'রাজ্যে শাসকের আইন চলছে', হাইকোর্টে কড়া রিপোর্ট মানবাধিকার কমিশনের
পাল্টা সুর চড়ালেন মুখ্য়মন্ত্রী।
নিজস্ব প্রতিবেদন: 'আইনের শাসন নয়, রাজ্যে শাসকের আইন চলছে'! ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ খতিয়ে দেখে হাইকোর্টে কড়া রিপোর্ট দিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কমিশনের মতে, ভোটে জেতার শাসকদলের নেতা-কর্মীর বিরোধীদের উপর 'প্রতিশোধ' নিতে চাইছেন। সেকারণে রাজ্যের সর্বত্র সংগঠিত হিংসার ঘটনা বাড়ছে। পাল্টা সুর চড়ালেন মু্খ্যমন্ত্রী।
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগে সরব বিরোধীরা। জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে হাইকোর্টে। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই রাজ্য সরকারকে ভর্ত্সনা করে বৃহত্তর বেঞ্চ। বিরোধীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য কমিটির গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে। ৩০ জুলাই মুখবন্ধ খামে আদালতে রিপোর্টও জমা দিয়েছে সাত সদস্যের কমিটি।
আরও পড়ুন: নারদা মামলার তদন্তে বাধা! মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে হলফনামা CBI-র
কী বলা হয়েছে রিপোর্টে? জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতে, রাজ্য জুড়ে সংগঠিত কায়দায় ভোট পরবর্তী হিংসায় মদত দিচ্ছে শাসকদলের কর্মী-সমর্থকরাই। নির্বাচনে যে দল হেরে গিয়েছে, সেই দলের সমর্থকদের উপর প্রতিশোধ নিতে চাইছেন তাঁরা। অথচ এই হিংসা প্রতিরোধে কার্যত কোনও পদক্ষেপই করছে না প্রশাসন। প্রশাসনের একাংশ হয় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে, অথবা তাদেরকেই নানাভাবে ব্য়বহার করা হচ্ছে! রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ, রাজ্যে খুন, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, মারধর, ভাঙচুরের মতো অপরাধ কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং প্রতিক্ষেত্রে নিশানা করা হচ্ছে বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের। পুলিস যতগুলি মামলা রুজু করেছে,আর কমিশনে যতগুলি অভিযোগ জমা পড়েছে, দুটির মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে।
আরও পড়ুন: 'ভবানীপুরের একাধিক ওয়ার্ড কোভিডশূন্য', উপনির্বাচন-সওয়াল Mamata-র
রিপোর্টের একেবারে শেষ রবীন্দ্রনাথের কবিতার লাইন উল্লেখ করে কমিশনের অভিযোগ, ২ মে ফল ঘোষণার পর থেকে এ রাজ্যে হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া। রবীন্দ্রনাথের মাটিতে ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে। এমন বহু ঘটনা ঘটেছে যা, এই মাটির সম্মান নষ্ট করেছে। হাইকোর্টে সিবিআই, এমনকী মামলা অন্য রাজ্যে স্থানান্তরের আবেদনও জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
পাল্টা সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, 'কিছু প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে বাংলাকে বদনাম করছে। হারটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। নানারকম চক্রান্ত চলছে'। প্রশ্ন তোলেন, উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। ক'টা কমিশন পাঠিয়েছে? শুনানির আগেই রিপোর্ট ফাঁস করে দিল। আমার হলফনামা দেব'।