''আমার বাবার মৃত্যু নিয়ে দয়া করে রাজনীতি করবেন না,'' দাবি প্রয়াত বিচারপতি লোয়ার পরিবারের

শুক্রবার সকালে বিচারপতি জে চেমালেশ্বর, বিচারপতি কুরিুয়ান জোশেফ, বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও বিচারপতি মদন লকুর এই বৈঠককে নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় দেশজুড়ে। দেশের প্রাক্তন ও বর্তমান আইজীবীদের অনেকেই তাদের প্রকাশ্যের মুখ খোলা নিয়ে নিজেদের মত প্রকাশ করেন

Updated By: Jan 14, 2018, 10:03 PM IST
''আমার বাবার মৃত্যু নিয়ে দয়া করে রাজনীতি করবেন না,'' দাবি প্রয়াত বিচারপতি লোয়ার পরিবারের
অনুজ লোয়া

নিজস্ব প্রতিবেদন : সুপ্রিম কোর্টের চার বিচারপতির বিদ্রোহের ঘটনায় এবার চাঞ্চল্যকর মোড়। রাজনৈতিক স্বার্থে তাদের পরিবারকে জড়িয়ে স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা না করার অনুরোধ জানালেন প্রয়াত সিবিআই বিচারপতি বিএইচ লোয়ার ছেলে অনুজ লোয়া। বিচারপতি লোয়ার মৃত্যু নিয়ে নতুন করে আর কোনও বিতর্ক যে তাঁর পরিবার চায় না তাও জানিয়ে দিলেন অনুজ।

দেশের বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শুক্রবার প্রকাশ্যে মুখ খোলেন সুপ্রিম কোর্টের চার প্রবীণতম বিচারপতি। রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁরা নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কয়েক মাস আগে এই নিয়ে দেশের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর কাছে একটি স্মারকলিপিও জমা দেন। যদিও, তাঁদের দাবি মানতে চাননি প্রধান বিচারপতি।

শুক্রবার সকালে বিচারপতি জে চেমালেশ্বর, বিচারপতি কুরিুয়ান জোশেফ, বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও বিচারপতি মদন লকুরের এই বৈঠককে নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় দেশজুড়ে। দেশের প্রাক্তন ও বর্তমান আইজীবীদের অনেকেই তাদের প্রকাশ্যের মুখ খোলা নিয়ে নিজেদের মত প্রকাশ করেন।

এদিকে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুক্রবার সন্ধেতেই আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদকে আলোচনার জন্য ডেকে পাঠান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দীর্ঘক্ষণ তাঁদের মধ্যে বৈঠক হয়। অন্যদিকে, গোটা বিষয়টি নিয়ে শুক্রবারই অ্যাটর্নি জেনারলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র। এরপরই শনিবার সকালে আরও এক দফায় আলোচনার জন্য প্রধান বিচারপতির বাড়ি যান প্রধানমন্ত্রী দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি। ওই দিনই দুপুরে বৈঠকে বসেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। পরে তাদের তরফে জানানো হয়, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে প্রবীণ বিচারপতিদের প্রকাশ্যে এভাবে মুখ খোলা উচিত হয়নি।

এই বিতর্ক ও পাল্টা বিতর্কের মাঝে বারবার উঠে আসে ২০১৪-র সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো এনকাউন্টার মামলার কথা। এই মামলায় নাম জড়ায় বিজেপির বর্তমান সভাপতি অমিত শাহ'র। মামলাটি ওঠে সিবিআই বিচারপতি বিএইচ লোয়ার এজলাসে। কিন্তু, ১ ডিসেম্বর এক অনুষ্ঠানে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বিচারপতি লোয়ার। হৃদরোগে মৃত্যু হলেও, তা নিয়ে বিতর্ক ছড়ায়। অনেকের মতে এই মৃত্যু স্বাভাবিক দেখানো হলেও, আদতে তা স্বাভাবিক ছিল না। সেই সময় একই মত পোষণ করে বিচারপতি লোয়ার পরিবারও। শুক্রবার বিক্ষুব্ধ চার বিচারপতিও বিচারপতি লোয়ার মৃত্যু রহস্য নিয়ে ফের একবার প্রশ্ন তোলেন।

রবিবার সন্ধেয় হঠাত্ই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এই বিষয়ে উল্টো সুর গাইতে শুরু করে বিচারপতি লোয়ার পরিবার। তাঁর ছেলে অনুজ লোয়ার দাবি, ''আগে বাবার মৃত্যু নিয়ে আমাদের বিস্তর সন্দেহ ছিল। কিন্তু এখন আর তা নেই। তাই দয়া করে আমার বাবার মৃত্যু নিয়ে জলঘোলা করবেন না।''

.