নির্বাচন ধর্মনিরপেক্ষ প্রক্রিয়া, ধর্ম-বর্ণের নামে ভোট চাওয়া যাবে না : সুপ্রিম নির্দেশ

"জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া..." কবি নজরুলের এই অমোঘ উচ্চারণই যেন আজ প্রতিধ্বনীত হল সুপ্রিমকোর্টের সাত সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে। আদালত আক্ষরিক অর্থে ঐতিহাসিক এক রায়ে আজ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, জাত-ধর্ম-বর্ণের আবেগকে 'কাজে লাগিয়ে' কোনও রাজনীতিক ভারত ভূখন্ডে ভোট ভিক্ষা করতে পারবেন না। আর কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যদি তা করে থাকেন, তাহলে সেই কাজকে নির্বাচনী আইনের আওতায় 'দুর্নীতি' হিসাবেই গণ্য করা হবে।

নির্ণয় ভট্টাচার্য্য: "জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া..." কবি নজরুলের এই অমোঘ উচ্চারণই যেন আজ প্রতিধ্বনীত হল সুপ্রিমকোর্টের সাত সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে। আদালত আক্ষরিক অর্থে ঐতিহাসিক এক রায়ে আজ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিল, জাত-ধর্ম-বর্ণের আবেগকে 'কাজে লাগিয়ে' কোনও রাজনীতিক ভারতীয় ভূখন্ডে ভোট ভিক্ষা করতে পারবেন না। আর কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যদি তা করে থাকেন, তাহলে সেই কাজকে নির্বাচনী আইনের আওতায় 'দুর্নীতি' হিসাবেই গণ্য করা হবে।

শীর্ষ আদালতের স্বচ্ছ উক্তি, ভোট বা নির্বাচন একটি আপাদমস্তক ধর্মনিরপেক্ষ প্রক্রিয়া, সেখানে ধর্মীয় (বর্ণ বা জাতি) আবেগের কোনও স্থান নেই। সুপ্রিমকোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ আরও বলেছে যে, মানুষ ও ঈশ্বরের সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে 'ব্যাক্তিস্বাতন্ত্রে'র উপর প্রতিষ্ঠীত, রাষ্ট্র সেখানে কোনও ভাবেই নাক গলাতে পারে না।

প্রসঙ্গত, উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে শীর্ষ আদালতের আজকের এই রায়ে নড়েচড়ে বসেছে তামাম রাজনীতিক মহল। কারণ, উত্তর প্রদেশের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং 'স্পর্শকাতর' রাজ্যের নির্বাচনে প্রয়শই জাত-পাত, ধর্ম-বর্ণের জিগির তুলে ভোটে ফায়দা তোলার চেষ্টা নতুন নয়। ফলে আজকের সুপ্রিম নির্দেশের প্রেক্ষাপটে এই ধরনের 'সংস্কৃতি'তে অভ্যস্ত রাজনৈতিক দলগুলি বেশ কিছুটা বেকায়দায়। তবে, শুধু উত্তর প্রদেশই নয়, সারা ভারতেই বিভিন্ন এলাকায় ভোট টানতে 'ভাবাবেগ'-এ ভরসা রাখেন দলমত নির্বিশেষে অনেক 'ঘোষীত ধর্মনিরপেক্ষ' দলও। ধর্মীয় ভাবাবেগের ঘোলা জলে মাছ ধরতে 'পটু' এইসব মত্স্যজীবীদের কার্যত আজ হুঁশিয়ার করল দেশের শীর্ষ আদালত।