চলে গেলেন বাংলা থিয়েটারের মঞ্চস্থাপত্যের নিরলস কারিগর খালেদ চৌধুরি
চলে গেলেন বাংলা থিয়েটারের এক লড়াকু যোদ্ধা। মঞ্চস্থাপত্যের নিরলস কারিগর। থিয়েটার মহলের সবার প্রিয় খালেদ চৌধুরী। বয়স হয়েছিল চুরানব্বই। শেষ ইচ্ছেটাও ছিল তাঁর মতোই সহজ,সরল, অনাড়ম্বর।
চলে গেলেন বাংলা থিয়েটারের এক লড়াকু যোদ্ধা। মঞ্চস্থাপত্যের নিরলস কারিগর। থিয়েটার মহলের সবার প্রিয় খালেদ চৌধুরী। বয়স হয়েছিল চুরানব্বই। শেষ ইচ্ছেটাও ছিল তাঁর মতোই সহজ,সরল, অনাড়ম্বর।
ধর্ম বিশ্বাসী নই। নাস্তিকতা প্রচার করি না। কোনও রকম কুসংস্কার নেই। বিজ্ঞান মানসিকতায় বিশ্বাসী। যা বিশ্বাস করি, অথবা যা মুখে বলি তাই পালন করি।
এককথায় মানুষটা ছিলেন এমনটাই। থিয়েটার মহলে সকলের খালেদ দা। বাংলা থিয়েটারের মঞ্চ সজ্জার ভাঙা গড়া নিয়েই ছিল নিরলস চর্চা। বয়স গড়িয়েছিল চুরানব্বইয়ে।বয়সের ভারে কাবু হননি। থিয়েটারের আলোচনা এলেই নিমেষে টগবগে তরুণ চুরানব্বইয়ের খালেদ দা।
জন্ম ১৯১৯ সালের বিশে ডিসেম্বর অসমের করিমগ়ঞ্জে। দাদুর দেওয়া প্রথম নাম চিরকুমার। বাবার দেওয়া নাম চিররঞ্জন দত্ত চৌধুরী। উনিশশো তেতাল্লিশে নিজেই সে নাম পাল্টে ফেললেন। চিররঞ্জন দত্ত চৌধুরী থেকে হয়ে গেলেন সকলের খালেদ চৌধুরী। থিয়েটারের পথচলা শুরু ভারতীয় গণনাট্য সংঘ বা আইপিটিএ দিয়ে। সালটা উনিশশো পঁয়তাল্লিশ। ছবি আঁকার সহজাত দক্ষতাকে কাজে লাগালেন থিয়েটারের মঞ্চসজ্জায়। তিপান্ন সালে যোগ দেন বহুরূপী নাট্য দলে। রক্তকরবীর অন্যন্য মঞ্চসজ্জা তারই সৃজন। এরপর পুতুল খেলা, পাগলা ঘোড়া, ডাকঘর, গান্ধার সহ বহুরূপীর একাধিক নাটকের মঞ্চস্থাপত্যর পরিকল্পনা করেছেন তিনি।
ষাটের দশক থেকে শুরু করেন লোকসঙ্গীত ও লোকগাথা নিয়ে গবেষণা। থিয়েটার নিয়ে তাঁর প্রকাশিত বই থিয়েটার শিল্প ভাবনা,স্মৃতির সরণী,লোকসঙ্গীতের প্রাসঙ্গিকতা ও অন্যান্য প্রবন্ধ। বাংলা থিয়েটার আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা খালেদ চৌধুরীর প্রয়াণ নিঃসন্দেহে এক নক্ষত্রপতন। বাংলা থিয়েটার হারাল তার এক লড়াকু যোদ্ধাকে। পরিবর্তনের এই সময়েও যিনি ছিলেন বড়ই এক কথার মানুষ।