বেনামী আবেদন মামলায় 'সুপ্রিম' স্থগিতাদেশ, হাইকোর্টে ব্রাত্যর নাম তুললেন মনীশ জৈন
বিচারপতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমি ইলেকশন কমিশনকে বলব তৃণমূল কংগ্রেসের লোগো প্রত্যাহার করার জন্য, দল হিসাবে তাদের মান্যতা প্রত্যাহার করতে বলব নির্বাচন কমিশনকে। সংবিধান নিয়ে যা ইচ্ছা করা যায়না বলেও দাবি করেছেন তিনি। বিচারপতি বলেন, হয় ক্যাবিনেটকে বলতে হবে যে আমরা অযোগ্যদের পাশে আমরা নেই এবং ১৯ শে মের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে হবে।
অর্নবাংশু নিয়োগী: ডিভিশন বেঞ্চের আদেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তিন সপ্তাহের জন্য এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও হাইকোর্টে বলা হয়েছে এই পরিস্থিতি শুধু রাজ্যের নয় গোটা দেশের কাছে বিপদ। তারা আরও বলেছে সরকার সংবিধান বিরোধী কাজ করলে তারা কারণ দর্শাতে বাধ্য। আদালতে বিচারপতির আরও দাবি কমিশনের উচিত এমন দলের প্রতীক তুলে নেওয়া। অন্যদিকে ব্রাত্য বসুর নাম উঠে এসেছে মনীশ জৈনের মুখে। তিনি জানিয়েছেন ব্রাত্য বসুর নির্দেশেই তৈরি হয়েছে এই অতিরিক্ত শূন্যপদ।
বিচারপতি ও শিক্ষাসচিবের প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন: আপনি কি জানেন যে কমিশনের আইন অনুযায়ী কোনও বেআইনি নিয়োগ করা যায়না?
উত্তর: হ্যাঁ
প্রশ্ন: তাহলে অতিরিক্ত শূন্যপদ কেন তৈরি করা হল ?
উত্তর: উপযুক্ত স্তর থেকে নির্দেশ এসেছিল। ব্রাত্য বসুর নির্দেশ এসেছিল। তিনি আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেছিল। আইনজীবী এবং অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে কথা হয়েছিল। আইন দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়। মুখ্যসচিবকে জানানো হয়। ক্যাবিনেটে নোট পাঠানো হয়।
প্রশ্ন: অবৈধ দের নিয়োগ নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন আইনজীবীরা ?
উত্তর: না।
প্রশ্ন: আপনার কি মনে হয়না যে অবৈধ দের বাঁচানোর জন্য এই অতিরিক্ত শূন্যপদ? অবৈধদের সরানোর কোনও সিদ্ধান্ত হয়েছিল ?
উত্তর: আমরা আইন দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি।
প্রশ্ন: আমি বিস্মিত যে কিভাবে ক্যাবিনেটে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল ? যেখানে আইনে এর কোনও সংস্থান নেই। আপনি কি মনে করেন যে অবৈধদের চাকরি বাঁচানো দরকার?
উত্তর: না।
প্রশ্ন: কোন ক্যাবিনেটে এই সিদ্ধান্ত হয় ?
উত্তর: আমরা আইন দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি।
প্রশ্ন: এটা কোনও রাজ্যের নীতি হতে পারে? আবার বলা হচ্ছে যে কারোর চাকরি যাবে না। স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবীর কাছে আবেদন দাখিল করার কোনও লিখিত নির্দেশিকা নেই। অতিরিক্ত প্রায় ২৬২ কোটি টাকা কেন প্রতি বছর ব্যয় করা হবে এই অযোগ্য দের জন্য।
উত্তর: আমরা অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গেও এই বিষয়ে কথা বলেছিল।
আরও পড়ুন: ছুরি-কাঁচিতে বেদম ভয়, SSKM-কে প্রশ্নের মুখে ফেলে পালানো রোগী উদ্ধার
প্রশ্ন: আপনার কি মনে হয়না যে ক্যাবিনেট তার এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সংবিধান বিরোধী কাজ করেছে? ক্যাবিনেটের সদস্যরা সই করলেন? কেউ তাদের সতর্ক করলেন না?
উত্তর: আমি সেখানে ছিলাম না।
বিচারপতির বক্তব্য
এরপরেই বিচারপতি বলেন, হয় ক্যাবিনেটকে বলতে হবে যে আমরা অযোগ্যদের পাশে আমরা নেই এবং ১৯ শে মের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে হবে। নাহলে এমন পদক্ষেপ করব যেটা গোটা দেশে কখনো হয়নি। আমার সন্দেহ আছে যে, হয় গণতন্ত্র সঠিক হাতে নেই আর নাহলে গণতন্ত্র বিকশিত হয়নি। আমি ক্যাবিনেটকে এই মামলায় পার্টি করে দেব। সবাইকে এসে উত্তর দিতে হবে। শোকজ করতে পারি।
বিধানসভার দলনেতা হন মুখ্যমন্ত্রী আর লোকসভায় দলনেতা প্রধানমন্ত্রী।
বিচারপতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমি ইলেকশন কমিশনকে বলব তৃণমূল কংগ্রেসের লোগো প্রত্যাহার করার জন্য, দল হিসাবে তাদের মান্যতা প্রত্যাহার করতে বলব নির্বাচন কমিশনকে। সংবিধান নিয়ে যা ইচ্ছা করা যায়না বলেও দাবি করেছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর যন্ত্রনা বুঝতে পারি, কিন্তু কিছু দালাল যারা মুখপাত্র বলে পরিচিত তারা আদালতের নামে যা ইচ্ছা বলছে। বলছে যে নিয়োগ হলেই আদালতে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসছে। আদালত কি এগরোল নাকি যে আসলেই স্থগিতাদেশ পেয়ে যাবে?