On This Day in 2002: গর্বের ২০ বছর, ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জয়ের সদস্যরা কে কী করছেন? ছবিতে দেখুন
দেখতে দেখতে কেটে গেল ২০ বছর। ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জয়ী এগারো জন যোদ্ধা এখন কে কী করছেন সেই দিকে চোখ রাখা যাক......
সব্যসাচী বাগচী
দেখতে দেখতে কেটে গেল ইতিহাস গড়ার ২০ বছর। ২০০২ সালের ১৩ জুলাই, ক্রিকেটের মক্কা লর্ডসে (Lords) ব্রিটিশদের অহংকারকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) টিম ইন্ডিয়া (Team India)। জাহির খান (Zaheer Khan) উইনিং রান নেওয়ার পরেই ব্যালকনিতে বসেই জামা খুলে উড়িয়েছিলেন তৎকালীন অধিনায়ক। যা আজীবন ভারতীয় ক্রিকেটের আগ্রাসী স্টাইল স্টেটমেন্ট হিসেবে রয়ে গিয়েছে।
একদিনের ক্রিকেটে বিবর্তন অনেক ঘটে গিয়েছিল। তবে এটাও ঠিক যে সেই সময় ৩২৬ রান তাড়া করে জেতা ছিল অলীক কল্পনা। কিন্তু নাসের হুসেনের (Nasser Hussain) দলের বিরুদ্ধে সেই অভাবনীয় কাজটাই করেছিল 'মেন ইন ব্লু' ব্রিগেড। মার্কাস ট্রেসকথিকের (Marcus Trescothick) ১০৯ ও ইংল্যান্ডের অধিনায়কের ১১৫ রানের সৌজন্যে ৩২৫ রান তুলেছিল সাহেবরা। যদিও খেলা সেখানেই শেষ হয়ে যায়নি। প্রথম উইকেটে ১০৬ রান যোগ করেন সৌরভ ও বীরেন্দ্র শেহওয়াগ (Virender Sehwag)। এরপর মিডল অর্ডারে ভাঙন ধরলেও, চাপের মুখে চুপসে যাননি দুই তরুণ যুবরাজ সিং (Yuvraj Singh) ও মহম্মদ কাইফ (Mohammad Kaif)। তাঁদের দাঁত দাঁতে চাপা লড়াই এনে দিয়েছিল দুই উইকেটে ঐতিহাসিক জয়।
কিন্তু সেই ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জয়ী এগারো জন যোদ্ধা এখন কে কী করছেন সেই দিকে চোখ রাখা যাক......
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

সেই মেগা ফাইনালে নামার আগে মহারাজের নেতৃত্বে ১০টি ফাইনাল হেরেছিল টিম ইন্ডিয়া। ৩২৬ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই পালটা মারতে শুরু করেছিলেন প্রাক্তন অধিনায়ক। করেছিলেন ৪৩ বলে ৬০ রান। শুধু ব্যাট হাতে মারমুখী ইনিংস নয়, জাহির খান উইনিং রান নেওয়ার পরেই ব্যালকনিতে বসেই জামা খুলে উড়িয়েছিলেন তৎকালীন অধিনায়ক। যা আজীবন ভারতীয় ক্রিকেটের আগ্রাসী স্টাইল স্টেটমেন্ট হিসেবে রয়ে গিয়েছে। ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর এই মুহূর্তে বিসিসিআই-এর সভাপতি 'প্রিন্স অফ ক্যালকাটা'।
বীরেন্দ্র শেহওয়াগ

লক্ষ্য বড় ছিল। তাই প্রথম ১৫ ওভারে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছিলেন 'নজফগড়ের নবাব'। সৌরভের সঙ্গে জুটি বেঁধে প্রথম উইকেটে যোগ করেছিলেন বীরু। ৪৯ বলে ৪৫ রানে আউট হলেও, রনি ইরানিকে লাগাতার চারটি চার মেরেছিলেন। সেটা এখনও ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে গেঁথে আছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার পর এই মুহূর্তে ক্রিকেট পণ্ডিত হিসেবে কাজ করছেন বীরু। মাঝেমধ্যে তাঁকে মাইক হাতে ধারাভাষ্য দিতেও দেখা যায়। এবং মজার টুইট করতে তাঁর জুরি মেলা ভার।
TRENDING NOW
দীনেশ মোঙ্গিয়া

সচিন তেন্ডুলকর

১২৬ রানে ৩ উইকেট চলে যাওয়ার পর ক্রিজে এসেছিলেন 'মাস্টার ব্লাস্টার'। তবে মেগা ফাইনালে বড় রান গড়তে ব্যর্থ হন। ১৯ বলে ১৪ রান করে অ্যাশলে জাইলসের বলে আউট হন সচিন। ২০১৩ সালে ক্রিকেটকে চিরবিদায় জানানোর পর এই মুহূর্তে একাধিক সমাজসেবা মূলক কাজের সঙ্গে জড়িত 'আধুনিক ক্রিকেটের ডন'। তবে তাই বলে তিনি কিন্তু ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে পারেন না। নিজের সোশ্যাল মিডিয়াতে নিয়মিত আপডেট দেন। সেখানেই বর্তমান ক্রিকেটারদের নিয়ে নিজের ভাবনাচিন্তা তুলে ধরেন তিনি।
রাহুল দ্রাবিড়

যুবরাজ সিং

তরুণ যুবি ক্রিজে আসতেই খেলা ঘুরতে শুরু করল। পালটা আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করে ৬৩ বলে ৬৯ রান করেছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। মেরেছিলেন ৯টি চার ও ১টি ছয়। এহেন যুবরাজ পরবর্তী সময় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ছাড়াও ২০১১ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন। ২০১৯ সালে ক্রিকেটকে পুরোপুরি বিদায় জানিয়েছিলেন যুবি। এরপর ক্যানসার রোগীদের সাহায্য করার জন্য গড়েছেন 'YouWeCan' নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এরসঙ্গে পুরো দেশজুড়ে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি গড়ছেন তিনি।
মহম্মদ কাইফ

নিজের কেরিয়ারের সেরা ইনিংস খেলেছিলেন মহম্মদ কাইফ। ষষ্ঠ উইকেটে যুবির সঙ্গে যোগ করেছিলেন মহামূল্যবান ১২১ রান। আর সেই জুটির জন্যই খেলা ঘুরে যায়। ৭৫ বলে ৮৭ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন কাইফ। মেরেছিলেন ৬টি চার ও ২টি ছয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে গেলেও, ক্রিকেটকে একেবারে ছাড়তে পারেননি তিনি। গত কয়েক বছর ধারাভাষ্যকার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এই প্রাক্তন মিডল অর্ডার ব্যাটার।
হরভজন সিং

অনিল কুম্বলে

জাহির খান

সেই ঐতিহাসিক জয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন 'জ্যাক'। ইংরেজদের ব্যাটাররা বড় রান করলেও, জাহির ৬২ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন। এরপর তাঁর ব্যাট থেকেই এসেছিল 'উইনিং রান'। অ্যান্ডড়ু ফ্লিনটফের ডেলিভারিকে কভারের দিকে ঠেলে দিয়ে টিম ইন্ডিয়াকে জয় এনে দিয়েছিলেন জাহির। ২০১৪ সালে শেষ টেস্ট খেলেছিলেন জাহির। এরপর থেকে তিনি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের 'বোলিং কোচ' হিসেবে কাজ করছেন। ক্রিকেট পণ্ডিতের পাশাপাশি মুম্বইতে রেস্টুরেন্ট ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন প্রাক্তন বাঁহাতি জোরে বোলার।
আশিস নেহরা
