kalipuja 2023: জঙ্গলের মাঠে নির্জন সন্ধ্যায় মা সারদার সামনে এসে দাঁড়াল ভয়ংকর ডাকাত, তখন...

kalipuja in Hooghly: আজ থেকে প্রায় ৫০০- ৫৫০ বছর আগের সিঙ্গুরের ডাকাত কালীমন্দির ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস, নানা মিথ, নানা অলৌকিক। সেসব আজও গায়ে কাঁটা দেয়।

| Nov 09, 2023, 14:01 PM IST

নির্মল পাত্র: প্রায় ৫০০ থেকে ৫৫০ বছর আগের সিঙ্গুরের ডাকাত কালীমন্দির ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস। বৈদ্যবাটি তারকেশ্বর রোডের পাশে পুরুষোত্তমপুর এলাকায় এই ডাকাতকালী মন্দির অবস্থিত। কথিত আছে, অসুস্থ রামকৃষ্ণকে দেখতে সারদাদেবী কামারপুকুর থেকে দক্ষিণেশ্বরে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে রঘু ডাকাত ও গগন ডাকাত সারদার পথ আটকে দাঁড়ায়। 

1/7

মায়ের পিছনে মা

মা কিন্তু ভয় পাননি। বরং ডাকাতদের বাবা বলে ডেকে তাদের কাছেই সাহায্য চান। কিন্তু ডাকাতেরা প্রথমে তাতে বিচলিত হয়নি। এরপর ডাকাতির চেষ্টা করতেই রক্তচক্ষু মা কালী মা সারদার পিছন থেকে দেখা দেন ডাকাতদের। তৎক্ষণাৎ নিজদের ভুল বুঝতে পেরে মা সারদার কাছে ক্ষমা চায় ডাকাতেরা। ততক্ষণে সন্ধ্যা নামায় সেই রাতেই ডাকাতদের আস্তানাতেই থাকতে হয় মা সারদাকে। ডাকাতরাই মা সারদার রাতের খাওয়ার ব্যবস্থা করে। মাকে খেতে দেওয়া হয় চালকড়াই ভাজা। পরের দিন সকালে ডাকাতরাই মা সারদাকে দক্ষিণেশ্বরে দিয়ে আসে এবং তারপর থেকে ডাকাতি ছেড়ে দেয়। 

2/7

চার প্রহরে চারবার পুজো

তারপর থেকে কালী পুজোর দিনে মাকে প্রথম নৈবেদ্য দেওয়া চালকড়াই ভাজা। এছাড়াও থাকে লুচিভোগ, ফল। কালীপুজোর দিন চার প্রহরে চারবার পুজো হয়, ছাগবলিও হয়। 

3/7

নরবলিও

সরস্বতী নদীর পাশে জনমানবশূন্য এক জঙ্গলে এক কুঁড়েঘর তৈরি করেছিল ডাকাতরা। এখানেই মায়ের পুজো হত। ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে ঘটপুজো করত তারা। দিত নরবলিও। 

4/7

মোড়লদের পুজো

অনেক পরে বর্ধমানের রাজার দান করা জমিতে সিঙ্গুর চালকেপাটির গ্রামের মোড়লরা বর্তমান মন্দিরটি তৈরি করে সেখানে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। কালীপুজোর দিন মোড়লদের পুজো আগে হয়, পরে অন্য ভক্তদের পুজো নেওয়া হয়। 

5/7

দ্বিতীয় কালী নেই

পুরুষোত্তমপুর গ্রামে এই ডাকাত কালীমন্দির থাকার কারণে সন্নিহিত মল্লিকপুর, জামিনবেড়িয়া গ্রামে কোনও বারোয়ারি কালীপুজো হয় না। এমনকি এ অঞ্চলের কোনও বাড়ির দেওয়ালেও টাঙানো থাকে না কালীর ছবি। মা এতই জাগ্রত যে, এই কালী প্রতিমার পুজো ছাড়া অন্য কোনও কালী প্রতিমার পুজো করতে সাহসই পান না এলাকার মানুষ। 

6/7

জলবদল

বছরে একবার, কালীপুজোর দিন শুদ্রদের (স্থানীয় বাগদিদের) আনা গঙ্গা জলে মন্দিরের দরজা বন্ধ করে ঘটের জল পাল্টানো হয়। সেই সময়ে কোনও মহিলা মন্দিরের ভিতর প্রবেশ করতে পারেন না। 

7/7

ডাকাতের আশ্রয়ে মা

ডাকাতকালী মন্দির উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক মদনমোহন কোলে বলেন, অহল্যা বাই রোড হয়ে হরিপাল হয়ে ১২ নম্বর রাস্তা ধরে দক্ষিণেশ্বরে অসুস্থ রামকৃষ্ণদেবকে দেখতে যাচ্ছিলেন মা সারদা। যাওয়ার পথে এই ডাকাতকালী মন্দিরে এক রাত্রি যাপন করেছিলেন মা। ডাকাতের কাছে খেতেও চেয়েছিলেন তিনি। তখন ডাকাতদলের গগন সরদার ও রঘু ডাকাত চালকলাই ভাজা দিয়েছিলেন তাঁকে। তিনি আরও জানান, একসময় এই মন্দির চত্বর আটচালা ছিল। সেখানেই এক রাত্রি যাপন করেছিলেন মা সারদা।