স্রেফ বাংলাই বঞ্চনার শিকার, নাম বদল নিয়ে বিজেপিকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর
বাংলার মানুষ খুব শীঘ্রই একটি ইতিবাচক উত্তর চায়, কেন্দ্রকে তোপ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের...
নিজস্ব প্রতিবেদন: এলাহবাদের নাম বদলে হয়েছে প্রয়াগরাজ্য। ফৈজাবাদের নাম বদল করে রাখা হয়েছে অযোধ্যা। ইতিমধ্যেই আন্দামান ও নিকোবার দীপের নাম বদলে শহিদ ও স্বরাজ করার আর্জিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছে। সেটাও হয়ত হয়ে যাবে। কেবল আটকে থাকছে বাংলাই! রাজ্য সরকার চাইলেও পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে বাংলা করতে দিচ্ছে না কেন্দ্র, বিজেপিকে নিশানা করে তোপ দাগলেন মমত বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- ঋতব্রতর পর এবার কৌস্তভ ও সৌম্যজিত্, শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে সাসপেন্ড ২ সিপিএম নেতা
মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির দ্বিচারিতার কথা উল্লেখ করে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি লিখেছেন, ক্ষমতায় আসার পর থেকই অনেক ঐতিহাসিক সৌধের নাম বদল করেছে বিজেপি। নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতেই এটা করছে তাঁরা।
স্বাধীনতার পর অনেক রাজ্য এবং শহরের নামও বদল হয়েছে। পুদুচেরি (পণ্ডিচেরি), চেন্নাই (মাদ্রাস), মুম্বই (বোম্বে), বেঙ্গালুরু (বেঙ্গালোর) সহ আরও একাধিক শহরের নাম পরিবর্তন হয়েছে। এবং এই সবকটি রাজ্যের-ই নাম পরিবর্তন করা হয়েছে সেই অঞ্চলের মানুষের ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখেই। একই সঙ্গে ভাষাকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলার বেলাতেই দ্বিচারিতা করা হচ্ছে।
ওই পোস্টে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবিস্তারে জানিয়েছেন, আমাদের মাতৃভাষা এবং রাজ্যের মানুষের ভাবাবেগকে মাথায় রেখেই বাংলা নামের প্রস্তাব করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের নাম বদল নিয়ে বিধানসভায় সর্বসম্মতিতে বিল পাশ করিয়েছি আমরা। এরপর কেন্দ্রের কাছে সেটা পাঠালেও তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
কেন্দ্র জানায়, ইংরাজিতে বেঙ্গল, বাংলায় বাংলা এবং হিন্দিতে বঙ্গাল না করে তিনটি ভাষার ক্ষেত্রেই একটি নাম করা হোক। সেই মতো আমরা পশ্চিমবঙ্গের নাম বাংলা করার কথা বলি। এবারও সর্বসম্মতিতে গৃহীত হয় সেই প্রস্তাব। তারপর পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন করে বাংলা করে দেওয়ার সর্বজনবিদিত রেজুলেশন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে পাঠানো হলেও তার কোনও ইতিবাচক উত্তর আসেনি।
আরও পড়ুন- ‘শুভেন্দুর জন্যই তৃণমূল আমাকে নিচ্ছে না’
এখানেই শেষ নয়, নাম বদল নিয়ে পঞ্জাবের উদাহরণও টেনে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে বাংলা হলে তা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কেও কোনও প্রভাব ফেলবে না। তিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, পাকিস্তান এবং ভারত, দুই দেশেই পঞ্জাব নামের জায়গা রয়েছে। তাই বাংলা নামের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গেও কোনও সমস্যা হবে না বলেই মত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। কবিগুরুকে স্মরণ করে তিনি লিখেছেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীতই লিখেছেন। আমরা ভারত, বাংলাদেশ এবং বাংলাকে একই রকমভাবে ভালবাসি। তাই এক্ষেত্রেও কোনও বিভেদ তৈরি করা ঠিক নয়।
সবশেষে সরাসরি বিজেপি-কে বিঁধে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, যে দলের এই রাজ্যে কোনও ভিত্তিই নেই তাঁরা রাজ্যের মানুষের মতামতকে সম্মান জানাচ্ছে না। তাঁর প্রশ্ন, এতে কি আদৌ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো সুরক্ষিত থাকছে? বাংলার মানুষ খুব শীঘ্রই একটি ইতিবাচক উত্তর চায়, কেন্দ্রকে এভাবেই তোপ দেগেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।