সাত ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে খোলা ম্যানহল পাহারা দিলেন, সেই কান্তার সঙ্গেও ভালই হল
২০১৭-র ২৯ অগাস্ট ডা. দীপক অমরাপুরকর নামে এক ব্যক্তি খোলা ম্যানহলে পড়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন। মুম্বইয়ের পরেল এলাকায় একটি খোলা ম্যানহলে পড়ে যান তিনি। দুদিন পর বরেলি এলাকা থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। সেই ঘটনা নাড়া দিয়েছিল কান্তাকে।
নিজস্ব প্রতিবেদন- তাঁর নিজের বাড়ির ভিতর হাঁটু সমান জল জমেছিল। একটানা বৃষ্টিতে ভেঙে পড়ছিল বাড়ির চাল। কিন্তু তিনি অন্য ব্যাপার নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। বাড়ির বাইরে তাকিয়ে তিনি আরও বেশি চিন্তিত। কজনই বা এমনভাবে ব্যক্তিগত সমস্যার কথা বাদ দিয়ে পরোপকারের কথা ভাবতে পারেন! অনেকে পারেন। এই যেমন মুম্বইয়ের কান্তা মূর্তি কলন সাত ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন রাস্তার খোলা ম্যানহলের সামনে। যাতে সেই খোলা ম্যানহলে পড়ে গিয়ে কারও সর্বনাশ না হয়! অথচ, কান্তার নিজের বাড়ির অবস্থাই শোচনীয়। মুম্বইয়ের কুখ্যাত বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে তাঁর বাড়ির একাংশ। কিন্তু তিনি সেদিকে নজর না দিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন অন্যের জীবন বাঁচাতে!
কান্তার বাহাদুরির গল্প এখন আমরা সবাই জানি। মুম্বইয়ের তুলসী পাইপ রোডে খোলা ম্যানহলের সামনে তিনি সাত ঘণ্টা লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক সামলেছিলেন। ২০১৭-র ২৯ অগাস্ট ডা. দীপক অমরাপুরকর নামে এক ব্যক্তি খোলা ম্যানহলে পড়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন। মুম্বইয়ের পরেল এলাকায় একটি খোলা ম্যানহলে পড়ে যান তিনি। দুদিন পর বরেলি এলাকা থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। সেই ঘটনা নাড়া দিয়েছিল কান্তাকে। তাই তিনি খোলা ম্যানহল পাহারা দিতে সাত ঘণ্টা ক্ষিদে, তৃষ্ণা সহ্য করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বিএমসির আধিকারিকরা আসার পর তিনি সরে দাঁড়ান। কান্তার এই দেশসেবা বহু মানুষকে নাড়িয়ে দিয়েছে। অনেকেই বলেছেন, এভাবেও দেশের সেবা করা যায়!
আরও পড়ুন- সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত পোস্ট, পুলিসের গুলিতে নিহত ৩, আহত ৬০ পুলিসও, জারি ১৪৪ ধারা
#MumbaiSpirit -#MumbaiRains में सारा शहर जलमग्न है. Matunga, West #Mumbai पर कोई इस #Manhole में ना गिर जाए इसलिए यह महिला 5 घंटे तक उसके बगल में खड़े होकर लोगों को बचकर जाने को कहती रहीं.
आपदा में अपनी जान हर कोई बचाता है, कुछ ऐसे नेकदिल दूसरों की परवाह करते हैं.
Huge Respect pic.twitter.com/DoqKQULSvz— Dipanshu Kabra (@ipskabra) August 7, 2020
মুম্বইয়ের দাদরের এক বাজারে ফুল বিক্রি করে সংসার চালান কান্তা। তাঁর আট ছেলেমেয়ে। এখন দুটি সন্তান তাঁর সঙ্গে থাকে। বাকিরা বিয়ে করে আলাদা হয়েছে। কান্তার স্বামী ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত। কোনওরকমে একার হাতে সংসার টানেন কান্তা। দুই সন্তান এখন স্কুলে পড়ে। কান্তা বলছিলেন, ''সেদিন তুলসী পাইপ রোডে কোমর পর্যন্ত জল দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। আমি ম্যানহল খুলে দিই। তাতে কিছুটা জল নেমে যায়। কিন্তু খোলা ম্যানহলে পড়ে কারও বিপদ হতে পারত। তাই আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম ওখানে। সকাল ছটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত। বিএমসি থেকে লোক এলে আমি বাড়ি চলে আসি।'' ভাল কাজ করলে ভালই হবে। কান্তার সঙ্গেও তাই হচ্ছে। বিএমসি কর্মী থেকে শুরু করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনরে সদস্য, অনেকেই এসে কান্তার ভাঙা বাড়ি সারিয়ে দিয়েছেন। কখন যে কান্তা দেশের মানুষের কাছে প্রণম্য হয়েছেন তা তিনি নিজেও জানেন না। শুধু বলছেন, ''আমার যেটা করা উচিত ছিল সেটাই করেছি। আগামিদিনেও করব।''