ডেথ জোনে চরম ক্লান্তি, অক্সিজেনের সঙ্কট আর অভিজ্ঞতার অভাবেই মৃত্যু পর্বতারোহীদের
কীভাবে মারা গেলেন সুভাষ পাল? গৌতম ঘোষ, পরেশ নাথেরই বা কী হল? এখনও উত্তর হাতড়ে চলেছে এই সব প্রশ্ন। সহঅভিযাত্রী থেকে পর্বত অভিযান বিশেষজ্ঞ, সবার কথায় একটা বিষয় পরিষ্কার, ক্লান্তি, অক্সিজেনের সঙ্কট আর অভিজ্ঞতার অভাবই বিপর্যয়ের বড় কারণ।
ওয়েব ডেস্ক: কীভাবে মারা গেলেন সুভাষ পাল? গৌতম ঘোষ, পরেশ নাথেরই বা কী হল? এখনও উত্তর হাতড়ে চলেছে এই সব প্রশ্ন। সহঅভিযাত্রী থেকে পর্বত অভিযান বিশেষজ্ঞ, সবার কথায় একটা বিষয় পরিষ্কার, ক্লান্তি, অক্সিজেনের সঙ্কট আর অভিজ্ঞতার অভাবই বিপর্যয়ের বড় কারণ।
মৃত্যুর ৬ দিন পর উদ্ধার বাঙালি পর্বতারোহী দেহ
যতটা বিপজ্জনক, ঠিক ততটাই আনপ্রেডিক্টেবল। এখনই ভাল, তো এখনই খারাপ। বিপদ কোথায় ওত পেতে আছে, বুঝে ওঠা দায়। ২৬ হাজার ফুটের ওপরে যেখানে অক্সিজেন কম, সেই ডেথ জোনে চরম ক্লান্তি, অক্সিজেনের সঙ্কট আর প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতার অভাবই যে বিপর্যয় ডেকে এনেছে, ইতিমধ্যেই তা স্পষ্ট।
সুভাষ পাল, গৌতম ঘোষ আর সুনীতা হাজরা শৃঙ্গ ছুঁয়েছিলেন। কিন্তু তারপর কী হল? আরেক এভারেস্ট জয়ী বাঙালি অভিযাত্রী রুদ্রপ্রসাদ হালদারের বয়ানে তা কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে। চলতি সিজনে সামিটে গিয়ে এভারেস্টে ওঠেন রুদ্রপ্রসাদ। ডায়েরির ঢঙে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে তিনি লিখেছেন, আগাম প্রস্তুতি নিয়ে অক্সিজেন সঙ্কটের মোকাবিলা করেছিলেন তাঁরা। অভিযানের জন্য সংগৃহীত অক্সিজেন সিলিন্ডার দুবছরের পুরনো হওয়ায়, তাতে প্রেশার কম ছিল। পেম্বা শেরপার পরামর্শে তাঁরা চারজন একটি করে অতিরিক্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার নেন। কিন্তু সেই বিচক্ষণতা বাকিদের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল কি?
রুদ্রপ্রসাদের লেখা থেকে যা জানা যাচ্ছে, তা শিউরে ওঠার মতো!
সুভাষ পাল ২১ মে শৃঙ্গ জয় করেন। সুনীতা হাজরা ও গৌতম ঘোষ যখন শিখরে চড়েন, তখনই অক্সিজেন প্রায় শেষ। শেরপাদের অক্সিজেনও শেষ। ২২ মে ভোরে সুনীতা ও সুভাষ কোনওমতে সামিট ক্যাম্পে ফেরেন। ওই দিন সুনীতাকে ক্যাম্প থ্রিতে নামানো সম্ভব হলেও জেনিভা স্পারে রাত ১২ টায় সুভাষ পালের মৃত্যু হয়।
কী হয়েছে গৌতম ঘোষ ও পরেশ নাথের? অভিযানে গিয়ে শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়া পরেশ নাথকে সামলাতে গিয়েই কি পিছিয়ে পড়েছিলেন পুলিসকর্মী গৌতম ঘোষ?
রুদ্রপ্রসাদ আশার আলো দেখছেন না। তিনি লিখেছেন, গৌতম ঘোষ ও পরেশ নাথের শেরপারা নিশ্চিত, ওই দুজন ব্যালকনির আশপাশেই কোথাও আছেন। পেরিয়ে গেছে অনেকটা সময়। এই ডেথ জোনে অক্সিজেন ছাড়া প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কোনও মানুষের পক্ষে এতক্ষণ বেঁচে থাকা সম্ভব নয় বলে নিশ্চিত তিনি।