পিছিয়ে পড়াদের তোয়াজ করছি, দাবি ফিরহাদের, দেশের জন্য ক্ষতিকর, পাল্টা মুকুলের
অপরাধী মুসলিম হলেও যাতে ছাড় না পায় তা নিশ্চিত করতে হবে, চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে।

নিজস্ব প্রতিবেদন: ধর্মীয় রং না দেখে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধপত্র পাঠিয়েছেন শহরের ৫০ জন বিশিষ্ট মুসলিম নাগরিক। চিঠির নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে মনে করছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ বাকিম। তাঁর সাফ কথা, কোনও সম্প্রদায়কে তোয়াজ করে না রাজ্য সরকার। সাম্প্রদায়িক সুড়সুড়ি দেওয়ার জন্য নানাভাবে প্রচার করছে বিজেপি। চিঠির সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন মুকুল রায়।
নীলরতন সরকার হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারকে মারধর ও ঊষসী সেনগুপ্তর নিগ্রহের ঘটনায় রাজ্য সরকারে বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতির অভিযোগ উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিতে লেখা হয়েছে, রাজ্য সরকারকে মুসলিমদের তোষণ করছে, এমন একটা ধারণা তৈরি হয়েছে জনমানসে। অপরাধী মুসলিম হলেও যাতে ছাড় না পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। এর পিছনে বিজেপি কলকাটি নেড়েছে বলে দাবি কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের।
ফিরহাদের কথায়,''সবটা না জেনে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কোনও সম্প্রদায়কে তোয়াজ করে না রাজ্য সরকার। সাম্প্রদায়িক সুড়সুড়ি দেওয়ার জন্য নানাভাবে প্রচার করছে বিজেপি। রাজ্যে পিছিয়ে থাকা মানুষকে এগিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে তৃণমূল। আদিবাসী, মুসলিম বা তপশিলি জাতির উন্নয়ন করা হচ্ছে''। মুসলিম নাগরিকদের চিঠি পাঠানোর ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে দাবি মুকুল রায়ের। তাঁর কথায়,''এটা সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে জানতে পারলাম''।
একইসঙ্গে দক্ষিণশ্বর ও তারাপীঠের উন্নয়নের কথাও তুলে ধরেন ফিরহাদ। বলেন,''দক্ষিণশ্বরে ওয়ার্ল্ডক্লাস ফ্লাইওভার তৈরি হয়েছে। তোষণ করলে তারকেশ্বরকে সাজালেন কেন? তারাপীঠকে সাজালেন কেন? কঙ্কালিতলার নতুন রূপ হল কেন? কালীঘাটের মন্দির সংস্কারে নতুন পরিকল্পনা করা হয়েছে। গঙ্গাসাগর নতুন রূপ পেয়েছে। তার সঙ্গে ফুরফুরশরিফও হয়েছে। পিছিয়ে থাকা মানুষকে তোয়াজ করা হয়েছে, সে কারণে আদিবাসী মানুষ যারা পিঁপড়ের ডিম খেত, তাদের অনাহারে মৃত্যু আটকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটা তোয়াজ নয়, সর্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাসী আমরা। নজরুল, রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ পড়ে বড় হয়েছি। অপপ্রচার করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের প্রতিবাদ করব''।
মমতার বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতির অভিযোগ করে আসছে গেরুয়া শিবির। বস্তুত গত লোকসভা ভোটে মেরুকরণের ফায়দা তুলেছে তারা। এরাজ্যে প্রথমবার ১৮টি আসন জিতেছে বিজেপি। মুসলিম নাগরিকদের চিঠিতে তাদের অভিযোগ মান্যতা পেল বলেই মত মুকুল রায়ের। জি ২৪ ঘণ্টাকে বিজেপি নেতা বলেন,''আমরা তো প্রথম থেকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোষণের কথা বলে আসছি। এটা রাজ্যের পক্ষে তো বটেই, দেশের পক্ষেও খারাপ। কারণ ভারত বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের দেশ''।
আরও পড়ুন- সুখবর, মোদী সরকারের সিদ্ধান্তে আরও সস্তা ইলেকট্রনিক গাড়ি