খরচ সামলাতে ফের ঋণের পথেই রাজ্য

ভাঁড়ে মা ভবানী! ক্ষমতার প্রথম ৭ মাসেই আর্থিক সংকটে জেরবার রাজ্য সরকার বাধ্য হয়ে আরও একবার খোলা বাজার থেকে বণ্ড বিক্রি করে টাকা ঋণ করল। এবারের ঋণের পরিমাণ ১,৩০০ কোটি টাকা।

Updated By: Dec 22, 2011, 01:52 PM IST

ভাঁড়ে মা ভবানী!
ক্ষমতার প্রথম ৭ মাসেই আর্থিক সংকটে জেরবার রাজ্য সরকার বাধ্য হয়ে আরও একবার খোলা বাজার থেকে বণ্ড বিক্রি করে টাকা ঋণ করল। এবারের ঋণের পরিমাণ ১,৩০০ কোটি টাকা। মঙ্গলবার নিলাম ডেকে ১,৩০০ কোটি টাকার সরকারি বণ্ড বিক্রি হয়। বুধবার এই টাকা রিজার্ভ ব্যাঙ্কে জমা পড়ে গেছে। এবার সরকার প্রয়োজনমতো ওই টাকা তুলে নিতে পারবে।
এই নিয়ে নতুন সরকারের আমলে ১০ বার বন্ড বিক্রি করে ঋণ করা হল। ৭ মাসে এভাবে করা ঋণের পরিমাণ ১৩,৫৫০ কোটি টাকায় পৌঁছল। গত আর্থিক বছরে খোলা বাজার থেকে ঋণের পরিমাণ ছিল ৯,৫০০কোটি টাকা।
নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বাম আমলের শেষ দু`মাসে ৫, ১৭৩ কোটি টাকা ঋণ করা হয়েছিল। অর্থাত্‍ এই আর্থিক বছরে দুই সরকার মিলিয়ে বণ্ড বিক্রি করে ঋণের অঙ্ক দাঁড়াল ১৮, ৭২৩ টাকায়।

রাজ্যে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর শেষ ৫ বারের বণ্ড বিক্রি করে ঋণ নেওয়ার ছবিটা এরকম-
চলতি ডিসেম্বর মাসে দু'বার বণ্ড বিক্রি হয়েছে। একবার ১,৩০০ কোটি, অন্য বার ১,২৫০ কোটি টাকার।
১,০০০ কোটি টাকার বণ্ড বিক্রি হয়েছিল নভেম্বর মাসের ২২ তারিখ।  
অক্টোবরের ১৮ তারিখ বণ্ড বিক্রি করা হয়েছিল ১,৫০০ কোটি টাকার।  
সেপ্টেম্বরেও খোলা বাজার থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ১,৫০০ কোটি টাকা।
আসলে রাজ্যের যা আর্থিক পরিস্থিতি তাতে কোষাগার সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। প্রথম ৭ মাসে কর সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। নতুন কর বসিয়ে কর সংগ্রহের পরিমাণ বাড়ানোর পথেও হাঁটছে না রাজ্য। অন্য দিকে, কেন্দ্রের কাছে বারবার দরবার করেও পাওয়া যাচ্ছে না আর্থিক সাহায্য।

পাশাপাশি 'পপুলিজম'-এর রাজনীতির দায় থেকে ঘোষিত হচ্ছে নিত্যনতুন খরচসাপেক্ষ কর্মসূচি। তাই আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ব্যবধান ক্রমশ বেড়েই চলছে। সরকার বাধ্য হচ্ছে বণ্ড বিক্রি করে খোলা বাজার থেকে ঋণ নিতে।
তবে সম্প্রতি কেন্দ্রের একটি সিদ্ধান্ত কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে রাজ্যকে। স্বল্পসঞ্চয় থেকে ঋণ করার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। তার পরিবর্তে বাড়ানো হয়েছে খোলা বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার পরমাণের উর্ধ্বসীমা। রাজ্যে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই উর্ধ্বসীমা ছিল ১৭,৮২৮ কোটি টাকা। কেন্দ্রের নতুন সিদ্ধান্তে এই উর্ধ্বসীমা আরও ২,৭০০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। যার অর্থ চলতি আর্থিক বছরে ২০, ৫২৮ কোটি টাকা খোলা বাজার থেকে ঋণ করতে পারবে সরকার।
যদিও কেন্দ্রের এই নয়া নির্দেশনামা অনুযায়ী বাকি ৩ মাসে আর মাত্র ১,৮০৫ টাকা এই পথে ঋণ করতে পারবে রাজ্যা সরকার। এখনই সরকারের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। তার ওপর বর্ধিত ডিএ-র কারণে জানুয়ারি থেকেই সরকারের ২৫০ কোটি টাকা করে খরচ বাড়তে চলেছে। এই বেহাল আর্থিক পরিস্থিতির মধ্যেও মন্ত্রীদের ভাতা বাড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্ত বিস্মিত করেছে বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে, পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে সরকার ওভারড্রাফট-এর পথে হাঁটলে আশ্চর্যের কিছু নেই।

.