীভাবে তাকাবো, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললে চোখে জল নিয়ে কথা বলবো, এসব ভেবে কাজ করা উচিত ছিল? ''
সন্দীপের ইনস্টাগ্রামে লেখেন, ''১৪ ই জুন খবর শুনে আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। আমি ওখানে ছুটে গিয়ে দেখি মীতু দিদি ছাড়া আর কেউ নেই। আমি হতবাক হয়ে যাই। আমি এখন ভাবছি, ওই কঠিন সময়ে ওর (সুশান্তের) বোনের পাশে দাঁড়িয়ে ভুল করেছি? আমার কি অপেক্ষা করা উচিত ছিল, যে অন্যরা আসুক, তারপর যাবো।''
আরো পড়ুন-AIIMS-এর ফরেন্সিক টিমের উপস্থিতিতে কুপার হাসপাতালের চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে CBI!
এখানেই শেষ নয়, তাঁকে নিয়ে যে সমস্ত প্রশ্ন উঠছে তার জবাব হিসাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে সুশান্তের সঙ্গে হওয়া হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট প্রকাশ্যে এনেছেন সন্দীপ সিং। ক্যাপশানে লিখেছেন, ''দুঃখিত ভাই, আমার নীরবতা আমার ২০ বছরের ইমেজ ও পরিবারকে টুকরো টুকরো করেছে। আমি জানতাম না যে আজকের সময়ে বন্ধুত্বের জন্য একটি শংসাপত্র প্রয়োজন। আজ আমি আমাদের ব্যক্তিগত চ্যাটগুলি সর্বজনীন করে দিচ্ছি। কারণ, এটিই আমাদের বন্ধুত্বের শেষ প্রমাণ দেবে।''
সন্দীপ সুশান্তের সঙ্গে ২০১৬-র ৯ নভেম্বর ও ২০১৮-র ১৪ জুন হওয়া বেশকিছু কথোপকথন প্রকাশ করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে 'কেদারনাথ' দেখতে যাওয়া নিয়ে তাঁর সঙ্গে সুশান্তের কথা হয়েছে। একটি চ্যাটে সুশান্ত সন্দীপকে লোনাওয়ালা রিসর্টেও আড্ডা দেওয়া ও সময় কাটানোর জন্য ডেকেছেন।
সন্দীপ সিং সুশান্তের মৃত্যুর পর তাঁর মীতু দিদি ও জামাইবাবুর সঙ্গে হওয়া কিছু হোয়াটসঅ্যাপও প্রকাশ করেছেন। ক্যাপশানে তিনি লিখেছেন, ''সবাই বলেছেন, সুশান্তের পরিবার আমায় চেনে না। হ্যাঁ, সেটা ঠিক। আমার ওর পরিবারের সঙ্গে কোনওদিনও আলাপ হয়নি। একজন শোকাহত বোনের পাশে আমি দাঁড়িয়েছি, এটাই আমার দোষ? প্রশ্ন উঠছে কেন আমি অ্যাম্বুলেন্স চালকের সঙ্গে কথা বলেছি? সেটাও আমি প্রকাশ্যে আনছি।''
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সন্দীপ সিং বলেছেন, ''পুলিসের তরফে আমার নম্বর অ্যাম্বুলেন্স চালককে দেওয়া হয়েছিল। অ্যাম্বুলেন্স চালক আমার কাছে টাকা চাইতে ফোন করেছিলেন। আমি বলি, টাকা পেয়ে যাবেন। পরে আমার সহকারী ওনাকে টাকা দিয়ে দেয়। আমি কি এই পরিস্থিতিতে ওর পরিবার দিদিদের কাছে টাকা চাইতে যেতাম? সেটা কী ঠিক হতো? ''
আরও পড়ুন-'হারামখোর' বলে আক্রমণ, শিবেসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতকে পাল্টা দিলেন কঙ্গনা