মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরও হাসপাতালে করোনা-আবহে 'অবহেলিত' অন্যান্য রোগীরা
সেকারণে করোনা চিকিত্সা হাসপাতালগুলিকে আলাদা করে দিয়েছেন তিনি। তারপরও রাজ্যে বেশি কিছু দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: করোনা মোকাবিলায় তত্পর রাজ্য। কিন্তু তার মাঝে যাতে অন্যান্য রোগীরা অবহেলিত না হন, তার দিকেও কড়া নজর রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিকিত্সক, হাসপাতালগুলিকে বারবার আবেদন জানিয়েছেন, অন্যান্য রোগীদের দিকে যথাযথ খেয়াল রাখতে। আর সেকারণে করোনা চিকিত্সা হাসপাতালগুলিকে আলাদা করে দিয়েছেন তিনি। তারপরও রাজ্যে বেশি কিছু দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।
বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতগুলির অ্যাম্বুলেন্সের আসা যাওয়া বেড়ে গিয়েছে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে। জ্বর বা শ্বাসকষ্ট থাকলেই আনা হচ্ছে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে। আর তারপরই উঠছে চিকিৎসা না পাওয়ার নানা অভিযোগ।
ঘটনা ১
সন্তোষপুরের বাসিন্দা ৮৫ বছরের গোলাপরানি দে-কে নিয়ে রবিবার আট থেকে ন'টি হাসপাতাল ঘুরে বেড়িয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। অবশেষে শ্বাসকষ্ট চরমে পৌঁছয়। এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু সোমবার দিনই তাঁকে পাঠিয়ে দেয়া হয় এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে তিনটা নাগাদ মৃত্যু হয় গোলাপরানির। পরিবারের অভিযোগ, বিনা চিকিৎসায় পড়ে থেকে মৃত্যু হয়েছে তাদের আত্মীয়ের।
কোন এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, এবার চিহ্নিত করবে স্বাস্থ্য দফতরের নতুন সেল
ঘটনা ২
অন্যদিকে, বরানগরের বাসিন্দা সুজাতা কুণ্ডু তাঁর মাকে নিয়ে হন্যে হয়ে একাধিক সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে বেড়িয়েছেন। অবশেষে মা-কে বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি করান তিনি। তাঁরও অভিযোগ, বছর ষাটেকের মা বিনা চিকিত্সায় হাসপাতালের বেডে পড়ে রয়েছেন। এক্ষেত্রে তাঁরা হাসপাতাল সুপারের কাছে অভিযোগও জানান। তাঁদের দাবি, সব শুনে ক্ষমা চেয়ে নেন হাসপাতাল সুপার।
ঘটনা ৩
বাঁশদ্রোণীর এক বাসিন্দা তাঁর কাকিমাকে নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছেন বিভিন্ন হাসপাতাল। অ্যাপোলো হাসপাতাল ফিরিয়ে দিয়েছে। তাঁরা জানিয়ে দেয়, নিউমোনিয়া এবং জ্বরে আক্রান্ত কোনও রোগী ভর্তি নেবে না । এরপর তাঁরাও এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল যান।
ঘটনা ৪
মালদা থেকে কলকাতায় এসে 20 ঘণ্টা রাস্তায় ঘুরে বেরিয়েছেন, মালদার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা অসিত দত্ত। বছর বাষট্টির ওই ব্যক্তি চার দিন আগে পড়ে যান। মালদার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরিবারের লোক কলকাতায় নিয়ে আসেন। কলকাতায় বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে বেরান তিনি।
সব মিলিয়ে বিক্ষিপ্ত বেশ কয়েকটি ঘটনা উঠে আসছে, যেখানে রোগীরা সঠিক চিকিত্সা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।