মন্ত্রী থেকে সাংসদ, গেরুয়া শিবিরে বাড়ছে ভিড়, ভয়ে কাঁপছে শাসকশিবির
প্রথমে গিয়েছিলেন মন্ত্রী। এ বার গেলেন সাংসদ। লাইনে আর কারা আছেন তা ভাবতে গিয়ে রীতিমতো কাঁপুনি ধরছে শাসকশিবিরে। কারণ নেতাদের মধ্যে ক্রমশ চড়া হচ্ছে বিদ্রোহের সুর। প্রকাশ্যেই তারা খুলে দিচ্ছেন মুখের আগল। কেউ বা আবার বাজছেন বেসুরে।
রিলে রেসের ব্যাটনটা প্রথম হাতে নিয়েছিলেন মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর। মন্ত্রীর চেয়ার ছেড়ে সটান গিয়ে হাজির হয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরে। মঞ্জুল ঠাকুরের হাত থেকে ব্যাটনটা তুলে নিলেন সৃঞ্জয় বসু। জামিন পাওয়ার পরের দিনই তৃণমূল ছাড়লেন। এখনও বিজেপিতে যাননি বটে কিন্তু বিজেপি সূত্র অন্য কথা বলছে। সৃঞ্জয়ের বিদায়ের দিনেই তৃণমূলের ঘর থেকে লকেট ছিনতাই করে নিয়েছে বিজেপি।
সারদা-কাণ্ডে দোষীদের শাস্তি চেয়ে দলকে নিজের মনোভাব বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুগত বসু। সৃঞ্জয় বসুর দল ছাড়ার দিনেই তিনি জানিয়ে দিলেন নিজের বিশ্বাসে এখনও অনড়। বলে দিলেন, তৃণমূলে ঢুকছে দুবৃত্তরা। দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলাদের তালিকায় বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। আর মুখ খোলার পরই তিনি মুকুল রায়ের পাশে। এখানেই তালিকার শেষ নয়। তৃণমূলে এখন নানা সুর।
প্রকাশ্যেই নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী।
নাম না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্র চালানোর অভিযোগ করেছেন আরেক সাংসদ দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুভবুদ্ধিকে দূরে সরিয়ে রেখে তৃণমূলে আছেন বলে কবুল করেছেন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে।
দলের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন সিউড়ির বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ।
একই পথে হেঁটে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই মুখ খুলেছেন পূর্বস্থলী উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়।
মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে মদত দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বালির তৃণমূল বিধায়ক সুলতান সিং।
ফেসবুকে দল ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে পরপর তোপ দাগছেন সাংসদ অনুপম হাজরা।
আছে আরও। যাদবপুর-কাণ্ডে বেসুরো গেয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বৃত্তিমূলক শিক্ষা সংসদের সভাপতি রুদ্রনীল ঘোষ। দিন যত গড়াবে লম্বা তালিকাটা আরও লম্বা হবে বলে আশঙ্কা তৃণমূল শিবিরেই। দলের নেতাদের গেরুয়া-গমনে বাঁধ দিতে মুখ্যমন্ত্রী খোলা মনে কথা বলার কথা বলছেন। কাজ হবে কিনা তা নিয়ে অবশ্য নিশ্চিত নন কেউ।